যেখানে এক কাঁতারে মানুষ
- আপডেট সময় : ১০:২০:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৪
- / ২৪৫৪ বার পড়া হয়েছে
যেখানে এক কাঁতারে “মানুষ”
“তিঁনি (আমার হযরত পীর কেবলাজান) এদেশের হাজার হাজার শিক্ষিত, উচ্চশিক্ষিত, কলমপেশা, বুদ্ধিজীবী, উচ্চপদস্থ কর্মচারীকে শ্রমের মর্যাদা শিখিয়েছেন।
নিজের হাতে কাজ করতে শিখিয়েছেন। তিনি দেখিয়েছেন সবাই মিলে সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করলে অতিবড় কাজও অল্প সময়ে সুচারুভাবে সংঘটিত হয়। এখানে (বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে) এসে গামছা কোমরে বেঁধে কুঠার নিয়ে গাছ কাটতে যান একজন এডিশনাল ডিপুটি কমিশনার। রাজমিস্ত্রীর হেলপারের কাজে মাথায় ইট বহন করেন ব্যাংকের ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার। কাজে নেমে যান সিভিল ইঞ্জিয়ার, বাঁশের চালা তৈরীতে লেগে যান জজ ম্যাজিস্ট্রেট। কারো মনে সামান্য ভাবান্তর নেই। বরং জীবনের প্রান্তে এসে এসব কাজ করতে পেরে, শ্রমের মর্যাদা দিতে পেরে, সাধারন শ্রমিকের সঙ্গে এক কাতারে দাঁড়াতে পেরে, মানবতার অহংকারে আনন্দই বোধ করেন সবাই।
প্রচন্ড ক্ষমতাশালী ব্যক্তি ধনকুবের বিশাল বিশাল সবমানুষ আসে এখানে। তিঁনি তাদের সাধারন জীবন-যাপন করতে শিখিয়েছেন। তাঁরা বাড়ীতে যেমনই থাকেন এখানে এসে এককাতারে খড়ের উপর চাদর ফেলে শুয়ে পড়েন, খালি পায়ে ঘুরে বেড়ান, সারাদিন কাজ করেন। খাওয়ার সময় হলে লাইন ধরে শানকিটিতে খাবার নিয়ে বসে যান ঘাসের উপর। সবার সঙ্গে বসে মোটাচাল, তরকারী আর ডাল দিয়ে ভাত খেয়ে তৃপ্তিতে ভরে উঠে মন। তাদের মনে সামান্যতম অন্য অনূভুতি নেই। এ জীবনে থাকতেই যেন তাদের ভালো লাগে। তাই তারা ছুটি ছাটা পেলেই এখানে চলে আসেন। একদিন হোক দু’দিন হোক, সাতদিন হোক থেকে যায়। আসেন নিজের ইচ্ছায়, যান পীরের ইচ্ছায়। কখনো অনেকদিন থেকে যেতে হয়-সামান্যতম ক্ষোভ নেই। বরং এখানে এই সরল শান্তিময় জীবনে থাকতে পারলেই যেন তারা সুখি। তারা একে অপরের জাকের ভাই। অপূর্ব ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ তারা। তাদের মধ্যে একই সঙ্গে গভীর সম্মান ও ভালোবাসার সম্পর্ক। পীর কেবলাজান ছাহেব ফরমান, “আমি তাদেরকে বিনে সুতোর মালায় গেঁথে দিয়েছি।” একথা ভারী সত্য। কোন আত্নীয়তা নেই, রক্তের কোনো দূরসম্পর্কও নেই তবু একজন জাকের আরেকজনের ভারী আপন।
এই মাটিতে পা দিলে মন কেমন যেন হয়ে যায়। পৃথিবীর কথা মন থেকে মুছে যায়। শুধু ইবাদত-বন্দেগি আর তিঁনার উপদেশ বানী মুবারক শুনতেই মন চায়।
অভাব-অনটন, দুঃখ যাতনা, অশান্তি একপাশে রেখে আসুন বিশ্ব জাকের মঞ্জিল দরবার শরীফে। সর্বোপরি “মানুষ” হওয়ার জন্য আসুন।
আরো পড়ুনঃ