ঢাকা ০৭:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শাহ নেয়ামাতুল্লাহ ওয়ালী (রহঃ) এর ভবিষ্যৎবাণী

  • আপডেট সময় : ১০:২৫:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৩০০৪ বার পড়া হয়েছে

শাহ নেয়ামাতুল্লাহ ওয়ালী (রহঃ) এর ভবিষ্যৎবাণী : বাংলাদেশ পরিস্থিতি এবং গাজওয়াতুল হিন্দ sufibad

Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হযরত শাহসূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব ফরমান, “ওলীয়ে কাশ্মিরী হযরত নেয়ামতউল্লার ভবিষ্যদ্বাণীর কথা সর্বজনবিদিত। আজ থেকে সাতশত (৭০০) বছরের অধিককাল পূর্বে তিনি জগতের বিভিন্ন ঘটনার উপরে বহু ভবিষ্যদ্বানী করেন, যাহা সবই বাস্তবে রূপ লাভ করিয়াছে। তিনি প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ, এমনকি তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ সম্পর্কেও ভবিষ্যৎবাণী করিয়াছিলেন। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ সম্পর্কে যা যা বলিয়াছিলেন, তাহা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবে প্রতিফলিত হইয়াছে। বাকী বাণী সমূহ বাস্তবায়িত হইবে-ইহাতে কোন সন্দেহ নাই। কারন ওলীয়ে কাশ্মিরী হযরত নেয়ামত উল্লাহ (রঃ) ছাহেব আলমে মেছালে সংরক্ষিত ঘটনাবলীর ছুরাত দেখিয়াই ভবিষ্যদ্বানী করিয়াছিলেন-তাই তাহার ব্যক্ত বাণী সত্য। তিনি নিজেই বলিয়াছেন যে,”আমি যাহা বলিতেছি তাহা কোন জ্যোতিষীর গণনা দ্বারা নয়, আমি অন্তর চক্ষু দ্বারা দেখিয়াই বলিতেছি।”

গ্রন্থসূত্রঃ খোদাপ্রাপ্তিজ্ঞানের আলোকে শাহসূফী হযরত ফরিদপুরী(কুঃছেঃআঃ) ছাহেবর পবিত্র নসিহত শরীফ, ৭ম খন্ড, পৃষ্টা-৫২
জগৎ বিখ্যাত ওলীয়ে কামেল, হযরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আজ থেকে হিজরী ৮৮৬ বছর পূর্বে হিজরী অর্থাৎ ৫৪৮ সালে (হিজরী ৫৪৮ সাল মোতাবেক ১১৫২ সালে খ্রিস্টাব্দে) এক ক্বাসিদা (কবিতা) রচনা করেন।
(টিকাঃ দীর্ঘ কবিতাকে আরবী ও ফারসী ভাষায় বলা হয় ক্বাসিদা। ফারসী ভাষায় রচিত হযরত শাহ নেয়ামত উল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি এর সুদীর্ঘ কবিতায় ভারত উপমহাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের ঘটিতব্য বিষয় সম্পর্কে অনেক ভবিষৎবাণী করা হয়েছে।)
কালে কালে তার এ ক্বসিদার এক একটি ভবিষ্যৎবাণী ফলে গেছে আশ্চর্যজনক ভাবে।
এর অসাধারণ প্রভাব ও ফলাফল লক্ষ্য করে, ব্রিটিশ বড় লাট লর্ড কার্জনের শাসনামলে (১৮৯৯-১৯০৫) এ ক্বাসিদা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
নিম্নে উক্ত ক্বাসিদা উল্লেখ করা হলো৷ উল্লেখ্য যে, বঙ্গানুবাদ গুলো আজ থেকে ৪৩ বছর আগের। কবিতাটিতে মোট ৫৮টি প্যারা আছে।

ক্বাসিদাঃ

(প্যারা: ১) পশ্চাতে রেখে এ ভারতের অতীত কাহিনী যত, আগামী দিনের সংবাদ কিছু বলে যাই অবিরত।
টীকা: ভারত= ভারতীয় উপমহাদেশ।

(প্যারা: ২+৩) দ্বিতীয় দাওরে হুকুমত হবে তুর্কী মুঘলদের, কিন্তু শাসন হইবে তাদের অবিচার যুলুমের। ভোগে ও বিলাসে আমোদে-প্রমোদে মত্ত থাকিবে তারা, হারিয়ে ফেলিবে স্বকীয় মহিমা তুর্কী স্বভাবধারা।
টীকা: দ্বিতীয় দাওর= ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসনের দ্বিতীয় অধ্যায়। শাহবুদ্দীন মুহম্মদ ঘোরি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আমল (১১৭৫ সাল) থেকে সুলতান ইব্রাহীম লোদীর শাসনকাল (১৫২৬ সাল) পর্যন্ত প্রথম দাওর। এবং সম্রাট বাবর শাসনকাল (১৫২৬ সাল) থেকে ভারতে মুসলিম দ্বিতীয় দাওর। মুঘল শাসকদের অনেকই আল্লাহ ওয়ালা-ওলী আল্লাহ ছিলেন। তবে কেউ কেউ প্রকৃত ইসলামী আইনকানুন ও শরীয়তি আমল থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। আর হাদীস শরীফেই আছে: যখন মুসলমানরা ইসলাম থেকে দূরে সরে যাবে, তখন তার উপর গজব স্বরূপ বহিশত্রুকে চাপিয়ে দেয়া হবে।

(প্যারা: ৪) তাদের হারায়ে ভিন দেশী হবে শাসন দণ্ডধারী, জাকিয়া বসিবে নিজ নামে তারা মুদ্রা করিবে জারি।
টীকা: ভিন দেশী বলে ইংরেজদের বোঝানো হয়েছে।
(প্যারা: ৫+৬) এরপর হবে রাশিয়া-জাপানে ঘোরতর এক রণ, রুশকে হারিয়ে এ রণে বিজয়ী হইবে জাপানীগণ; শেষে দেশ-সীমা নিবে ঠিক করে মিলিয়া উভয় দল, চুক্তিও হবে কিন্তু তাদের অন্তরে রবে ছল।
টীকা: বিশ শতকের প্রারম্ভে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জাপান কোরিয়ার উপর আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে পীত সাগর, পোট অব আর্থার ও ভলডিভস্টকে অবস্থানরাত রুশ নৌবহরগুলো আটক করার মধ্য দিয়ে এ যুদ্ধ শুরু হয়। অবশেষে রাশিয়া জাপানের সাথে চুক্তি করতে বাধ্য হয়।

(প্যারা: ৭+৮) ভারতে তখন দেখা দিবে প্লেগ আকালিক দুর্যোগ, মারা যাবে তাতে বহু মুসলিম হবে মহাদুর্ভোগ।
টীকা: ১৮৯৮-১৯০৮ সাল পর্যন্ত ভারতে মহামারী আকারে প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এতে প্রায় ৫ লক্ষ লোকের জীবনাবসান হয়। ১৭৭০ সালে ভারতে মহাদুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়। বংগ প্রদেশে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ থেকে উদ্ভুত মহামারিতে এ প্রদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ প্রাণ হারায়।
(প্যারা: ৮) এরপর পরই ভয়াবহ এক ভূকম্পনের ফলে, জাপানের এক তৃতীয় অংশ যাবে হায় রসাতলে।
টীকা: ১৯৪৪ সালে জাপানের টোকিও এবং ইয়াকুহামায় প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প সংঘটিত হয়।

(প্যারা: ৯) পশ্চিমে চার সালব্যাপী ঘোরতর মহারণ, প্রতারণা বলে হারাবে এ রণে জীমকে আলিফগণ।
টীকা: ১৯১৪-১৯১৮ সাল পর্যন্ত চার বছরাধিকাল ধরে ইউরোপে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়। জীম= জার্মানি, আলিফ=ইংল্যান্ড।
(প্যারা: ১০) এ সমর হবে বহু দেশ জুড়ে অতীব ভয়ঙ্কর, নিহত হইবে এতে এক কোটি ত্রিশ লাখ নারী-নর।
টীকা: ব্রিটিশ সরকারের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ি প্রথম মহাযুদ্ধে প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ লোক মারা যায়।

 

(প্যারা: ১১) অতঃপর হবে রণ বন্ধের চুক্তি উভয় দেশে, কিন্তু তা হবে ক্ষণভঙ্গুর টিকিবে না অবশেষে।
টীকা: ১৯১৯ সালে প্যারিসের ভার্সাই প্রাসাদে প্রথম মহাযুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে ‘ভার্সাই সন্ধি’ হয়, কিন্তু তা টিকেনি।
(প্যারা: ১২) নিরবে চলিবে মহাসমরের প্রস্তুতি বেশুমার, ‘জীম’ ও আলিফে খণ্ড লড়াই ঘটিবে বারংবার।
(প্যারা: ১৩) চীন ও জাপান দু’দেশ যখন লিপ্ত থাকিবে রণে, নাসারা তখন রণ প্রস্তুতি চালাবে সঙ্গোপনে।
টীকা: নাসারা মানে খ্রিষ্টান।

 

(প্যারা: ১৪) প্রথম মহাসমরের শেষে একুশ বছর পর, শুরু হবে ফের আরো ভয়াবহ দ্বিতীয় সমর।
টীকা: ১ম মহাযুদ্ধ সমাপ্তি হয় ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর আর দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সূচনা হয় ১৯৩৯ সালে ৩রা সেপ্টেম্বর। দুই যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময় প্রায় ২১ বছর।
(প্যারা: ১৫) হিন্দবাসী এ সমরে যদিও সহায়তা দিয়ে যাবে, তার থেকে তারা প্রার্থিত কোনো সুফল নাহিকো পাবে ।
টীকা: ভারতীয়রা ব্রিটিশ সরকারের প্রদত্ত যে সকল আশ্বাসের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে তাদের সহায়তা করেছিল, যুদ্ধের পর তা বাস্তবায়ন করেনি।
(প্যারা: ১৬) বিজ্ঞানীগণ এ লড়াইকালে অতিশয় আধুনিক, করিবে তৈয়ার অতি ভয়াবহ হাতিয়ার আনবিক।
টীকা: মূল কবিতায় ব্যবহৃত শব্দটি হচ্ছে ‘আলোতে বারক’ যার শাব্দিক অর্থ বিদ্যুৎ অস্ত্র, অনুবাদক বিদ্যুৎ অস্ত্রের পরিবর্তে ‘আনবিক অস্ত্র তরজমা করেছে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে আমেরিকা হিরোসিমা-নাগাসাকিতে আনবিক বোমা নিক্ষেপ করে। এতে লাখ লাখ বেসামরিক লোক নিহত হয়। কবিতায় বিদ্যুৎ অস্ত্র বলতে মূলত আনবিক অস্ত্রই বুঝানো হয়েছে।

 

(প্যারা: ১৭) গায়েবী ধ্বনির যন্ত্র বানাবে নিকটে আসিবে দূর, প্রাচ্যে বসেও শুনিতে পাইবে প্রতীচীর গান-সুর।
টীকা: গায়েবী ধ্বনির যন্ত্র রেডিও-টিভি।
(প্যারা: ১৮+১৯) মিলিত হইয়া ‘প্রথম আলিফ’ ‘দ্বিতীয় আলিফ’ দ্বয়, গড়িয়া তুলিবে রুশ-চীন সাথে আতাত সুনিশ্চয়। ঝাপিয়ে পড়িবে ‘তৃতীয় আলিফ’ এবং দু’জীমের ঘারে, ছুড়িয়া মারিবে গজবী পাহাড় আনবিক হাতিয়ারে।
টীকা: প্রথম আলিফ= ইংল্যান্ড দ্বিতীয় আলিফ=আমেরিকা তৃতীয় আলিফ= ইটালি। দুই জীম=জার্মানি ও জাপান (প্যারা: ১৯-এর শেষ) অতি ভয়াবহ নিষ্ঠুরতম ধ্বংসযজ্ঞ শেষে প্রতারণা বলে প্রথম পক্ষ দাড়াবে বিজয়ী বেশে।
(প্যারা: ২০) জগৎ জুড়িয়া ছয় সালব্যাপী এ রণে ভয়াবহ, হালাক হইবে অগণিত লোক ধন ও সম্পদসহ।
টীকা: জাতিসংঘের হিসেব মতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৬ কোটি লোক মারা গিয়েছিল।

(প্যারা: ২১) মহাধ্বংসের এ মহাসমর অবসানে অবশেষে, নাসারা শাসক ভারত ছাড়িয়া চলে যাবে নিজ দেশে; কিন্তু তাহারা চিরকাল তরে এদেশবাসীর মনে, মহাক্ষতিকর বিষাক্ত বীজ বুনে যাবে সেই সনে।
টীকা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয় ১৯৪৫ সালে, আর ভারত উপমহাদেশ থেকে নাসারা তথা ইংরেজ খ্রিস্টানরা চলে যায় ১৯৪৭ -এ।
এ প্যারার দ্বিতীয় অংশের ব্যাখ্যা দুই রকম আছে। তথা
ক) এ অঞ্চলে বিভেদ তৈরীর জন্য ইংরেজ খ্রিস্টানরা কাশ্মীরকে হিন্দুদের দিয়ে প্যাচ বাধিয়ে যায়।
খ) ইংরেজরা চলে গেলেও তাদের সংস্কৃতি এমনভাবে রেখে গেছে যে এ উপমহাদেশের লোকজন এখনও সব যায়গায় ব্রিটিশ নিয়ম-কানুন, ভাষা-সংস্কৃতি অনুসরণ করে।

(প্যারা: ২২) ভারত ভাঙ্গিয়া হইবে দু’ভাগ শঠতায় নেতাদের, মহাদুর্ভোগ দুর্দশা হবে দু’দেশেরি মানুষের।
টীকা: দেশভাগের সময় মুসলমানরা আরো অনেক বেশি এলাকা পেত। কিন্তু সেই সময় অনেক মুসলমান নেতার গাদ্দারির কারণে অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা হিন্দুদের অধীনে চলে যায়। ফলে কষ্টে পড়ে সাধারণ মুসলমানরা। এখনও ভারতের মুসলমানরা সেই গাদ্দারির ফল ভোগ করছে।
(প্যারা: ২৩) মুকুটবিহীন নাদান বাদশা পাইবে শাসনভার, কানুন ও তার ফরমান হবে আজেবাজে একছার।
টীকা: এ প্যারা থেকে ভারত বিভাগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ধরা যায়। এই সময় এই অঞ্চলে মুসলমানদের ঝাণ্ডাবাহী কোনো সরকার আসেনি। মুকুটবিহীন নাদান বাদশাহ বলতে অনেকে ‘গণতন্ত্র’কে বুঝিয়েছে। আব্রাহাম লিংকনের তৈরী গণতন্ত্রকে জনগণের তন্ত্র বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা হচ্ছে জন-নিপীড়নের তন্ত্র। এ গণতন্ত্রের নিয়ম কানুন যে আজেবাজে সে সম্পর্কে শেষ লাইনে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
(প্যারা: ২৪) দুর্নীতি ঘুষ, কাজে অবহেলা নীতিহীনতার ফলে; শাহী ফর্মান হবে পয়মাল দেশ যাবে রসাতলে।
টীকা: সমসাময়িক দুর্নীতি বুঝানো হয়েছে।

 

(প্যারা: ২৫) হায় আফসোস করিবেন যত আলেম ও জ্ঞানীগণ, মূর্খ বেকুফ নাদান লোকেরা করিবে আস্ফালন।
(প্যারা: ২৬) পেয়ারা নবীর উম্মতগণ ভুলিবে আপন শান, ঘোরতর পাপ পঙ্গিলতায় ডুবিবে মুসলমান।
(প্যারা: ২৭) কালের চক্রে স্নেহ-তমীজের ঘটিবে যে অবসান, লুণ্ঠিত হবে মানী লোকদের ইজ্জত ও সম্মান।
(প্যারা: ২৮) উঠিয়া যাইবে বাছ ও বিচার হালাল ও হারামের, লজ্জা রবে না, লুণ্ঠিত হবে ইজ্জত নারীদের।

(প্যারা: ২৯) পশুর চে অধম হইবে তাহারা ভাই-বোনে আর মা-বেটায়, জেনা ব্যাভিচারে হইবে লিপ্ত পিতা আর কন্যায়।
(প্যারা: ৩০) নগ্নতা আর অশ্লীলতায় ভরে যাবে সব গৃহ, নারীরা উপরে সেজে রবে সতী ভেতরে বেচিবে দেহ।
(প্যারা: ৩১) উপরে সাধুর লেবাস ভেতরে পাপের বেসাতি পুরা, নারী দেহ নিয়ে চালাবে ব্যবসা ইবলিস বন্ধুরা।
(প্যারা: ৩২) নামায ও রোজা, হজ্জ্ব যাকাতের কমে যাবে আগ্রহ, ধর্মের কাজ মনে হবে বোঝা দারুন দুর্বিষহ।

(প্যারা: ৩৩) কলিজার খুন পান করে বলি শোন হে বৎসগণ, খোদার ওয়াস্তে ভুলে যাও সব নাসারার আচরণ।
(প্যারা: ৩৪) পশ্চিমা ঐ অশ্লীলতা ও নগ্নতা বেহায়ামি ডোবাবে তোদের, খোদার কঠোর গজব আসিবে নামি।
(প্যারা: ৩৫) ধ্বংস নিহত হবে মুসলিম বিধর্মীদের হাতে, হবে নাজেহাল ছেড়ে যাবে দেশ ভাসিবে রক্তপাতে।
(প্যারা: ৩৬) মুসলমানের জান-মাল হবে খেলনা- মুল্যহত, রক্ত তাদের প্রবাহিত হবে সাগর রােতর মত।

টীকা: হাদীস শরীফে আছে: পাঁচটি কারণে পাঁচটি জিনিস হয়।
“১) যদি যাকাত না দেয়া হয়, তবে অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি দেখা দেয়;
২) যদি মাপে কম দেয়া হয়, তবে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়,
৩) যদি বেপর্দা-বেহায়াপনা বেড়ে যায়, তবে দুরারোগ্য ব্যাধি দেখা দেয়,
৪) যদি একেক জন একেক রকম ফতওয়া দেয়, তবে মতবিরোধ দেখা দেয়, আর
৫) যদি মুসলমানরা আল্লাহ তায়ালার সাথে যে ওয়াদা করেছিল, সেই ওয়াদা থেকে দূরে সরে যায় (অর্থ্যাৎ কোরআন হাদীস থেকে দূরে সরে কাফেরদের আমল করে) তবে তাদের উপর গজব স্বরূপ বিদেশী শত্রু চাপিয়ে দেয়া হয়।”

(প্যারা: ৩৭) এরপর যাবে ভেগে নারকীরা পাঞ্জাব কেন্দ্রের, ধন সম্পদ আসিবে তাদের দখলে মুমিনদের।
টীকা: এখানে পাঞ্জাব কেন্দ্রের বলতে কাশ্মীর মনে করা হয়।
(প্যারা: ৩৮) অনুরূপ হবে পতন একটি শহর মুমিনদের, তাহাদের ধনসম্পদ যাবে দখলে হিন্দুদের।
টীকা: ১৯৪৮ সালে মুসলিম সুলতান নিজামের অধীনস্ত হায়দারাবাদ শহরটি দখল করে নেয় হিন্দুরা। সে সময় প্রায় ২ লক্ষ মুসলমানকে শহীদ করে মুশরিক হিন্দুরা। ১ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠন করে। হাজার হাজার মসজিদ বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। শুধু নিজামের প্রাসাদ থেকে নিয়ে যায় ৪ ট্রাক সোনা গহনা।

(প্যারা: ৩৯) হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ সেখানে চালাইবে তারা ভারি, ঘরে ঘরে হবে ঘোর কারবালা ক্রন্দন আহাজারি।
(প্যারা: ৪০) মুসলিম নেতা-অথচ বন্ধু কাফেরের, তলে তলে মদদ করিবে তাদের সে এক পাপ চুক্তির ছলে।
টীকা: বর্তমান সময়ে এ উপমহাদেশে এ ধরনের নেতার অভাব নেই। যারা উপর দিয়ে মুসলমানদের নেতা সেজে থাকে, কিন্তু ভেতর দিয়ে কাফিরদের এক নম্বর দালাল। সমগ্র দুনিয়ায় এর যথেষ্ট উদাহরণ আছে।
(প্যারা: ৪১) প্রথম অক্ষরেখায় থাকিবে শীনে’র অবস্থান পঞ্চাশতম অক্ষে থাকিবে নূন’ও বিরাজমান। ঘটিবে তখন এসব ঘটনা মাঝখানে দু’ঈদের; ধিক্কার দিবে বিশ্বের লোক জালিম হিন্দুদের।
টীকা: বর্তমানে এ সময়টি চলে এসেছে। এতদিন জালিমরা মুসলিম নির্যাতনের ঘটনাগুলো লুকিয়ে রাখত। কিন্তু এখন আর লুকানো সম্ভব হচ্ছে না। প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে। এখন সবাই এ জালিমদের জঘণ্য অপকর্মের জন্য তাদের ধিক্কার দিচ্ছে।

(প্যারা: ৪২) মহরম মাসে হাতিয়ার হাতে পাইবে মুমিনগণ, ঝঞ্জাবেগে করিবে তাহারা পাল্টা আক্রমণ।
(প্যারা: ৪৩) সৃষ্টি হইবে ভারত ব্যাপীয়া প্রচণ্ড আলোড়ন। ‘উসমান’ এসে নিবে জেহাদের বজ্র কঠিন পণ।
(প্যারা: ৪৪) ‘সাহেবে কিরান-‘হাবীবুল্লাহ’ হাতে নিয়ে শমসের, খোদায়ী মদদে ঝাপিয়ে পড়িবে ময়দানে যুদ্ধে।
টীকা: এখানে মুসলমানদের সেনাপতির কথা বলা হয়েছে। যিনি হবেন ‘সাহেবে কিরান’ বা ‘সৌভাগ্যবান’। সেই মহান সেনাপতির নাম বা উপাধি হবে ‘হাবীবুল্লাহ’।
(প্যারা: ৪৫) কাপিবে মেদিনী সীমান্ত বীর গাজীদের পদভারে, ভারতের প্রাণে আগাইবে তারা মহারণ হুঙ্কারে।
টীকা: আক্রমণকারীরা উপমহাদেশের অন্যায় দখলকৃত এলাকার বাইরে থাকবে এবং অন্যায় দখলকৃত এলাকা দখল করতে হুঙ্কার দিয়ে এগিয়ে যাবে।

(প্যারা-৪৬) পঙ্গপালের মত ধেয়ে এসে এসব ‘গাজীয়েদ্বীন’ যুদ্ধে, ছিনিয়া বিজয় ঝাণ্ডা করিবেন উড্ডিন। (প্যারা-৪৭) মিলে এক সাথে দক্ষিণী ফৌজ ইরানী ও আফগান, বিজয় করিয়া কবজায় পুরা আনিবে হিন্দুস্তান।
(প্যারা-৪৮) বরবাদ করে দেয়া হবে দ্বীন ঈমানের দুশমন, অঝোর ধারায় হবে আল্লাহ’র রহমত বরিষান।
(প্যারা-৪৯) দ্বীনের বৈরী আছিল শুরুতে ছয় হরফেতে নাম, প্রথম হরফ গাফ সে কবুল করিবে দ্বীন ইসলাম।
টীকা: ছয় অক্ষর বিশিষ্ট একটি নাম, যার প্রথম অক্ষরটি হবে ‘গাফ’ এমন এক হিন্দু বণিক ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম পক্ষে যোগদান করবেন। তিনি কে তা এখনো বুঝা যাচ্ছে না।

(প্যারা-৫০) আল্লা’র খাস রহমতে হবে মুমিনেরা খোশ দিল, হিন্দু রসুম-রেওয়াজ এ ভুমে থাকিবে না এক তিল।
(প্যারা-৫১) ভারতের মত পশ্চিমাদেরও ঘটিবে বিপর্যয়, তৃতীয় বিশ্ব সমর সেখানে ঘটাইবে মহালয়।
(প্যারা-৫২) এ রণে হবে ‘আলিফ’ এরূপ পয়মাল মিসমার মুছে যাবে দেশ, ইতিহাসে শুধু নামটি থাকিবে তার।
টীকা: এ যুদ্ধের কারণে আলিফ = আমেরিকা এরূপ ধ্বংস হবে যে, ইতিহাসে শুধু তার নাম থাকবে, কিন্তু বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
(প্যারা-৫৩) যত অপরাধ তিল তিল করে জমেছে খাতায়, তার শাস্তি উহার ভুগতেই হবে নাই নাই নিস্তার; কুদরতী হাতে কঠিন দণ্ড দেয়া হবে তাহাদের, ধরা বুকে শির তুলিয়া নাসারা দাড়াবে না কবু ফের।

(প্যারা-৫৪) যেই বেঈমান দুনিয়া ধ্বংস করিল আপন কামে, নিপাতিত শেষকালে সে নিজেই জাহান্নামে।

(প্যারা-৫৫) রহস্যভেদী যে রতন হার গাথিলাম আমি, তা যে গায়েবী মদদ লভিতে আসিবে উস্তাদসম কাজে।
(প্যারা-৫৬) অতিসত্বর যদি আল্লা’র মদদ পাইতে চাও, তাহার হুকুম তা’মিলের কাজে নিজেকে বিলিয়ে দাও।
টীকাঃ বর্তমানে সমস্ত ফিতনা হতে হিফাজত হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে সমস্ত হারাম কাজ থেকে খাস তওবা করা। সেটা হারাম আমল হোক কিংবা কাফের মুশরিক প্রণীত বিভিন্ন নিয়ম কানুন হোক।
(প্যারা-৫৭) ‘কানা জাহুকার’ প্রকাশ ঘটার সালেই প্রতিশ্রুত ইমাম মাহাদি দুনিয়ার বুকে হবেন আবির্ভূত ।
টীকাঃ ‘কানা জাহুকার’ সূরা বনী ইসরাইলের ৮১ নং আয়াতের শেষ অংশ। যার অর্থ মিথ্যার বিনাশ অনিবার্য। পূর্ব আয়াতটির অর্থ ‘সত্য সমাগত মিথ্যা বিলুপ্ত’। যখন মিথ্যার বিনাশ কাল উপস্থিত হবে তখন উপযুক্ত সময়েই আবির্ভূত হবেন ‘মাহদী’ বা ‘পথ প্রদর্শক’। উনার আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে চলমান বাতিল ধ্বংস হবে।

(প্যারা-৫৮) চুপ হয়ে যাও ওহে নেয়ামত! এগিও না মোটে আর। ফাঁস করিও না খোদার গায়বী রহস্য আসরার; এ কাসিদা বলা করিলাম শেষ ‘কুনুত কানযাল সাল’ ।
টীকাঃ ‘কুনুত কানযাল সাল’ অর্থাৎ হিজরি সন ৫৪৮ সাল মোতাবেক ১১৫৮ সাল হচ্ছে এ কাসিদার রচনা কাল। এটা আরবি হরফের নাম অনুযায়ী সাংকেতিক হিসাব।
আরবী হরফের নাম অনুযায়ী কাফ = ২০, নুন = ৫০, তা = ৪০০, কাফ = ২০, যা = ৭, আলিফ = ১। সর্বমোট = ৫৪৮।

 

 

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

Discover more from Sufibad.Com - সূফীবাদ.কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

শাহ নেয়ামাতুল্লাহ ওয়ালী (রহঃ) এর ভবিষ্যৎবাণী

আপডেট সময় : ১০:২৫:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

হযরত শাহসূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব ফরমান, “ওলীয়ে কাশ্মিরী হযরত নেয়ামতউল্লার ভবিষ্যদ্বাণীর কথা সর্বজনবিদিত। আজ থেকে সাতশত (৭০০) বছরের অধিককাল পূর্বে তিনি জগতের বিভিন্ন ঘটনার উপরে বহু ভবিষ্যদ্বানী করেন, যাহা সবই বাস্তবে রূপ লাভ করিয়াছে। তিনি প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ, এমনকি তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ সম্পর্কেও ভবিষ্যৎবাণী করিয়াছিলেন। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ সম্পর্কে যা যা বলিয়াছিলেন, তাহা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবে প্রতিফলিত হইয়াছে। বাকী বাণী সমূহ বাস্তবায়িত হইবে-ইহাতে কোন সন্দেহ নাই। কারন ওলীয়ে কাশ্মিরী হযরত নেয়ামত উল্লাহ (রঃ) ছাহেব আলমে মেছালে সংরক্ষিত ঘটনাবলীর ছুরাত দেখিয়াই ভবিষ্যদ্বানী করিয়াছিলেন-তাই তাহার ব্যক্ত বাণী সত্য। তিনি নিজেই বলিয়াছেন যে,”আমি যাহা বলিতেছি তাহা কোন জ্যোতিষীর গণনা দ্বারা নয়, আমি অন্তর চক্ষু দ্বারা দেখিয়াই বলিতেছি।”

গ্রন্থসূত্রঃ খোদাপ্রাপ্তিজ্ঞানের আলোকে শাহসূফী হযরত ফরিদপুরী(কুঃছেঃআঃ) ছাহেবর পবিত্র নসিহত শরীফ, ৭ম খন্ড, পৃষ্টা-৫২
জগৎ বিখ্যাত ওলীয়ে কামেল, হযরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আজ থেকে হিজরী ৮৮৬ বছর পূর্বে হিজরী অর্থাৎ ৫৪৮ সালে (হিজরী ৫৪৮ সাল মোতাবেক ১১৫২ সালে খ্রিস্টাব্দে) এক ক্বাসিদা (কবিতা) রচনা করেন।
(টিকাঃ দীর্ঘ কবিতাকে আরবী ও ফারসী ভাষায় বলা হয় ক্বাসিদা। ফারসী ভাষায় রচিত হযরত শাহ নেয়ামত উল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি এর সুদীর্ঘ কবিতায় ভারত উপমহাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের ঘটিতব্য বিষয় সম্পর্কে অনেক ভবিষৎবাণী করা হয়েছে।)
কালে কালে তার এ ক্বসিদার এক একটি ভবিষ্যৎবাণী ফলে গেছে আশ্চর্যজনক ভাবে।
এর অসাধারণ প্রভাব ও ফলাফল লক্ষ্য করে, ব্রিটিশ বড় লাট লর্ড কার্জনের শাসনামলে (১৮৯৯-১৯০৫) এ ক্বাসিদা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
নিম্নে উক্ত ক্বাসিদা উল্লেখ করা হলো৷ উল্লেখ্য যে, বঙ্গানুবাদ গুলো আজ থেকে ৪৩ বছর আগের। কবিতাটিতে মোট ৫৮টি প্যারা আছে।

ক্বাসিদাঃ

(প্যারা: ১) পশ্চাতে রেখে এ ভারতের অতীত কাহিনী যত, আগামী দিনের সংবাদ কিছু বলে যাই অবিরত।
টীকা: ভারত= ভারতীয় উপমহাদেশ।

(প্যারা: ২+৩) দ্বিতীয় দাওরে হুকুমত হবে তুর্কী মুঘলদের, কিন্তু শাসন হইবে তাদের অবিচার যুলুমের। ভোগে ও বিলাসে আমোদে-প্রমোদে মত্ত থাকিবে তারা, হারিয়ে ফেলিবে স্বকীয় মহিমা তুর্কী স্বভাবধারা।
টীকা: দ্বিতীয় দাওর= ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসনের দ্বিতীয় অধ্যায়। শাহবুদ্দীন মুহম্মদ ঘোরি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আমল (১১৭৫ সাল) থেকে সুলতান ইব্রাহীম লোদীর শাসনকাল (১৫২৬ সাল) পর্যন্ত প্রথম দাওর। এবং সম্রাট বাবর শাসনকাল (১৫২৬ সাল) থেকে ভারতে মুসলিম দ্বিতীয় দাওর। মুঘল শাসকদের অনেকই আল্লাহ ওয়ালা-ওলী আল্লাহ ছিলেন। তবে কেউ কেউ প্রকৃত ইসলামী আইনকানুন ও শরীয়তি আমল থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন। আর হাদীস শরীফেই আছে: যখন মুসলমানরা ইসলাম থেকে দূরে সরে যাবে, তখন তার উপর গজব স্বরূপ বহিশত্রুকে চাপিয়ে দেয়া হবে।

(প্যারা: ৪) তাদের হারায়ে ভিন দেশী হবে শাসন দণ্ডধারী, জাকিয়া বসিবে নিজ নামে তারা মুদ্রা করিবে জারি।
টীকা: ভিন দেশী বলে ইংরেজদের বোঝানো হয়েছে।
(প্যারা: ৫+৬) এরপর হবে রাশিয়া-জাপানে ঘোরতর এক রণ, রুশকে হারিয়ে এ রণে বিজয়ী হইবে জাপানীগণ; শেষে দেশ-সীমা নিবে ঠিক করে মিলিয়া উভয় দল, চুক্তিও হবে কিন্তু তাদের অন্তরে রবে ছল।
টীকা: বিশ শতকের প্রারম্ভে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জাপান কোরিয়ার উপর আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে পীত সাগর, পোট অব আর্থার ও ভলডিভস্টকে অবস্থানরাত রুশ নৌবহরগুলো আটক করার মধ্য দিয়ে এ যুদ্ধ শুরু হয়। অবশেষে রাশিয়া জাপানের সাথে চুক্তি করতে বাধ্য হয়।

(প্যারা: ৭+৮) ভারতে তখন দেখা দিবে প্লেগ আকালিক দুর্যোগ, মারা যাবে তাতে বহু মুসলিম হবে মহাদুর্ভোগ।
টীকা: ১৮৯৮-১৯০৮ সাল পর্যন্ত ভারতে মহামারী আকারে প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এতে প্রায় ৫ লক্ষ লোকের জীবনাবসান হয়। ১৭৭০ সালে ভারতে মহাদুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়। বংগ প্রদেশে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ থেকে উদ্ভুত মহামারিতে এ প্রদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ প্রাণ হারায়।
(প্যারা: ৮) এরপর পরই ভয়াবহ এক ভূকম্পনের ফলে, জাপানের এক তৃতীয় অংশ যাবে হায় রসাতলে।
টীকা: ১৯৪৪ সালে জাপানের টোকিও এবং ইয়াকুহামায় প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প সংঘটিত হয়।

(প্যারা: ৯) পশ্চিমে চার সালব্যাপী ঘোরতর মহারণ, প্রতারণা বলে হারাবে এ রণে জীমকে আলিফগণ।
টীকা: ১৯১৪-১৯১৮ সাল পর্যন্ত চার বছরাধিকাল ধরে ইউরোপে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়। জীম= জার্মানি, আলিফ=ইংল্যান্ড।
(প্যারা: ১০) এ সমর হবে বহু দেশ জুড়ে অতীব ভয়ঙ্কর, নিহত হইবে এতে এক কোটি ত্রিশ লাখ নারী-নর।
টীকা: ব্রিটিশ সরকারের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ি প্রথম মহাযুদ্ধে প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ লোক মারা যায়।

 

(প্যারা: ১১) অতঃপর হবে রণ বন্ধের চুক্তি উভয় দেশে, কিন্তু তা হবে ক্ষণভঙ্গুর টিকিবে না অবশেষে।
টীকা: ১৯১৯ সালে প্যারিসের ভার্সাই প্রাসাদে প্রথম মহাযুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে ‘ভার্সাই সন্ধি’ হয়, কিন্তু তা টিকেনি।
(প্যারা: ১২) নিরবে চলিবে মহাসমরের প্রস্তুতি বেশুমার, ‘জীম’ ও আলিফে খণ্ড লড়াই ঘটিবে বারংবার।
(প্যারা: ১৩) চীন ও জাপান দু’দেশ যখন লিপ্ত থাকিবে রণে, নাসারা তখন রণ প্রস্তুতি চালাবে সঙ্গোপনে।
টীকা: নাসারা মানে খ্রিষ্টান।

 

(প্যারা: ১৪) প্রথম মহাসমরের শেষে একুশ বছর পর, শুরু হবে ফের আরো ভয়াবহ দ্বিতীয় সমর।
টীকা: ১ম মহাযুদ্ধ সমাপ্তি হয় ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর আর দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সূচনা হয় ১৯৩৯ সালে ৩রা সেপ্টেম্বর। দুই যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময় প্রায় ২১ বছর।
(প্যারা: ১৫) হিন্দবাসী এ সমরে যদিও সহায়তা দিয়ে যাবে, তার থেকে তারা প্রার্থিত কোনো সুফল নাহিকো পাবে ।
টীকা: ভারতীয়রা ব্রিটিশ সরকারের প্রদত্ত যে সকল আশ্বাসের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে তাদের সহায়তা করেছিল, যুদ্ধের পর তা বাস্তবায়ন করেনি।
(প্যারা: ১৬) বিজ্ঞানীগণ এ লড়াইকালে অতিশয় আধুনিক, করিবে তৈয়ার অতি ভয়াবহ হাতিয়ার আনবিক।
টীকা: মূল কবিতায় ব্যবহৃত শব্দটি হচ্ছে ‘আলোতে বারক’ যার শাব্দিক অর্থ বিদ্যুৎ অস্ত্র, অনুবাদক বিদ্যুৎ অস্ত্রের পরিবর্তে ‘আনবিক অস্ত্র তরজমা করেছে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে আমেরিকা হিরোসিমা-নাগাসাকিতে আনবিক বোমা নিক্ষেপ করে। এতে লাখ লাখ বেসামরিক লোক নিহত হয়। কবিতায় বিদ্যুৎ অস্ত্র বলতে মূলত আনবিক অস্ত্রই বুঝানো হয়েছে।

 

(প্যারা: ১৭) গায়েবী ধ্বনির যন্ত্র বানাবে নিকটে আসিবে দূর, প্রাচ্যে বসেও শুনিতে পাইবে প্রতীচীর গান-সুর।
টীকা: গায়েবী ধ্বনির যন্ত্র রেডিও-টিভি।
(প্যারা: ১৮+১৯) মিলিত হইয়া ‘প্রথম আলিফ’ ‘দ্বিতীয় আলিফ’ দ্বয়, গড়িয়া তুলিবে রুশ-চীন সাথে আতাত সুনিশ্চয়। ঝাপিয়ে পড়িবে ‘তৃতীয় আলিফ’ এবং দু’জীমের ঘারে, ছুড়িয়া মারিবে গজবী পাহাড় আনবিক হাতিয়ারে।
টীকা: প্রথম আলিফ= ইংল্যান্ড দ্বিতীয় আলিফ=আমেরিকা তৃতীয় আলিফ= ইটালি। দুই জীম=জার্মানি ও জাপান (প্যারা: ১৯-এর শেষ) অতি ভয়াবহ নিষ্ঠুরতম ধ্বংসযজ্ঞ শেষে প্রতারণা বলে প্রথম পক্ষ দাড়াবে বিজয়ী বেশে।
(প্যারা: ২০) জগৎ জুড়িয়া ছয় সালব্যাপী এ রণে ভয়াবহ, হালাক হইবে অগণিত লোক ধন ও সম্পদসহ।
টীকা: জাতিসংঘের হিসেব মতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ৬ কোটি লোক মারা গিয়েছিল।

(প্যারা: ২১) মহাধ্বংসের এ মহাসমর অবসানে অবশেষে, নাসারা শাসক ভারত ছাড়িয়া চলে যাবে নিজ দেশে; কিন্তু তাহারা চিরকাল তরে এদেশবাসীর মনে, মহাক্ষতিকর বিষাক্ত বীজ বুনে যাবে সেই সনে।
টীকা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয় ১৯৪৫ সালে, আর ভারত উপমহাদেশ থেকে নাসারা তথা ইংরেজ খ্রিস্টানরা চলে যায় ১৯৪৭ -এ।
এ প্যারার দ্বিতীয় অংশের ব্যাখ্যা দুই রকম আছে। তথা
ক) এ অঞ্চলে বিভেদ তৈরীর জন্য ইংরেজ খ্রিস্টানরা কাশ্মীরকে হিন্দুদের দিয়ে প্যাচ বাধিয়ে যায়।
খ) ইংরেজরা চলে গেলেও তাদের সংস্কৃতি এমনভাবে রেখে গেছে যে এ উপমহাদেশের লোকজন এখনও সব যায়গায় ব্রিটিশ নিয়ম-কানুন, ভাষা-সংস্কৃতি অনুসরণ করে।

(প্যারা: ২২) ভারত ভাঙ্গিয়া হইবে দু’ভাগ শঠতায় নেতাদের, মহাদুর্ভোগ দুর্দশা হবে দু’দেশেরি মানুষের।
টীকা: দেশভাগের সময় মুসলমানরা আরো অনেক বেশি এলাকা পেত। কিন্তু সেই সময় অনেক মুসলমান নেতার গাদ্দারির কারণে অনেক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা হিন্দুদের অধীনে চলে যায়। ফলে কষ্টে পড়ে সাধারণ মুসলমানরা। এখনও ভারতের মুসলমানরা সেই গাদ্দারির ফল ভোগ করছে।
(প্যারা: ২৩) মুকুটবিহীন নাদান বাদশা পাইবে শাসনভার, কানুন ও তার ফরমান হবে আজেবাজে একছার।
টীকা: এ প্যারা থেকে ভারত বিভাগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ধরা যায়। এই সময় এই অঞ্চলে মুসলমানদের ঝাণ্ডাবাহী কোনো সরকার আসেনি। মুকুটবিহীন নাদান বাদশাহ বলতে অনেকে ‘গণতন্ত্র’কে বুঝিয়েছে। আব্রাহাম লিংকনের তৈরী গণতন্ত্রকে জনগণের তন্ত্র বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা হচ্ছে জন-নিপীড়নের তন্ত্র। এ গণতন্ত্রের নিয়ম কানুন যে আজেবাজে সে সম্পর্কে শেষ লাইনে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
(প্যারা: ২৪) দুর্নীতি ঘুষ, কাজে অবহেলা নীতিহীনতার ফলে; শাহী ফর্মান হবে পয়মাল দেশ যাবে রসাতলে।
টীকা: সমসাময়িক দুর্নীতি বুঝানো হয়েছে।

 

(প্যারা: ২৫) হায় আফসোস করিবেন যত আলেম ও জ্ঞানীগণ, মূর্খ বেকুফ নাদান লোকেরা করিবে আস্ফালন।
(প্যারা: ২৬) পেয়ারা নবীর উম্মতগণ ভুলিবে আপন শান, ঘোরতর পাপ পঙ্গিলতায় ডুবিবে মুসলমান।
(প্যারা: ২৭) কালের চক্রে স্নেহ-তমীজের ঘটিবে যে অবসান, লুণ্ঠিত হবে মানী লোকদের ইজ্জত ও সম্মান।
(প্যারা: ২৮) উঠিয়া যাইবে বাছ ও বিচার হালাল ও হারামের, লজ্জা রবে না, লুণ্ঠিত হবে ইজ্জত নারীদের।

(প্যারা: ২৯) পশুর চে অধম হইবে তাহারা ভাই-বোনে আর মা-বেটায়, জেনা ব্যাভিচারে হইবে লিপ্ত পিতা আর কন্যায়।
(প্যারা: ৩০) নগ্নতা আর অশ্লীলতায় ভরে যাবে সব গৃহ, নারীরা উপরে সেজে রবে সতী ভেতরে বেচিবে দেহ।
(প্যারা: ৩১) উপরে সাধুর লেবাস ভেতরে পাপের বেসাতি পুরা, নারী দেহ নিয়ে চালাবে ব্যবসা ইবলিস বন্ধুরা।
(প্যারা: ৩২) নামায ও রোজা, হজ্জ্ব যাকাতের কমে যাবে আগ্রহ, ধর্মের কাজ মনে হবে বোঝা দারুন দুর্বিষহ।

(প্যারা: ৩৩) কলিজার খুন পান করে বলি শোন হে বৎসগণ, খোদার ওয়াস্তে ভুলে যাও সব নাসারার আচরণ।
(প্যারা: ৩৪) পশ্চিমা ঐ অশ্লীলতা ও নগ্নতা বেহায়ামি ডোবাবে তোদের, খোদার কঠোর গজব আসিবে নামি।
(প্যারা: ৩৫) ধ্বংস নিহত হবে মুসলিম বিধর্মীদের হাতে, হবে নাজেহাল ছেড়ে যাবে দেশ ভাসিবে রক্তপাতে।
(প্যারা: ৩৬) মুসলমানের জান-মাল হবে খেলনা- মুল্যহত, রক্ত তাদের প্রবাহিত হবে সাগর রােতর মত।

টীকা: হাদীস শরীফে আছে: পাঁচটি কারণে পাঁচটি জিনিস হয়।
“১) যদি যাকাত না দেয়া হয়, তবে অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি দেখা দেয়;
২) যদি মাপে কম দেয়া হয়, তবে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়,
৩) যদি বেপর্দা-বেহায়াপনা বেড়ে যায়, তবে দুরারোগ্য ব্যাধি দেখা দেয়,
৪) যদি একেক জন একেক রকম ফতওয়া দেয়, তবে মতবিরোধ দেখা দেয়, আর
৫) যদি মুসলমানরা আল্লাহ তায়ালার সাথে যে ওয়াদা করেছিল, সেই ওয়াদা থেকে দূরে সরে যায় (অর্থ্যাৎ কোরআন হাদীস থেকে দূরে সরে কাফেরদের আমল করে) তবে তাদের উপর গজব স্বরূপ বিদেশী শত্রু চাপিয়ে দেয়া হয়।”

(প্যারা: ৩৭) এরপর যাবে ভেগে নারকীরা পাঞ্জাব কেন্দ্রের, ধন সম্পদ আসিবে তাদের দখলে মুমিনদের।
টীকা: এখানে পাঞ্জাব কেন্দ্রের বলতে কাশ্মীর মনে করা হয়।
(প্যারা: ৩৮) অনুরূপ হবে পতন একটি শহর মুমিনদের, তাহাদের ধনসম্পদ যাবে দখলে হিন্দুদের।
টীকা: ১৯৪৮ সালে মুসলিম সুলতান নিজামের অধীনস্ত হায়দারাবাদ শহরটি দখল করে নেয় হিন্দুরা। সে সময় প্রায় ২ লক্ষ মুসলমানকে শহীদ করে মুশরিক হিন্দুরা। ১ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠন করে। হাজার হাজার মসজিদ বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। শুধু নিজামের প্রাসাদ থেকে নিয়ে যায় ৪ ট্রাক সোনা গহনা।

(প্যারা: ৩৯) হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ সেখানে চালাইবে তারা ভারি, ঘরে ঘরে হবে ঘোর কারবালা ক্রন্দন আহাজারি।
(প্যারা: ৪০) মুসলিম নেতা-অথচ বন্ধু কাফেরের, তলে তলে মদদ করিবে তাদের সে এক পাপ চুক্তির ছলে।
টীকা: বর্তমান সময়ে এ উপমহাদেশে এ ধরনের নেতার অভাব নেই। যারা উপর দিয়ে মুসলমানদের নেতা সেজে থাকে, কিন্তু ভেতর দিয়ে কাফিরদের এক নম্বর দালাল। সমগ্র দুনিয়ায় এর যথেষ্ট উদাহরণ আছে।
(প্যারা: ৪১) প্রথম অক্ষরেখায় থাকিবে শীনে’র অবস্থান পঞ্চাশতম অক্ষে থাকিবে নূন’ও বিরাজমান। ঘটিবে তখন এসব ঘটনা মাঝখানে দু’ঈদের; ধিক্কার দিবে বিশ্বের লোক জালিম হিন্দুদের।
টীকা: বর্তমানে এ সময়টি চলে এসেছে। এতদিন জালিমরা মুসলিম নির্যাতনের ঘটনাগুলো লুকিয়ে রাখত। কিন্তু এখন আর লুকানো সম্ভব হচ্ছে না। প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে। এখন সবাই এ জালিমদের জঘণ্য অপকর্মের জন্য তাদের ধিক্কার দিচ্ছে।

(প্যারা: ৪২) মহরম মাসে হাতিয়ার হাতে পাইবে মুমিনগণ, ঝঞ্জাবেগে করিবে তাহারা পাল্টা আক্রমণ।
(প্যারা: ৪৩) সৃষ্টি হইবে ভারত ব্যাপীয়া প্রচণ্ড আলোড়ন। ‘উসমান’ এসে নিবে জেহাদের বজ্র কঠিন পণ।
(প্যারা: ৪৪) ‘সাহেবে কিরান-‘হাবীবুল্লাহ’ হাতে নিয়ে শমসের, খোদায়ী মদদে ঝাপিয়ে পড়িবে ময়দানে যুদ্ধে।
টীকা: এখানে মুসলমানদের সেনাপতির কথা বলা হয়েছে। যিনি হবেন ‘সাহেবে কিরান’ বা ‘সৌভাগ্যবান’। সেই মহান সেনাপতির নাম বা উপাধি হবে ‘হাবীবুল্লাহ’।
(প্যারা: ৪৫) কাপিবে মেদিনী সীমান্ত বীর গাজীদের পদভারে, ভারতের প্রাণে আগাইবে তারা মহারণ হুঙ্কারে।
টীকা: আক্রমণকারীরা উপমহাদেশের অন্যায় দখলকৃত এলাকার বাইরে থাকবে এবং অন্যায় দখলকৃত এলাকা দখল করতে হুঙ্কার দিয়ে এগিয়ে যাবে।

(প্যারা-৪৬) পঙ্গপালের মত ধেয়ে এসে এসব ‘গাজীয়েদ্বীন’ যুদ্ধে, ছিনিয়া বিজয় ঝাণ্ডা করিবেন উড্ডিন। (প্যারা-৪৭) মিলে এক সাথে দক্ষিণী ফৌজ ইরানী ও আফগান, বিজয় করিয়া কবজায় পুরা আনিবে হিন্দুস্তান।
(প্যারা-৪৮) বরবাদ করে দেয়া হবে দ্বীন ঈমানের দুশমন, অঝোর ধারায় হবে আল্লাহ’র রহমত বরিষান।
(প্যারা-৪৯) দ্বীনের বৈরী আছিল শুরুতে ছয় হরফেতে নাম, প্রথম হরফ গাফ সে কবুল করিবে দ্বীন ইসলাম।
টীকা: ছয় অক্ষর বিশিষ্ট একটি নাম, যার প্রথম অক্ষরটি হবে ‘গাফ’ এমন এক হিন্দু বণিক ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম পক্ষে যোগদান করবেন। তিনি কে তা এখনো বুঝা যাচ্ছে না।

(প্যারা-৫০) আল্লা’র খাস রহমতে হবে মুমিনেরা খোশ দিল, হিন্দু রসুম-রেওয়াজ এ ভুমে থাকিবে না এক তিল।
(প্যারা-৫১) ভারতের মত পশ্চিমাদেরও ঘটিবে বিপর্যয়, তৃতীয় বিশ্ব সমর সেখানে ঘটাইবে মহালয়।
(প্যারা-৫২) এ রণে হবে ‘আলিফ’ এরূপ পয়মাল মিসমার মুছে যাবে দেশ, ইতিহাসে শুধু নামটি থাকিবে তার।
টীকা: এ যুদ্ধের কারণে আলিফ = আমেরিকা এরূপ ধ্বংস হবে যে, ইতিহাসে শুধু তার নাম থাকবে, কিন্তু বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
(প্যারা-৫৩) যত অপরাধ তিল তিল করে জমেছে খাতায়, তার শাস্তি উহার ভুগতেই হবে নাই নাই নিস্তার; কুদরতী হাতে কঠিন দণ্ড দেয়া হবে তাহাদের, ধরা বুকে শির তুলিয়া নাসারা দাড়াবে না কবু ফের।

(প্যারা-৫৪) যেই বেঈমান দুনিয়া ধ্বংস করিল আপন কামে, নিপাতিত শেষকালে সে নিজেই জাহান্নামে।

(প্যারা-৫৫) রহস্যভেদী যে রতন হার গাথিলাম আমি, তা যে গায়েবী মদদ লভিতে আসিবে উস্তাদসম কাজে।
(প্যারা-৫৬) অতিসত্বর যদি আল্লা’র মদদ পাইতে চাও, তাহার হুকুম তা’মিলের কাজে নিজেকে বিলিয়ে দাও।
টীকাঃ বর্তমানে সমস্ত ফিতনা হতে হিফাজত হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে সমস্ত হারাম কাজ থেকে খাস তওবা করা। সেটা হারাম আমল হোক কিংবা কাফের মুশরিক প্রণীত বিভিন্ন নিয়ম কানুন হোক।
(প্যারা-৫৭) ‘কানা জাহুকার’ প্রকাশ ঘটার সালেই প্রতিশ্রুত ইমাম মাহাদি দুনিয়ার বুকে হবেন আবির্ভূত ।
টীকাঃ ‘কানা জাহুকার’ সূরা বনী ইসরাইলের ৮১ নং আয়াতের শেষ অংশ। যার অর্থ মিথ্যার বিনাশ অনিবার্য। পূর্ব আয়াতটির অর্থ ‘সত্য সমাগত মিথ্যা বিলুপ্ত’। যখন মিথ্যার বিনাশ কাল উপস্থিত হবে তখন উপযুক্ত সময়েই আবির্ভূত হবেন ‘মাহদী’ বা ‘পথ প্রদর্শক’। উনার আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে চলমান বাতিল ধ্বংস হবে।

(প্যারা-৫৮) চুপ হয়ে যাও ওহে নেয়ামত! এগিও না মোটে আর। ফাঁস করিও না খোদার গায়বী রহস্য আসরার; এ কাসিদা বলা করিলাম শেষ ‘কুনুত কানযাল সাল’ ।
টীকাঃ ‘কুনুত কানযাল সাল’ অর্থাৎ হিজরি সন ৫৪৮ সাল মোতাবেক ১১৫৮ সাল হচ্ছে এ কাসিদার রচনা কাল। এটা আরবি হরফের নাম অনুযায়ী সাংকেতিক হিসাব।
আরবী হরফের নাম অনুযায়ী কাফ = ২০, নুন = ৫০, তা = ৪০০, কাফ = ২০, যা = ৭, আলিফ = ১। সর্বমোট = ৫৪৮।