ঢাকা ০৫:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাতে রাসূল (সাঃ) বা রাসূলে পাক (সাঃ) এর প্রশংসা

  • আপডেট সময় : ১০:৪৮:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ২৬৬২ বার পড়া হয়েছে
Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নাতে রাসূল (সাঃ) বা রাসূলে পাক (সাঃ) এর প্রশংসা

মহান খোদাতায়ালা ফরমান,
” হে রাসূল (সাঃ) আপনাকে সৃষ্টি না করলে কিছুই সৃষ্টি করতাম না”।
সৃষ্টির আদিতে মহান খোদাতায়ালা রাসূলে পাক (সাঃ) এঁর পবিত্র নূর সৃষ্টি করেন। এই পবিত্র নূর থেকে আল্লাহপাক আরশ, কুরসী, দুনিয়া ইত্যাদি সকল কিছু সৃষ্টি করেন।
তাই শাহসূফী হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব ফরমান, ” রাসূল পাক (সাঃ) সৃষ্টির ফাউন্ডেশন।”

যাকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহপাক কিছুই সৃষ্টি করতে না সেই নবী (সাঃ) কে ভালোবাসা ঈমানের পূর্বশর্ত। শাহসূফী হযরত মাওলানা খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) এই মর্মে ফরমান, “রাসূল (দঃ) এঁর মহব্বতই প্রকৃত ঈমান। রাসূল পাক (সাঃ) মহব্বত যার অন্তরে যতটুকু তার ঈমানও ততটুকু।”

সেই নবীর প্রতি নাতে রাসূল বা প্রংশসা করা উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য ফরজ। যে নবী (সাঃ) কে আল্লাহপাক কখনো নাম ধরে ডাকেন নি বরং হে নবী বা হে রাসূল বলে সম্মোধন করেছেন। যেই নবীর জন্য কেবলা পরিবর্তন হলো। সেই নবীর প্রেমে যুগে যুগে কত নাত কত কবিতা কত ছন্দ লিখা হলো।
দুনিয়াতে কারো প্রশংসা করে এত বাক্য রচনা হয় নি যেটা আমার রাসূল পাকের ক্ষেত্রে হয়েছে।
নবীজির প্রিয় সাহাবী হযরত হাসসান ইবনে সাবেত (রাঃ) নবীজির শানে নাত পেশ করতেন। তাঁর জন্য মসজিদে নববিতে আলাদা মিম্বার ছিলো।

বিখ্যাত মুহাদ্দিসে কেরামগন বলেন, ” যে ব্যক্তি নবীর শানে পূর্ন মহব্বত ও আদব সহকারে নাতে রাসূল পেশ করে তাকে মহান আল্লাহ ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করেন।”

রাসূল (সাঃ) যেদিন হিজরত করে মদিনায় আসলেন সেই নারী, পুরুষ, শিশুরা নাত শরীফ পাঠ করতে করতে দয়াল নবী (সাঃ) কে স্বাগতম জানান।

মদিনায় আসার পর নবী (সাঃ) উট যখন হযরত আইয়ুব আনসারীর (রাঃ) দরজার সামনে বসে পড়লো তখন বণী নাজ্জার গোত্রের বালিকারা নিচের কবিতাটা গেয়ে রাসূল (সাঃ) কে শুভেচ্ছা জানায়ঃ
“আমরা বণী নাজ্জারের বালিকা,
কি আনন্দ মোহাম্মদ হবেন আমাদের প্রতেবশী”
আসুন এবার দেখি পবিত্র কোরআন মাজিদে রাসূল পাকের (সাঃ) প্রশংসাঃ

“আমি আপনার জন্য আপনার খ্যাতিকে সুউচ্চ করেছি।”
– সূরা আল-ইনশিরাহ, ৪

” নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগনসহ নবীর প্রতি দরুদ ও সালাম, (রহমত) বর্ষন করছেন, অতএব হে ঈমানদারগন, তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ কর।”
-সূরাঃ আল-আহযাব, ৫৬

” আমি আপনাকে সমস্ত সৃষ্টি জগতের প্রতি রহমত রূপে প্রেরন করেছি।”
-সূরাঃ আম্বিয়া, ১০৭

” আমি আপনাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরন করেছি, তবে অনেকেই তা জানে না।”
-সূরাঃ সাবা-২৮

” আর আপনি মাটির মুষ্টি/ধুলা নিক্ষেপ করেন নি, বরং স্বয়ং আল্লাহ তা নিক্ষেপ করেছিলেন যেন ঈমানদারদের প্রতি ইহসান করতে পারেন যথার্থভাবে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ শ্রবনকারী, সর্বজ্ঞাত।”
-সূরাঃ আল আনফাল-১৭

” হে নবী! আমি আপনাকে সাক্ষী, সুসংবাদদাতা ও সর্তককারীরূপে প্রেরন করেছি। এবং আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর দিকে আহবায়করূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।”
-সূরাঃ আল-আহযাব-৪৫

” নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ।”
-সূরাঃ আল আহযাব- ৬

“যারা আল্লাহতায়ালা ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরন করে, তাদের জন্য রাসূলুল্লাহ এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আর্দশ।”
-সূরাঃ আল আহযাব- ২১

” আমি আপনাকে বিশ্ব মানবতার জন্য রাসূল হিসাবে প্রেরন করেছি আর এ বিষয়ে সাক্ষী হিসাবে আমি আল্লাহই যথেষ্ট যে ব্যক্তি রাসূলকে অনুসরন করল সে তো আল্লাহতায়ালারই অনুসরন করল।”
-সূরাঃ আন নিসা- ৭৯-৮০

” হে নবী! আপনার জন্য এবং যেসব মুসলমান আপনাকে অনুসরন করে তাদের সবার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।”
-সূরাঃ আনফাল-৬৪

” হে মুমিনগন, তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল তাঁরর সাথে সেরূপ উঁচু স্বরে কথা বলো না। এতে তোমাদের কর্ম নিঃস্বফল হয়ে যাবে এবং তোমরা তা বুঝতেও পারবে না।”
সূরাঃ আল হুজরাত -২

” রাসূল তোমাদেরকে যা দেন তা গ্রহন কর ও যা নিষেধ করেন তা হতে বিরত থাক”।
-সূরাঃ আল হাশর- ৭

মহান খোদাতায়ালা আমাদের উপর নামাজ, রোযা, হজ্জ্ব, যাকাত ফরজ করেছেন কিন্তু কোন কাজ আল্লাহ তাঁর বান্দাকে করতে বলার আগে নিজে করে দেখান নি।
যেমন পুরো কোরআন মাজিদের কোথাও এরকম নেই যে, আল্লাহ বলেছেন আমি নামাজ পড়ি তোমরাও পড় বা আমি যাকাত দেই বা আমি রোযা রাখি তোমরাও রাখ।
কিন্তু প্রিয় নবী (সাঃ) প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করা এমন একটি ব্যাপার যেখানে আল্লাহ সর্বপ্রথম নিজে করেছেন তারপর ফেরশতাগনকে সাথে নিয়ে করেছেন অতঃপর ঈমানদার বান্দাগনকে হুকুম দিয়েছেন।

আল্লাহপাক পবিত্র কোরআন মাজিদে ফরমান,
” নিশ্চয়ই আল্লাহপাক ও তাঁর ফেরেশতাগনসহ রাসূলের প্রতি দরূদ সালাম বর্ষন করেছেন। অতএব হে ঈমানদারগন, তোমরাও নবীর প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ করো।”
সূরাঃ আল-আহযাব -৫৬

“মাওলা ইয়া সাল্লি ওয়া সাল্লিম দায়ীমান আবাদান” এর রচিতা মিশরের বিখ্যাত কবি ইমাম শেখ আবু আবদুল্লাহ। তিঁনি আশেকে রাসূল ছিলেন। একবার তিঁনি হঠাৎ পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত হলেন। হেকিম কবিরাজ দিয়ে অনেক চিকিৎসা করালেন কিন্তু উপকার হলো না।
একদিন এক অদৃশ্য ইঙ্গিতে তিঁনি নবীজির শানে বিখ্যাত নাতে রাসূল টি রচনা করেন। নাতে রাসূল বুকে নিয়ে রোগ মুক্তির আশায় নবী (সাঃ) মহব্বতে অনেক কান্নাকাটি করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লেন। ঘুমন্ত অবস্থায় তিঁনি দেখলেন দয়াল নবী (সাঃ)কে তার রচিত নাতে রাসূল পড়ে শুনাচ্ছেন।
পড়া শেষ হলে নবিজি খুশি হয়ে তার পক্ষাঘাত আক্রান্ত অংশ মুছে দিলেন এবং তিঁনার পবিত্র দেহ পাকে জড়ানো কারুকার্যখচিত চাদরটি খুলে কবির শরীরের ঢেকে দিলেন।
ঘুম ভেঙ্গে কবি দেখলেন মহামূল্যবান চাদর খানা তার গায়ে এবং তিনি সম্পর্ন সুস্থ।

মহাকবি শেখ সাদী (রহঃ) যখন “বালাগালা উলা বি কামালিহি” লিখছিলেন। তিন লাইন লিখার পর চতুর্থ পক্তিটি আর লিখতে পারলেন না। খুব চিন্তাভাবনা করেও কবিতা খানা শেষ করতে পারলেন না। পাগলপারা হয়ে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে সারা দিন কাঁদতেন। একদিন স্বপ্নে দেখেন, রাসূল (সাঃ) প্রশ্ন করলেন, সাদী তোমার কি হয়েছে? এত পেরেশান কেন? হযরত সাদী (রহঃ) সব খুলে বললেন।
প্রেমের নবী (সাঃ) বললেন, “সাদী, তুমি লিখঃ ” সাল্লু আলাইহি ওয়াআলাইহি”

শাহসূফী হযরত মাওলানা খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছিলেন আশেকে রাসূল। তিঁনি গাইতেন,
“নবী প্রেম সুদা পান কর সবে
মন বেদনা যাতনা জুরাইবে
খোদা প্রাপ্তি তোর তরে লাভ হবে
নবী পদবিনে ভাবো সবই মিছে”

সেই প্রেমের শিক্ষা দেয়া হয় বর্তমানে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে। প্রেমের শিক্ষা গ্রহনে আসুন বিশ্ব জাকের মঞ্জিল দরবার শরীফে।
আসুন বেশি বেশি দরুদ ও সালাম পাঠ করি। হেডফোন দিয়ে গান না শুনে নাতে মোস্তাফা (সাঃ) শুনি।

লিখেছেনঃ ইবনে সুলতান

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নাতে রাসূল (সাঃ) বা রাসূলে পাক (সাঃ) এর প্রশংসা

আপডেট সময় : ১০:৪৮:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪

নাতে রাসূল (সাঃ) বা রাসূলে পাক (সাঃ) এর প্রশংসা

মহান খোদাতায়ালা ফরমান,
” হে রাসূল (সাঃ) আপনাকে সৃষ্টি না করলে কিছুই সৃষ্টি করতাম না”।
সৃষ্টির আদিতে মহান খোদাতায়ালা রাসূলে পাক (সাঃ) এঁর পবিত্র নূর সৃষ্টি করেন। এই পবিত্র নূর থেকে আল্লাহপাক আরশ, কুরসী, দুনিয়া ইত্যাদি সকল কিছু সৃষ্টি করেন।
তাই শাহসূফী হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব ফরমান, ” রাসূল পাক (সাঃ) সৃষ্টির ফাউন্ডেশন।”

যাকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহপাক কিছুই সৃষ্টি করতে না সেই নবী (সাঃ) কে ভালোবাসা ঈমানের পূর্বশর্ত। শাহসূফী হযরত মাওলানা খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) এই মর্মে ফরমান, “রাসূল (দঃ) এঁর মহব্বতই প্রকৃত ঈমান। রাসূল পাক (সাঃ) মহব্বত যার অন্তরে যতটুকু তার ঈমানও ততটুকু।”

সেই নবীর প্রতি নাতে রাসূল বা প্রংশসা করা উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য ফরজ। যে নবী (সাঃ) কে আল্লাহপাক কখনো নাম ধরে ডাকেন নি বরং হে নবী বা হে রাসূল বলে সম্মোধন করেছেন। যেই নবীর জন্য কেবলা পরিবর্তন হলো। সেই নবীর প্রেমে যুগে যুগে কত নাত কত কবিতা কত ছন্দ লিখা হলো।
দুনিয়াতে কারো প্রশংসা করে এত বাক্য রচনা হয় নি যেটা আমার রাসূল পাকের ক্ষেত্রে হয়েছে।
নবীজির প্রিয় সাহাবী হযরত হাসসান ইবনে সাবেত (রাঃ) নবীজির শানে নাত পেশ করতেন। তাঁর জন্য মসজিদে নববিতে আলাদা মিম্বার ছিলো।

বিখ্যাত মুহাদ্দিসে কেরামগন বলেন, ” যে ব্যক্তি নবীর শানে পূর্ন মহব্বত ও আদব সহকারে নাতে রাসূল পেশ করে তাকে মহান আল্লাহ ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করেন।”

রাসূল (সাঃ) যেদিন হিজরত করে মদিনায় আসলেন সেই নারী, পুরুষ, শিশুরা নাত শরীফ পাঠ করতে করতে দয়াল নবী (সাঃ) কে স্বাগতম জানান।

মদিনায় আসার পর নবী (সাঃ) উট যখন হযরত আইয়ুব আনসারীর (রাঃ) দরজার সামনে বসে পড়লো তখন বণী নাজ্জার গোত্রের বালিকারা নিচের কবিতাটা গেয়ে রাসূল (সাঃ) কে শুভেচ্ছা জানায়ঃ
“আমরা বণী নাজ্জারের বালিকা,
কি আনন্দ মোহাম্মদ হবেন আমাদের প্রতেবশী”
আসুন এবার দেখি পবিত্র কোরআন মাজিদে রাসূল পাকের (সাঃ) প্রশংসাঃ

“আমি আপনার জন্য আপনার খ্যাতিকে সুউচ্চ করেছি।”
– সূরা আল-ইনশিরাহ, ৪

” নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগনসহ নবীর প্রতি দরুদ ও সালাম, (রহমত) বর্ষন করছেন, অতএব হে ঈমানদারগন, তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ কর।”
-সূরাঃ আল-আহযাব, ৫৬

” আমি আপনাকে সমস্ত সৃষ্টি জগতের প্রতি রহমত রূপে প্রেরন করেছি।”
-সূরাঃ আম্বিয়া, ১০৭

” আমি আপনাকে সমগ্র মানব জাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরন করেছি, তবে অনেকেই তা জানে না।”
-সূরাঃ সাবা-২৮

” আর আপনি মাটির মুষ্টি/ধুলা নিক্ষেপ করেন নি, বরং স্বয়ং আল্লাহ তা নিক্ষেপ করেছিলেন যেন ঈমানদারদের প্রতি ইহসান করতে পারেন যথার্থভাবে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ শ্রবনকারী, সর্বজ্ঞাত।”
-সূরাঃ আল আনফাল-১৭

” হে নবী! আমি আপনাকে সাক্ষী, সুসংবাদদাতা ও সর্তককারীরূপে প্রেরন করেছি। এবং আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর দিকে আহবায়করূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।”
-সূরাঃ আল-আহযাব-৪৫

” নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ।”
-সূরাঃ আল আহযাব- ৬

“যারা আল্লাহতায়ালা ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরন করে, তাদের জন্য রাসূলুল্লাহ এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আর্দশ।”
-সূরাঃ আল আহযাব- ২১

” আমি আপনাকে বিশ্ব মানবতার জন্য রাসূল হিসাবে প্রেরন করেছি আর এ বিষয়ে সাক্ষী হিসাবে আমি আল্লাহই যথেষ্ট যে ব্যক্তি রাসূলকে অনুসরন করল সে তো আল্লাহতায়ালারই অনুসরন করল।”
-সূরাঃ আন নিসা- ৭৯-৮০

” হে নবী! আপনার জন্য এবং যেসব মুসলমান আপনাকে অনুসরন করে তাদের সবার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।”
-সূরাঃ আনফাল-৬৪

” হে মুমিনগন, তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল তাঁরর সাথে সেরূপ উঁচু স্বরে কথা বলো না। এতে তোমাদের কর্ম নিঃস্বফল হয়ে যাবে এবং তোমরা তা বুঝতেও পারবে না।”
সূরাঃ আল হুজরাত -২

” রাসূল তোমাদেরকে যা দেন তা গ্রহন কর ও যা নিষেধ করেন তা হতে বিরত থাক”।
-সূরাঃ আল হাশর- ৭

মহান খোদাতায়ালা আমাদের উপর নামাজ, রোযা, হজ্জ্ব, যাকাত ফরজ করেছেন কিন্তু কোন কাজ আল্লাহ তাঁর বান্দাকে করতে বলার আগে নিজে করে দেখান নি।
যেমন পুরো কোরআন মাজিদের কোথাও এরকম নেই যে, আল্লাহ বলেছেন আমি নামাজ পড়ি তোমরাও পড় বা আমি যাকাত দেই বা আমি রোযা রাখি তোমরাও রাখ।
কিন্তু প্রিয় নবী (সাঃ) প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করা এমন একটি ব্যাপার যেখানে আল্লাহ সর্বপ্রথম নিজে করেছেন তারপর ফেরশতাগনকে সাথে নিয়ে করেছেন অতঃপর ঈমানদার বান্দাগনকে হুকুম দিয়েছেন।

আল্লাহপাক পবিত্র কোরআন মাজিদে ফরমান,
” নিশ্চয়ই আল্লাহপাক ও তাঁর ফেরেশতাগনসহ রাসূলের প্রতি দরূদ সালাম বর্ষন করেছেন। অতএব হে ঈমানদারগন, তোমরাও নবীর প্রতি দরূদ ও সালাম পেশ করো।”
সূরাঃ আল-আহযাব -৫৬

“মাওলা ইয়া সাল্লি ওয়া সাল্লিম দায়ীমান আবাদান” এর রচিতা মিশরের বিখ্যাত কবি ইমাম শেখ আবু আবদুল্লাহ। তিঁনি আশেকে রাসূল ছিলেন। একবার তিঁনি হঠাৎ পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত হলেন। হেকিম কবিরাজ দিয়ে অনেক চিকিৎসা করালেন কিন্তু উপকার হলো না।
একদিন এক অদৃশ্য ইঙ্গিতে তিঁনি নবীজির শানে বিখ্যাত নাতে রাসূল টি রচনা করেন। নাতে রাসূল বুকে নিয়ে রোগ মুক্তির আশায় নবী (সাঃ) মহব্বতে অনেক কান্নাকাটি করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লেন। ঘুমন্ত অবস্থায় তিঁনি দেখলেন দয়াল নবী (সাঃ)কে তার রচিত নাতে রাসূল পড়ে শুনাচ্ছেন।
পড়া শেষ হলে নবিজি খুশি হয়ে তার পক্ষাঘাত আক্রান্ত অংশ মুছে দিলেন এবং তিঁনার পবিত্র দেহ পাকে জড়ানো কারুকার্যখচিত চাদরটি খুলে কবির শরীরের ঢেকে দিলেন।
ঘুম ভেঙ্গে কবি দেখলেন মহামূল্যবান চাদর খানা তার গায়ে এবং তিনি সম্পর্ন সুস্থ।

মহাকবি শেখ সাদী (রহঃ) যখন “বালাগালা উলা বি কামালিহি” লিখছিলেন। তিন লাইন লিখার পর চতুর্থ পক্তিটি আর লিখতে পারলেন না। খুব চিন্তাভাবনা করেও কবিতা খানা শেষ করতে পারলেন না। পাগলপারা হয়ে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে সারা দিন কাঁদতেন। একদিন স্বপ্নে দেখেন, রাসূল (সাঃ) প্রশ্ন করলেন, সাদী তোমার কি হয়েছে? এত পেরেশান কেন? হযরত সাদী (রহঃ) সব খুলে বললেন।
প্রেমের নবী (সাঃ) বললেন, “সাদী, তুমি লিখঃ ” সাল্লু আলাইহি ওয়াআলাইহি”

শাহসূফী হযরত মাওলানা খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছিলেন আশেকে রাসূল। তিঁনি গাইতেন,
“নবী প্রেম সুদা পান কর সবে
মন বেদনা যাতনা জুরাইবে
খোদা প্রাপ্তি তোর তরে লাভ হবে
নবী পদবিনে ভাবো সবই মিছে”

সেই প্রেমের শিক্ষা দেয়া হয় বর্তমানে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে। প্রেমের শিক্ষা গ্রহনে আসুন বিশ্ব জাকের মঞ্জিল দরবার শরীফে।
আসুন বেশি বেশি দরুদ ও সালাম পাঠ করি। হেডফোন দিয়ে গান না শুনে নাতে মোস্তাফা (সাঃ) শুনি।

লিখেছেনঃ ইবনে সুলতান