ঢাকা ০২:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একজনের বেয়াদবির কারণে একটি গোত্রের সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে

  • আপডেট সময় : ১১:০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ২৫৪৯ বার পড়া হয়েছে

একজনের বেয়াদবির কারণে একটি গোত্রের সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে sufibad 24 com

Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব ‘আশরাফুল মাখলুকাত’। এই মানুষকে হেদায়েতের জন্য, ‘সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে আনয়নের জন্য আল্লাহতায়ালা যুগে যুগে ১লক্ষ চব্বিশ হাজার পয়গম্বর মন্তান্তরে ২লক্ষ চব্বিশ হাজার পয়গম্বর (আঃ) দুনিয়ার বুকে প্রেরন করেন। আখেরী নবী (সাঃ) এঁর পর দুনিয়াতে লক্ষ লক্ষ আউলিয়া কেরাম মানুষকে হেদায়েতের পথে আহবান করেন। কিন্তু মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ প্রানী।

নবী (আঃ) গনকে আঘাত করতে, অপবাদ দিতেও মানুষ দ্বিধা বোধ করে নাই। যখন আউলিয়াকেরামগণ হেদায়তের পথে মানুষকে আহবান করলো তখন ওলামে’ছু, মোনাফেকগণ তিঁনাদের উপর অতিমাত্রায় অত্যাচার, অপবাদ, অপপ্রচার করে। হযরত আব্দুল কাদের জেলানী (রাঃ) ছাহেব কে ঐ যুগের ওলামায়ে’ছু কাফের পযর্ন্ত ফতোয়া দান করে। আমার পীর কেবলাজান সত্য তরিকা প্রচারের প্রথমদিকে তৎকালীন সময়ের ওলামায়ে ছু’গণ তরিকা প্রচারে ব্যাপকভাবে বাধা প্রদান করে ছিলো। কিন্তু আল্লাহপাক হাদিসে কুদসীতে ফরমান, “যারা আমার বন্ধুর সাথে দুশমনি করে আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করি।”

যারা এ বেয়াদবি মূলক কাজ গুলো করে তারা সংখ্যায় বেশি না। কিন্তু তাদের বেয়াদবির ফল একটা জাতীকে/গোষ্ঠিকে/গোত্রকে ভোগ করতে হয়।
এই সম্পর্কে হযরত পীর কেবলাজান ফরমান, “বেয়াদব তাহার বেয়াদবীর কারনে যে একাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়, তাহা নয়। একজনের বেয়াদবীর কারনে এমনকি একটি গোত্রের সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এমন বহু নজীর কুরআন হাদীছে বর্তমান।” (পবিত্র নসিহত শরীফ, ১/১৩)
একজনের বেয়াদবীর কারনে একটি গোত্রের সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ হয় তার একটি জ্বলন্ত উদাহরন হুজুর কেবলাজানের পবিত্র নসিহত শরীফ থেকে হুবহু তুলে ধরলাম।

“একদা হযরত মুসা (আঃ) কে তদীয় উম্মতকুলসহ সাইনা উপত্যকার মরুপ্রান্তরে দীর্ঘ দিন বাস করিতে হইয়াছিল। সেখানে খাদ্য দ্রব্যের প্রচন্ড অভাব ছিল। ফসলাদি উৎপন্নের কোন ব্যবস্থা ছিল না। আল্লাহপাক হযরত মুসা (আঃ) এর খাতিরে তাহাদের প্রতি আসমান হইতে মিষ্টি হালুয়া জাতীয় এক প্রকার সুখাদ্য এবং বটের পাখীর গোশত প্রেরণের ব্যবস্থা করিলেন। ফলে বিনা পরিশ্রমে তাহারা আসমানী খাদ্য পাইতে ছিল। কিন্তু কতিপয় উম্মত বেয়াদবী করিল। তাহারা আল্লাহর নেয়ামত তথা আসমানী খাদ্যের প্রতি অবজ্ঞা করিয়া বলিলঃ আমরা রসুন, পেয়াজ, ডাল ইত্যাদি চাই অর্থাৎ মাটি হইতে উৎপন্ন ফসলাদি চাই। এই বেয়াদবীর কারনে আসমান হইতে খাদ্য আসা বন্ধ হইল। পুরা গোত্রই আসমানী খাদ্য হইতে বঞ্চিত হইল এবং তাহাদের উপর চাষাবাদ করিয়া ফসল উৎপাদনের কষ্টের বোঝা অর্পিত হইল” (পবিত্র নসিহত শরীফ, ১/১৩-১৪)।

হযরত পীর কেবলাজান ছাহেব ঐ সকল বেয়াদবদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারী দিয়ে বললেন, ” পীরকে কষ্ট প্রদানের মধ্যেই মুরিদের বিপদ। ইহা ব্যতীত অন্য যে কোন ভুল-ত্রুটি হউক না কেন, তাহার প্রতিকার ও ক্ষতিপূরন করা সম্ভব কিন্তু পীরকে ব্যথা দেওয়ার কোন প্রতিকার নাই। পীরের অসন্তুষ্টিই মুরীদের দুর্ভাগ্যের কারন।”

আমরা হরহামেশই পীর কেবলাজানের গাররায়ত করে থাকি। আমাদের বোধদয় হওয়া উচিত। আমরা বা আমাদের আচরণ যেন তিনাদের রাগের কারন না হয়। তিনারা কষ্ট পেলে আল্লাহপাক কষ্ট পান। তিনাদের রাগ হওয়া আমাদের জন্য কখনই ভালো কিছু বয়ে আনবে না। তাই যারা অতিরিক্ত কিছু করেন আপনাদের নিকট আমরা পানাহ চাই। এমনিতেই মুসবিতের যামানায় বসবাস করি।

 

লেখকঃ সুজন শাহজী 

আরো পড়ুনঃ

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

একজনের বেয়াদবির কারণে একটি গোত্রের সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে

আপডেট সময় : ১১:০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব ‘আশরাফুল মাখলুকাত’। এই মানুষকে হেদায়েতের জন্য, ‘সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে আনয়নের জন্য আল্লাহতায়ালা যুগে যুগে ১লক্ষ চব্বিশ হাজার পয়গম্বর মন্তান্তরে ২লক্ষ চব্বিশ হাজার পয়গম্বর (আঃ) দুনিয়ার বুকে প্রেরন করেন। আখেরী নবী (সাঃ) এঁর পর দুনিয়াতে লক্ষ লক্ষ আউলিয়া কেরাম মানুষকে হেদায়েতের পথে আহবান করেন। কিন্তু মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ প্রানী।

নবী (আঃ) গনকে আঘাত করতে, অপবাদ দিতেও মানুষ দ্বিধা বোধ করে নাই। যখন আউলিয়াকেরামগণ হেদায়তের পথে মানুষকে আহবান করলো তখন ওলামে’ছু, মোনাফেকগণ তিঁনাদের উপর অতিমাত্রায় অত্যাচার, অপবাদ, অপপ্রচার করে। হযরত আব্দুল কাদের জেলানী (রাঃ) ছাহেব কে ঐ যুগের ওলামায়ে’ছু কাফের পযর্ন্ত ফতোয়া দান করে। আমার পীর কেবলাজান সত্য তরিকা প্রচারের প্রথমদিকে তৎকালীন সময়ের ওলামায়ে ছু’গণ তরিকা প্রচারে ব্যাপকভাবে বাধা প্রদান করে ছিলো। কিন্তু আল্লাহপাক হাদিসে কুদসীতে ফরমান, “যারা আমার বন্ধুর সাথে দুশমনি করে আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করি।”

যারা এ বেয়াদবি মূলক কাজ গুলো করে তারা সংখ্যায় বেশি না। কিন্তু তাদের বেয়াদবির ফল একটা জাতীকে/গোষ্ঠিকে/গোত্রকে ভোগ করতে হয়।
এই সম্পর্কে হযরত পীর কেবলাজান ফরমান, “বেয়াদব তাহার বেয়াদবীর কারনে যে একাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়, তাহা নয়। একজনের বেয়াদবীর কারনে এমনকি একটি গোত্রের সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এমন বহু নজীর কুরআন হাদীছে বর্তমান।” (পবিত্র নসিহত শরীফ, ১/১৩)
একজনের বেয়াদবীর কারনে একটি গোত্রের সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ হয় তার একটি জ্বলন্ত উদাহরন হুজুর কেবলাজানের পবিত্র নসিহত শরীফ থেকে হুবহু তুলে ধরলাম।

“একদা হযরত মুসা (আঃ) কে তদীয় উম্মতকুলসহ সাইনা উপত্যকার মরুপ্রান্তরে দীর্ঘ দিন বাস করিতে হইয়াছিল। সেখানে খাদ্য দ্রব্যের প্রচন্ড অভাব ছিল। ফসলাদি উৎপন্নের কোন ব্যবস্থা ছিল না। আল্লাহপাক হযরত মুসা (আঃ) এর খাতিরে তাহাদের প্রতি আসমান হইতে মিষ্টি হালুয়া জাতীয় এক প্রকার সুখাদ্য এবং বটের পাখীর গোশত প্রেরণের ব্যবস্থা করিলেন। ফলে বিনা পরিশ্রমে তাহারা আসমানী খাদ্য পাইতে ছিল। কিন্তু কতিপয় উম্মত বেয়াদবী করিল। তাহারা আল্লাহর নেয়ামত তথা আসমানী খাদ্যের প্রতি অবজ্ঞা করিয়া বলিলঃ আমরা রসুন, পেয়াজ, ডাল ইত্যাদি চাই অর্থাৎ মাটি হইতে উৎপন্ন ফসলাদি চাই। এই বেয়াদবীর কারনে আসমান হইতে খাদ্য আসা বন্ধ হইল। পুরা গোত্রই আসমানী খাদ্য হইতে বঞ্চিত হইল এবং তাহাদের উপর চাষাবাদ করিয়া ফসল উৎপাদনের কষ্টের বোঝা অর্পিত হইল” (পবিত্র নসিহত শরীফ, ১/১৩-১৪)।

হযরত পীর কেবলাজান ছাহেব ঐ সকল বেয়াদবদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারী দিয়ে বললেন, ” পীরকে কষ্ট প্রদানের মধ্যেই মুরিদের বিপদ। ইহা ব্যতীত অন্য যে কোন ভুল-ত্রুটি হউক না কেন, তাহার প্রতিকার ও ক্ষতিপূরন করা সম্ভব কিন্তু পীরকে ব্যথা দেওয়ার কোন প্রতিকার নাই। পীরের অসন্তুষ্টিই মুরীদের দুর্ভাগ্যের কারন।”

আমরা হরহামেশই পীর কেবলাজানের গাররায়ত করে থাকি। আমাদের বোধদয় হওয়া উচিত। আমরা বা আমাদের আচরণ যেন তিনাদের রাগের কারন না হয়। তিনারা কষ্ট পেলে আল্লাহপাক কষ্ট পান। তিনাদের রাগ হওয়া আমাদের জন্য কখনই ভালো কিছু বয়ে আনবে না। তাই যারা অতিরিক্ত কিছু করেন আপনাদের নিকট আমরা পানাহ চাই। এমনিতেই মুসবিতের যামানায় বসবাস করি।

 

লেখকঃ সুজন শাহজী 

আরো পড়ুনঃ