ঢাকা ০৫:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের প্রতি আদব প্রদর্শন

  • আপডেট সময় : ০৫:১৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ২৪৬৩ বার পড়া হয়েছে

বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের প্রতি আদব প্রদর্শন

Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের প্রতি আদব প্রদর্শনঃ-

বিশ্ব জাকের মঞ্জিল আল্লাহ্ ও রাসূলের স্বীকৃত দরবার। ইহা বিশ্ব মানবকুলের পবিত্র তীর্থ কেন্দ্র।
তোমরা সর্বদাই এই দরবারের পবিত্রতা রক্ষা করিয়া চলিও।

(১) মনে রাখিও, পীরের দরবারের ধুলাবালি আশেকানদের চোখের সুরমা।
(২) দরবারকে সর্বদাই ইজ্জত করিও।
(৩) দরবারের দায়েরার মধ্যে নগ্ন পায়ে চলিও।
পীরের দরবারে মুরীদ সবসময়ই গোলাম।
গোলামকে গোলাম হিসাবেই থাকা কর্তব্য।
তোমরা হয়তো শুনিয়া থাকিবে, হযরত হাসান বছরী (রঃ) ছাহেব যেদিন হযরত বশির হাফি (রঃ) ছাহেবকে তাওয়াজ্জুহ প্রয়োগ করিয়া ওলীর দরজায় পৌঁছাইয়া দেন, সেদিন তিনি নগ্ন পায়ে ছিলেন।

পীরের সম্মানার্থে, পীরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনার্থে হযরত বশির হাফি (রঃ) ছাহেব পরবর্তীতে প্রথিতযশা ওলী হিসাবে খ্যাতি অর্জন করা সত্ত্বেও জীবনে কখনও জুতা, সেন্ডেল পায়ে দেন নাই।
পীরের প্রতি উক্তরূপ আদব প্রদর্শন করায় মহান খোদাতায়ালা তাঁহার উপর অতিশয় খুশী হন এবং তাহার মর্যাদা বহুগুণে বাড়াইয়া দেন।
পরবর্তীতে তিনি যে সমস্ত পথ দিয়া হাটা-চলা করিতেন; গরু ছাগল, পশু-পাখী তথা কোন জীব-জানোয়ারই তাঁহার ইজ্জতের খাতিরে সেই পথে মল-মূত্র ত্যাগ করিত না।

(৪) দায়েরা শরীফের কোথাও কফ, থুতু ফেলিও না। থুতু ফেলিবার প্রয়োজন হইলে দায়েরার বাহিরে ফেলিবে।
আমার পীরের দরবারের দায়েরাতে কখনও আমি কফ থুতু ফেলি নাই।
অতীব প্রয়োজন হইলে দায়েরার বাহিরে ফেলিয়াছি, অথবা নিজ কাপড়ে ফেলিয়াছি;
তথাপিও কখনও দায়েরার মধ্যে ফেলি নাই।

(৫) পীরের হুজরার দিকে কফ, থুতু ফেলিও না।
(৬) হুজরার দিকে পা লম্বা করিয়া বসিও না।
(৭) পীরের দরবারে সর্বদাই আল্লাহর ইয়াদে মশগুল থাকিও। শোরগোল করিও না।
(৮) নিজেকে অন্যের চেয়ে বড় মনে করিও না।
অন্যের চেয়ে নিজেকে বড় ভাবাই অহংকার।
আর অহংকারই পতনের মূল।

(৯) যাহাকেই দেখ না কেন,
তাহাকেই নিজের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করিবে।
যদি বয়ঃজৈষ্ঠ্যকে দেখ, ভাবিও তিনি তোমার চেয়ে অধিক পরিমান ইবাদত করিয়াছেন,
ফলে তোমার চেয়ে অধিক নেকি তিনি অর্জন করিতে সক্ষম হইয়াছেন।
কাজেই তিনি তোমার চেয়ে উত্তম।
আর যদি বয়ঃকনিষ্ঠকে দেখ, ভাবিও সে তোমার মত এত অধিক গোনাহ করিবার সময় পায় নাই;
তাই সে তোমার চেয়ে উত্তম।
তোমাদের দেলকে যদি উক্ত অনুভূতির রংগে রংগিন করিতে পার,
তবে সর্বদাই তোমাদের উপর আল্লাহর রহমতের বারি বর্ষিতে থাকিবে।

(১০) কাহারো সাথে খারাপ ব্যবহার করিও না।
এই দরবারে বহু ওলী-আল্লাহ্ ঘুরিয়া বেড়ায়।
তোমরা তাঁহাদেরকে চেন না।
কাজেই কখন তোমরা কাহার সহিত তিক্ত আচরণ করিবে, ফলে তোমাদের তকদিরে বুরাঈ আসিবে। কাজেই ব্যবহারকে সর্বদাই মার্জিত রাখিও।
(১১) তোমরা পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ করিও না। খাজাবাবা কাহাকে কতটুকু ভালবাসেন,
তোমরা তাহা জান না।
হয়তো এমন একজনের সহিত তুমি ঝগড়া করিতেছ-যাহাকে খাজাবাবা তোমার চেয়ে অধিক ভালবাসেন।
ফলে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হইবে।

(১২) যতটুকু বা যতখানি খেদমতই কর না কেন, তাহাতে গর্বিত হইও না।
আল্লাহ্পাক অহংকারীকে ভালবাসেন না।
সর্বদাই মনে করিও, তোমার খেদমত কবুলিয়তের যোগ্যতা পায় নাই।
নিজেকে ছোট ভাবিও,
তাহা হইলে আল্লাহ্ তোমার ইজ্জত বৃদ্ধি করিয়া দিবেন।
(১৩) আল্লাহ্ রাসূলের দরবার হিসেবে জাকের মঞ্জিলকে তোমরা ভালবাসিও।
মনে প্রাণে মহব্বত করিও।

(১৪) প্রকাশ্যে বা গোপনে জাকের মঞ্জিলের কোন রূপ ক্ষতির চেষ্টা করিও না।
যদি কর, আল্লাহর কোপানলে পতিত হইবে।
এমনকি যদি মনে মনেও ক্ষতি করার চিন্তা কর,
তাহা হইলেও বিপদগ্রস্থ হইবে।
(১৫) শরীয়তের খেলাফ কোন কাজ দরবারে করিবে না; অন্যকেও তাহা করিতে নিষেধ করিবে।

(১৬) বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ওলী-আল্লাহ্গণের মজলিশ। এখানে কোনরূপ বেয়াদবী করিও না।
বেয়াদবী করিলে দু’দিন আগে বা পরে তকদিরে পোকা ধরিবে।
শুধু তাই নয়, বেয়াদবীর কারণে বংশানুক্রমে দুর্ভোগ আসিতে পারে।
একবার এক লোক সুলতানুল আরেফীন, ছেরাজুস সালেকীন হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রঃ) ছাহেবের সহিত বেয়াদবী করিল।
ফলে কয়েকদিনের মধ্যেই সে কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হইল। সেই রোগেই সে মারা গেল।
তাহার সন্তানদের মধ্যে বংশানুক্রমে এই কুষ্ঠরোগ সংক্রামিত হইল।
এই ঘটনাটি বোস্তামে ব্যাপক লোক-প্রসিদ্ধি লাভ করিল অর্থাৎ যুগের পর যুগ ধরিয়া এই ঘটনা লোকমুখে প্রচার হইতে লাগিল।
একদা বোস্তাম নিবাসী এক সাধককে তদীয় মুরীদানেরা জিজ্ঞাসা করিলেন, `হুজুর, অপরাধ করিল একজন। আর ইহার শাস্তি তাহার বংশধরেরা পুরুষানুক্রমে ভোগ করিতেছে। ইহার কারণ কি?
উক্ত বুজুর্গ উত্তরে বলিলেন, বাবা, তীরন্দায যত অধিক শক্তিশালী হন, তাহার তীর তত দূর পর্যন্ত পৌঁছে।”
কাজেই বেয়াদবী করিও না।
আদব রক্ষা করিয়া চলিও।
মনে রাখিও, বেয়াদব আল্লাহর রহমত হইতে বঞ্চিত হয়।

(১৭) নিজেকে সব সময়ই মনে, মুখে ও কাজে নিকৃষ্ট চিন্তা করিবে।
ছোট না হইলে বড় হওয়া যায় না।
গাছের শিখরে উঠিতে হইলে নীচ হইতে চেষ্টা করিতে হয়।
হযরত আদম (আঃ) মাটির তৈরী হিসেবে নিজেকে নিকৃষ্ট জানিতেন।
তাই আল্লাহ্তায়ালা তাহার ইজ্জত বাড়াইয়া দিলেন, খলিফা হিসাবে মনোনিত করিলেন।
অন্যদিকে শয়তান আগুনের তৈরী বলিয়া নিজেকে বড় মনে করিল, শ্রেষ্ঠ ভাবিল।
তাই সে আল্লাহ্তায়ালার কোপানলে পড়িল,
অভিশপ্ত হইল, পবিত্র দরবার হইতে বিতাড়িত হইল।
তোমাদের দেহের মধ্যেও আগুন আছে।
সেই আগুনের স্বভাবও আছে-তাহা হইল অহংকার। সর্বদাই হুশিয়ার থাকিও, যেন আগুনের স্বভাব তোমাদের উপর প্রভাব ফেলিতে না পারে।
তোমরা নিজেদেরকে মাটির মত করিয়া গড়িয়া তোল। দেখ, মাটিতে কত রংবেরং-এর চিত্তাকর্ষক ফুল হয়, সুস্বাদু ফল হয়;
নিজেদের স্বভাবকে যদি মাটির মত বিনয়ী করিতে পার,
তাহা হইলে মাটির তৈরী তোমাদের এই দেহের প্রত্যেক অণুতে কলেমা `লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” এর ফুল ফুটিবে, খোদাপ্রাপ্তিতত্ত্বজ্ঞানরূপ ফল ধরিবে।

~তথ্যসূত্রঃ- বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পরিচালনা-পদ্ধতি।

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

Discover more from Sufibad.Com - সূফীবাদ.কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের প্রতি আদব প্রদর্শন

আপডেট সময় : ০৫:১৩:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪

বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের প্রতি আদব প্রদর্শনঃ-

বিশ্ব জাকের মঞ্জিল আল্লাহ্ ও রাসূলের স্বীকৃত দরবার। ইহা বিশ্ব মানবকুলের পবিত্র তীর্থ কেন্দ্র।
তোমরা সর্বদাই এই দরবারের পবিত্রতা রক্ষা করিয়া চলিও।

(১) মনে রাখিও, পীরের দরবারের ধুলাবালি আশেকানদের চোখের সুরমা।
(২) দরবারকে সর্বদাই ইজ্জত করিও।
(৩) দরবারের দায়েরার মধ্যে নগ্ন পায়ে চলিও।
পীরের দরবারে মুরীদ সবসময়ই গোলাম।
গোলামকে গোলাম হিসাবেই থাকা কর্তব্য।
তোমরা হয়তো শুনিয়া থাকিবে, হযরত হাসান বছরী (রঃ) ছাহেব যেদিন হযরত বশির হাফি (রঃ) ছাহেবকে তাওয়াজ্জুহ প্রয়োগ করিয়া ওলীর দরজায় পৌঁছাইয়া দেন, সেদিন তিনি নগ্ন পায়ে ছিলেন।

পীরের সম্মানার্থে, পীরের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনার্থে হযরত বশির হাফি (রঃ) ছাহেব পরবর্তীতে প্রথিতযশা ওলী হিসাবে খ্যাতি অর্জন করা সত্ত্বেও জীবনে কখনও জুতা, সেন্ডেল পায়ে দেন নাই।
পীরের প্রতি উক্তরূপ আদব প্রদর্শন করায় মহান খোদাতায়ালা তাঁহার উপর অতিশয় খুশী হন এবং তাহার মর্যাদা বহুগুণে বাড়াইয়া দেন।
পরবর্তীতে তিনি যে সমস্ত পথ দিয়া হাটা-চলা করিতেন; গরু ছাগল, পশু-পাখী তথা কোন জীব-জানোয়ারই তাঁহার ইজ্জতের খাতিরে সেই পথে মল-মূত্র ত্যাগ করিত না।

(৪) দায়েরা শরীফের কোথাও কফ, থুতু ফেলিও না। থুতু ফেলিবার প্রয়োজন হইলে দায়েরার বাহিরে ফেলিবে।
আমার পীরের দরবারের দায়েরাতে কখনও আমি কফ থুতু ফেলি নাই।
অতীব প্রয়োজন হইলে দায়েরার বাহিরে ফেলিয়াছি, অথবা নিজ কাপড়ে ফেলিয়াছি;
তথাপিও কখনও দায়েরার মধ্যে ফেলি নাই।

(৫) পীরের হুজরার দিকে কফ, থুতু ফেলিও না।
(৬) হুজরার দিকে পা লম্বা করিয়া বসিও না।
(৭) পীরের দরবারে সর্বদাই আল্লাহর ইয়াদে মশগুল থাকিও। শোরগোল করিও না।
(৮) নিজেকে অন্যের চেয়ে বড় মনে করিও না।
অন্যের চেয়ে নিজেকে বড় ভাবাই অহংকার।
আর অহংকারই পতনের মূল।

(৯) যাহাকেই দেখ না কেন,
তাহাকেই নিজের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করিবে।
যদি বয়ঃজৈষ্ঠ্যকে দেখ, ভাবিও তিনি তোমার চেয়ে অধিক পরিমান ইবাদত করিয়াছেন,
ফলে তোমার চেয়ে অধিক নেকি তিনি অর্জন করিতে সক্ষম হইয়াছেন।
কাজেই তিনি তোমার চেয়ে উত্তম।
আর যদি বয়ঃকনিষ্ঠকে দেখ, ভাবিও সে তোমার মত এত অধিক গোনাহ করিবার সময় পায় নাই;
তাই সে তোমার চেয়ে উত্তম।
তোমাদের দেলকে যদি উক্ত অনুভূতির রংগে রংগিন করিতে পার,
তবে সর্বদাই তোমাদের উপর আল্লাহর রহমতের বারি বর্ষিতে থাকিবে।

(১০) কাহারো সাথে খারাপ ব্যবহার করিও না।
এই দরবারে বহু ওলী-আল্লাহ্ ঘুরিয়া বেড়ায়।
তোমরা তাঁহাদেরকে চেন না।
কাজেই কখন তোমরা কাহার সহিত তিক্ত আচরণ করিবে, ফলে তোমাদের তকদিরে বুরাঈ আসিবে। কাজেই ব্যবহারকে সর্বদাই মার্জিত রাখিও।
(১১) তোমরা পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ করিও না। খাজাবাবা কাহাকে কতটুকু ভালবাসেন,
তোমরা তাহা জান না।
হয়তো এমন একজনের সহিত তুমি ঝগড়া করিতেছ-যাহাকে খাজাবাবা তোমার চেয়ে অধিক ভালবাসেন।
ফলে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হইবে।

(১২) যতটুকু বা যতখানি খেদমতই কর না কেন, তাহাতে গর্বিত হইও না।
আল্লাহ্পাক অহংকারীকে ভালবাসেন না।
সর্বদাই মনে করিও, তোমার খেদমত কবুলিয়তের যোগ্যতা পায় নাই।
নিজেকে ছোট ভাবিও,
তাহা হইলে আল্লাহ্ তোমার ইজ্জত বৃদ্ধি করিয়া দিবেন।
(১৩) আল্লাহ্ রাসূলের দরবার হিসেবে জাকের মঞ্জিলকে তোমরা ভালবাসিও।
মনে প্রাণে মহব্বত করিও।

(১৪) প্রকাশ্যে বা গোপনে জাকের মঞ্জিলের কোন রূপ ক্ষতির চেষ্টা করিও না।
যদি কর, আল্লাহর কোপানলে পতিত হইবে।
এমনকি যদি মনে মনেও ক্ষতি করার চিন্তা কর,
তাহা হইলেও বিপদগ্রস্থ হইবে।
(১৫) শরীয়তের খেলাফ কোন কাজ দরবারে করিবে না; অন্যকেও তাহা করিতে নিষেধ করিবে।

(১৬) বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ওলী-আল্লাহ্গণের মজলিশ। এখানে কোনরূপ বেয়াদবী করিও না।
বেয়াদবী করিলে দু’দিন আগে বা পরে তকদিরে পোকা ধরিবে।
শুধু তাই নয়, বেয়াদবীর কারণে বংশানুক্রমে দুর্ভোগ আসিতে পারে।
একবার এক লোক সুলতানুল আরেফীন, ছেরাজুস সালেকীন হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রঃ) ছাহেবের সহিত বেয়াদবী করিল।
ফলে কয়েকদিনের মধ্যেই সে কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হইল। সেই রোগেই সে মারা গেল।
তাহার সন্তানদের মধ্যে বংশানুক্রমে এই কুষ্ঠরোগ সংক্রামিত হইল।
এই ঘটনাটি বোস্তামে ব্যাপক লোক-প্রসিদ্ধি লাভ করিল অর্থাৎ যুগের পর যুগ ধরিয়া এই ঘটনা লোকমুখে প্রচার হইতে লাগিল।
একদা বোস্তাম নিবাসী এক সাধককে তদীয় মুরীদানেরা জিজ্ঞাসা করিলেন, `হুজুর, অপরাধ করিল একজন। আর ইহার শাস্তি তাহার বংশধরেরা পুরুষানুক্রমে ভোগ করিতেছে। ইহার কারণ কি?
উক্ত বুজুর্গ উত্তরে বলিলেন, বাবা, তীরন্দায যত অধিক শক্তিশালী হন, তাহার তীর তত দূর পর্যন্ত পৌঁছে।”
কাজেই বেয়াদবী করিও না।
আদব রক্ষা করিয়া চলিও।
মনে রাখিও, বেয়াদব আল্লাহর রহমত হইতে বঞ্চিত হয়।

(১৭) নিজেকে সব সময়ই মনে, মুখে ও কাজে নিকৃষ্ট চিন্তা করিবে।
ছোট না হইলে বড় হওয়া যায় না।
গাছের শিখরে উঠিতে হইলে নীচ হইতে চেষ্টা করিতে হয়।
হযরত আদম (আঃ) মাটির তৈরী হিসেবে নিজেকে নিকৃষ্ট জানিতেন।
তাই আল্লাহ্তায়ালা তাহার ইজ্জত বাড়াইয়া দিলেন, খলিফা হিসাবে মনোনিত করিলেন।
অন্যদিকে শয়তান আগুনের তৈরী বলিয়া নিজেকে বড় মনে করিল, শ্রেষ্ঠ ভাবিল।
তাই সে আল্লাহ্তায়ালার কোপানলে পড়িল,
অভিশপ্ত হইল, পবিত্র দরবার হইতে বিতাড়িত হইল।
তোমাদের দেহের মধ্যেও আগুন আছে।
সেই আগুনের স্বভাবও আছে-তাহা হইল অহংকার। সর্বদাই হুশিয়ার থাকিও, যেন আগুনের স্বভাব তোমাদের উপর প্রভাব ফেলিতে না পারে।
তোমরা নিজেদেরকে মাটির মত করিয়া গড়িয়া তোল। দেখ, মাটিতে কত রংবেরং-এর চিত্তাকর্ষক ফুল হয়, সুস্বাদু ফল হয়;
নিজেদের স্বভাবকে যদি মাটির মত বিনয়ী করিতে পার,
তাহা হইলে মাটির তৈরী তোমাদের এই দেহের প্রত্যেক অণুতে কলেমা `লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” এর ফুল ফুটিবে, খোদাপ্রাপ্তিতত্ত্বজ্ঞানরূপ ফল ধরিবে।

~তথ্যসূত্রঃ- বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পরিচালনা-পদ্ধতি।