ঢাকা ০৫:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আটরশিতে মহা পবিত্র বিশ্ব উরশ শরীফ ২৪ইং

  • আপডেট সময় : ০২:৩২:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ২৪৪০ বার পড়া হয়েছে
Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পৃথিবীর মানচিত্রে ছোট একটি দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ৮৬ হাজার গ্রামের একটি গ্রাম আটরশি। রাজধানী থেকে দূরত্ব প্রায় ১০০ কিঃমিঃ।
এই আটরশি ই আজ সূফী বাদের আধ্যাত্নিক রাজধানী, আশেকের ঠিকানা, জাকেরের আশ্রয়স্থল।
বহু দশক আগের কথা। সভ্যতা ও আধুনিক জীবন যাত্রার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বন্ঞ্চিত অজপাড়া গাঁয়ে পদাপর্ন করলেন নায়েব রাসূল, যামানার নূর, আখেরী মুর্শেদ বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআ) পীর কেবলাজান ছাহেব।

একটি ছোট কুঁড়েঘর স্থাপনের মাধ্যমে শুরু জাকের ক্যাম্প যা আজকে মহাসমুদ্র আকারে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল নামে সারা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচিত।
পীর কেবলাজান যখন প্রথম আটরশিতে আসেন সে সম্পর্কে তিঁনি পাক জবানে ফরমান, ” আমি যখন এখানে আসি তখন এখানকার মানুষ ইসলামকে বুঝতে না। তারা ঈদের দিনে হাল নিয়ে মাঠে যেত। যখন হিন্দুদের পূজো হতো তখন গোসল করে মিষ্টি খেয়ে পূজোয় যেত। গোমাংসকে সবাই অস্পৃশ্য মনে করত। গরু জবেহ হলে তার কাছাকাছি এমনকি গ্রামে সে গ্রামে যেতো না।

প্রথম যেদিন আসি, তখন ছিল ঈদের দিন। সংগে ছিলেন মুহসিন উদ্দিন খান। কিন্তু ঈদের জামাত ছিলনা। তাছাড়া হিন্দু জমিদারের প্রভাব ছিলো খুব বেশি। সবাই হিন্দুয়ানী চালে চলতো। হিন্দুদের নীতি এরা ভালবাসতো, মুসলমানদের নীতি এদের সম্পূর্ন অজানা ছিল।
তারপর ধীরে ধীরে ধর্ম প্রচারের কাজ শুরু করি। একজন দুজন করে ডেকে আনতাম। আবার ভয় ও হতো। ওরা এমনভাবে চলাফেরা করতো, দেখলে মনে হতো গুন্ডা-পান্ডা।

আর সবচেয়ে নিম্নস্তরের ছিলো এই আটরশি গ্রাম, সবচেয়ে কুখ্যাত গ্রাম হিসাবে পরিচিত ছিলো। বোধ হয় বাংলাদেশের এমন নিম্নস্তরের গ্রাম ছিল না। এখানে কোনো ধনী, জ্ঞানী, মানী লোক ছিলো না। সন্ধ্যে হলেই এরা যা ইচ্ছে করতে পারত। আস্তে আস্তে আমি তাদের পরিবর্তন করি।”
কিন্তু আজ পৃথিবীর মধ্যে বিখ্যাত গ্রাম আটরশি। আজ জ্ঞানী-গুনী, শিক্ষিত সমাজ, আমলা-মন্ত্রী, বড় বড় আন্তজার্তিক পত্রিকার সাংবাদিক থেকে শুরু করে কৃষক, মজুর, শ্রমিক সবার আজ তীর্থ এই আটরশি।

“রোগ, জরা, দুঃখ-দারিদ্র, অভাব-অনটন বিপযর্স্ত ও হতাশাগ্রস্ত মানুষ তাঁর কাছে শান্তি ও আশ্বাসের আসায় ছুটে যাচ্ছে দলে দলে, বিশ্ব জাকের মঞ্জিল আজ এক তীর্থক্ষেত্র, মানব সম্মিলনের এক পবিত্র ভূমি।”
-সম্পাদকীয় “বিপ্লব”-২-৩-১৯৮৩

এখানে মানুষ আসে শান্তির খোঁজে। আসে আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) কে পাওয়ার উদ্দেশ্যে। ইহকাল পরকালের মুক্তির আশায় দলে দলে মানুষ আসে।
লাখ লাখ নারী পুরুষ শিশু, মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান অভ্যাগত অতিথীদের বিস্রামের ব্যবস্থা, জরুরী চিকিৎসা, নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। সে সাথে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মেহমানধারী করা হয় আমার পীর কেবলাজানের দরবারে।

আটরশির মাটিতে পা দেবার সাথে সাথে এক অনাবিল শান্তি অনুভুত হয়। দখিনা বাতাস যেনো দোলা দেয় প্রানে। নাড়িতে নাড়িতে জাগে স্পন্দন।
আটরশি যেনো সম্পূর্ন স্বতন্ত্র পৃথিবী। এখানে নেই হিংসা, নেই দ্বেষ। নেই পাপ, নেই পংকিলতা। সবাই পরস্পরের ভাই। সবার মুখে তৌহিদের বানী। চোখে রাসূল (সাঃ) মহব্বতের পানি।

রাত তিনটা থেকে শুরু হয় কর্মকান্ড। পীর কেবলাজান বলতেন, “হে তামাম দুনিয়ার মুসলমান সকল! অমূল্য জীবন স্বপ্নের মত চলিয়া যাইতেছে। হুশিয়ার হও, নিশির শেষ ভাগে আল্লাহতায়ালাকে ‘ইয়া আল্লাহু, ইয়া রাহমানু, ইয়া রাহীম’ এই তিন নাম ধরিয়া ডাক। তবেই কল্যান-সন্দেহ নাই।”
প্রতি ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা হয়। নামাজান্তে তরিকতের বিভিন্ন ওজিফা আদায় করা হয়।
বিশেষ বিশেষ সময়ে দাড়িঁয়ে দাড়িঁয়ে দয়াল নবী (সাঃ)র কদম পাকে সালাম জানানো হয়।

দয়াল নবী (সাঃ) এঁর মহব্বতে চোখের পানি ফেলার শিক্ষাদান আমার পীর কেবলাজানের অন্যতম কারামত।
তিনি পন্ডিতের পন্ডিত।
বিজ্ঞানীর বিজ্ঞানী।
তাত্ত্বিকের তাত্ত্বিক।
জ্ঞানের তিনি ভান্ডার।
তিনি এক মহাবিশ্বকোষ।

তিনি ই আমার প্রানের মুর্শিদ বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের মহান প্রতিষ্ঠাতা বিশ্ব ওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব।
এই মহান মুর্শেদের মহা পবিত্র বিশ্ব উরস শরীফ আগামী ১৭,১৮,১৯ ও ২০ই ফেব্রুয়ারী’২০২৪ রোজঃ শনি, রবি, সোম ও মঙ্গল বার মহা ধুমধামে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল পাক দরবার শরীফে অনুষ্ঠিত হবে।

উরস শরীফ চলাকালে হযরত পীর কেবলাজানের স্থলাভিষিক্ত আলহাজ্ব হযরত খাজা মিয়া ভাইজান মুজাদেদ্দী ছাহেব এবং বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের মুখপাত্র হযরত খাজা বড় চাচাজান মুজাদ্দেদী ছাহেব আগত সকল জাকেরান-আশেকান ধর্ম প্রান মুমিন মুসলমানদের সাথে দফায় দফায় স্বাক্ষাত ও নসিহত দান করেন।

তাই যান্ত্রিক জীবনের বাহিরে গিয়ে একটু শান্তির পরশের খোঁজে মহা পবিত্র বিশ্ব উরস শরীফের দাওয়াত রইল।

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

Discover more from Sufibad.Com - সূফীবাদ.কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

আটরশিতে মহা পবিত্র বিশ্ব উরশ শরীফ ২৪ইং

আপডেট সময় : ০২:৩২:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৪

পৃথিবীর মানচিত্রে ছোট একটি দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ৮৬ হাজার গ্রামের একটি গ্রাম আটরশি। রাজধানী থেকে দূরত্ব প্রায় ১০০ কিঃমিঃ।
এই আটরশি ই আজ সূফী বাদের আধ্যাত্নিক রাজধানী, আশেকের ঠিকানা, জাকেরের আশ্রয়স্থল।
বহু দশক আগের কথা। সভ্যতা ও আধুনিক জীবন যাত্রার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বন্ঞ্চিত অজপাড়া গাঁয়ে পদাপর্ন করলেন নায়েব রাসূল, যামানার নূর, আখেরী মুর্শেদ বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআ) পীর কেবলাজান ছাহেব।

একটি ছোট কুঁড়েঘর স্থাপনের মাধ্যমে শুরু জাকের ক্যাম্প যা আজকে মহাসমুদ্র আকারে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল নামে সারা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচিত।
পীর কেবলাজান যখন প্রথম আটরশিতে আসেন সে সম্পর্কে তিঁনি পাক জবানে ফরমান, ” আমি যখন এখানে আসি তখন এখানকার মানুষ ইসলামকে বুঝতে না। তারা ঈদের দিনে হাল নিয়ে মাঠে যেত। যখন হিন্দুদের পূজো হতো তখন গোসল করে মিষ্টি খেয়ে পূজোয় যেত। গোমাংসকে সবাই অস্পৃশ্য মনে করত। গরু জবেহ হলে তার কাছাকাছি এমনকি গ্রামে সে গ্রামে যেতো না।

প্রথম যেদিন আসি, তখন ছিল ঈদের দিন। সংগে ছিলেন মুহসিন উদ্দিন খান। কিন্তু ঈদের জামাত ছিলনা। তাছাড়া হিন্দু জমিদারের প্রভাব ছিলো খুব বেশি। সবাই হিন্দুয়ানী চালে চলতো। হিন্দুদের নীতি এরা ভালবাসতো, মুসলমানদের নীতি এদের সম্পূর্ন অজানা ছিল।
তারপর ধীরে ধীরে ধর্ম প্রচারের কাজ শুরু করি। একজন দুজন করে ডেকে আনতাম। আবার ভয় ও হতো। ওরা এমনভাবে চলাফেরা করতো, দেখলে মনে হতো গুন্ডা-পান্ডা।

আর সবচেয়ে নিম্নস্তরের ছিলো এই আটরশি গ্রাম, সবচেয়ে কুখ্যাত গ্রাম হিসাবে পরিচিত ছিলো। বোধ হয় বাংলাদেশের এমন নিম্নস্তরের গ্রাম ছিল না। এখানে কোনো ধনী, জ্ঞানী, মানী লোক ছিলো না। সন্ধ্যে হলেই এরা যা ইচ্ছে করতে পারত। আস্তে আস্তে আমি তাদের পরিবর্তন করি।”
কিন্তু আজ পৃথিবীর মধ্যে বিখ্যাত গ্রাম আটরশি। আজ জ্ঞানী-গুনী, শিক্ষিত সমাজ, আমলা-মন্ত্রী, বড় বড় আন্তজার্তিক পত্রিকার সাংবাদিক থেকে শুরু করে কৃষক, মজুর, শ্রমিক সবার আজ তীর্থ এই আটরশি।

“রোগ, জরা, দুঃখ-দারিদ্র, অভাব-অনটন বিপযর্স্ত ও হতাশাগ্রস্ত মানুষ তাঁর কাছে শান্তি ও আশ্বাসের আসায় ছুটে যাচ্ছে দলে দলে, বিশ্ব জাকের মঞ্জিল আজ এক তীর্থক্ষেত্র, মানব সম্মিলনের এক পবিত্র ভূমি।”
-সম্পাদকীয় “বিপ্লব”-২-৩-১৯৮৩

এখানে মানুষ আসে শান্তির খোঁজে। আসে আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) কে পাওয়ার উদ্দেশ্যে। ইহকাল পরকালের মুক্তির আশায় দলে দলে মানুষ আসে।
লাখ লাখ নারী পুরুষ শিশু, মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান অভ্যাগত অতিথীদের বিস্রামের ব্যবস্থা, জরুরী চিকিৎসা, নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। সে সাথে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মেহমানধারী করা হয় আমার পীর কেবলাজানের দরবারে।

আটরশির মাটিতে পা দেবার সাথে সাথে এক অনাবিল শান্তি অনুভুত হয়। দখিনা বাতাস যেনো দোলা দেয় প্রানে। নাড়িতে নাড়িতে জাগে স্পন্দন।
আটরশি যেনো সম্পূর্ন স্বতন্ত্র পৃথিবী। এখানে নেই হিংসা, নেই দ্বেষ। নেই পাপ, নেই পংকিলতা। সবাই পরস্পরের ভাই। সবার মুখে তৌহিদের বানী। চোখে রাসূল (সাঃ) মহব্বতের পানি।

রাত তিনটা থেকে শুরু হয় কর্মকান্ড। পীর কেবলাজান বলতেন, “হে তামাম দুনিয়ার মুসলমান সকল! অমূল্য জীবন স্বপ্নের মত চলিয়া যাইতেছে। হুশিয়ার হও, নিশির শেষ ভাগে আল্লাহতায়ালাকে ‘ইয়া আল্লাহু, ইয়া রাহমানু, ইয়া রাহীম’ এই তিন নাম ধরিয়া ডাক। তবেই কল্যান-সন্দেহ নাই।”
প্রতি ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা হয়। নামাজান্তে তরিকতের বিভিন্ন ওজিফা আদায় করা হয়।
বিশেষ বিশেষ সময়ে দাড়িঁয়ে দাড়িঁয়ে দয়াল নবী (সাঃ)র কদম পাকে সালাম জানানো হয়।

দয়াল নবী (সাঃ) এঁর মহব্বতে চোখের পানি ফেলার শিক্ষাদান আমার পীর কেবলাজানের অন্যতম কারামত।
তিনি পন্ডিতের পন্ডিত।
বিজ্ঞানীর বিজ্ঞানী।
তাত্ত্বিকের তাত্ত্বিক।
জ্ঞানের তিনি ভান্ডার।
তিনি এক মহাবিশ্বকোষ।

তিনি ই আমার প্রানের মুর্শিদ বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের মহান প্রতিষ্ঠাতা বিশ্ব ওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব।
এই মহান মুর্শেদের মহা পবিত্র বিশ্ব উরস শরীফ আগামী ১৭,১৮,১৯ ও ২০ই ফেব্রুয়ারী’২০২৪ রোজঃ শনি, রবি, সোম ও মঙ্গল বার মহা ধুমধামে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল পাক দরবার শরীফে অনুষ্ঠিত হবে।

উরস শরীফ চলাকালে হযরত পীর কেবলাজানের স্থলাভিষিক্ত আলহাজ্ব হযরত খাজা মিয়া ভাইজান মুজাদেদ্দী ছাহেব এবং বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের মুখপাত্র হযরত খাজা বড় চাচাজান মুজাদ্দেদী ছাহেব আগত সকল জাকেরান-আশেকান ধর্ম প্রান মুমিন মুসলমানদের সাথে দফায় দফায় স্বাক্ষাত ও নসিহত দান করেন।

তাই যান্ত্রিক জীবনের বাহিরে গিয়ে একটু শান্তির পরশের খোঁজে মহা পবিত্র বিশ্ব উরস শরীফের দাওয়াত রইল।