ঢাকা ০৭:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইতিকাফের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

  • আপডেট সময় : ০১:৫১:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
  • / ২৪১১ বার পড়া হয়েছে
Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইতিকাফের সংজ্ঞা

‘ইতিকাফ’ শব্দটি আরবি, যার অর্থ হলো অবস্থান করা, নির্দিষ্ট জায়গায় একাগ্রচিত্তে স্থির থাকা। ইসলামী শরিয়তে ইতিকাফ বলতে মসজিদে বিশেষ কিছু সময় ইবাদতের উদ্দেশ্যে স্বেচ্ছায় অবস্থান করাকে বোঝানো হয়। সাধারণত রমজান মাসের শেষ দশ দিন ইতিকাফ পালন করা হয়, তবে তা অন্য সময়েও করা যায়।

 

ইতিকাফের বিধান ও প্রকারভেদ

ইতিকাফ প্রধানত তিন ধরনের:

১. ওয়াজিব ইতিকাফ: কেউ যদি কোনো মানত করে যে, সে ইতিকাফ করবে, তাহলে সেটি তার জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে যায়।

 

২. সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ইতিকাফ: এটি রমজানের শেষ দশকে পালন করা হয়, যা রাসুলুল্লাহ (সা.) জীবনের শেষ পর্যন্ত নিয়মিত পালন করেছেন।

 

৩. নফল ইতিকাফ: এটি যেকোনো সময় করা যায়, যেমন জুমার দিনে বা বিশেষ ইবাদতের নিয়তে।

 

ইতিকাফের গুরুত্ব ও ফজিলত

১. আল্লাহর নৈকট্য লাভ: ইতিকাফ পালনকারীরা আল্লাহর বিশেষ রহমত ও অনুগ্রহ লাভ করেন। এটি আত্মশুদ্ধির মাধ্যম।

২. লাইলাতুল কদর লাভের সুযোগ: রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করলে লাইলাতুল কদরের মতো মহিমান্বিত রাত পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

৩. গুনাহ মাফের সুযোগ: ইতিকাফের মাধ্যমে অতীতের গুনাহ মাফের সুযোগ পাওয়া যায়।

৪. দুনিয়ার ব্যস্ততা থেকে মুক্তি: ইতিকাফ পালনে দুনিয়ার নানা ব্যস্ততা ও পাপ থেকে দূরে থাকা যায় এবং ইবাদতে সম্পূর্ণ মনোযোগী হওয়া যায়।

৫. কিয়ামতের দিন ছায়া পাওয়া: হাদিসে এসেছে, আল্লাহ তায়ালা সাত শ্রেণির মানুষকে কিয়ামতের দিন আরশের ছায়া দান করবেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলো মসজিদের সঙ্গে মনোযোগী ব্যক্তি।

 

ইতিকাফ পালনের নিয়ম

ইতিকাফকারীকে মসজিদে অবস্থান করতে হবে এবং দুনিয়াবি কথা ও কাজ এড়িয়ে চলতে হবে।

 

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করা এবং কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার ও দোয়ার মাধ্যমে সময় কাটানো উচিত।

 

ইতিকাফ ভঙ্গ হয় এমন কাজ, যেমন স্ত্রী সহবাস বা মসজিদ থেকে অনাবশ্যক বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

 

 

আরো পড়ুন:“জাগ্রত পরাণ যার মরে না সে জন”— আধ্যাত্মিকতার চিরন্তন সত্য

 

ইতিকাফ আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের অন্যতম সেরা মাধ্যম। এটি মানুষকে দুনিয়ার ব্যস্ততা থেকে সরিয়ে এনে আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত ইতিকাফ পালনের গুরুত্ব অনুধাবন করা এবং সুযোগ পেলেই এই বরকতময় ইবাদত পালন করা।

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ইতিকাফের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

আপডেট সময় : ০১:৫১:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

ইতিকাফের সংজ্ঞা

‘ইতিকাফ’ শব্দটি আরবি, যার অর্থ হলো অবস্থান করা, নির্দিষ্ট জায়গায় একাগ্রচিত্তে স্থির থাকা। ইসলামী শরিয়তে ইতিকাফ বলতে মসজিদে বিশেষ কিছু সময় ইবাদতের উদ্দেশ্যে স্বেচ্ছায় অবস্থান করাকে বোঝানো হয়। সাধারণত রমজান মাসের শেষ দশ দিন ইতিকাফ পালন করা হয়, তবে তা অন্য সময়েও করা যায়।

 

ইতিকাফের বিধান ও প্রকারভেদ

ইতিকাফ প্রধানত তিন ধরনের:

১. ওয়াজিব ইতিকাফ: কেউ যদি কোনো মানত করে যে, সে ইতিকাফ করবে, তাহলে সেটি তার জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে যায়।

 

২. সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ইতিকাফ: এটি রমজানের শেষ দশকে পালন করা হয়, যা রাসুলুল্লাহ (সা.) জীবনের শেষ পর্যন্ত নিয়মিত পালন করেছেন।

 

৩. নফল ইতিকাফ: এটি যেকোনো সময় করা যায়, যেমন জুমার দিনে বা বিশেষ ইবাদতের নিয়তে।

 

ইতিকাফের গুরুত্ব ও ফজিলত

১. আল্লাহর নৈকট্য লাভ: ইতিকাফ পালনকারীরা আল্লাহর বিশেষ রহমত ও অনুগ্রহ লাভ করেন। এটি আত্মশুদ্ধির মাধ্যম।

২. লাইলাতুল কদর লাভের সুযোগ: রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করলে লাইলাতুল কদরের মতো মহিমান্বিত রাত পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

৩. গুনাহ মাফের সুযোগ: ইতিকাফের মাধ্যমে অতীতের গুনাহ মাফের সুযোগ পাওয়া যায়।

৪. দুনিয়ার ব্যস্ততা থেকে মুক্তি: ইতিকাফ পালনে দুনিয়ার নানা ব্যস্ততা ও পাপ থেকে দূরে থাকা যায় এবং ইবাদতে সম্পূর্ণ মনোযোগী হওয়া যায়।

৫. কিয়ামতের দিন ছায়া পাওয়া: হাদিসে এসেছে, আল্লাহ তায়ালা সাত শ্রেণির মানুষকে কিয়ামতের দিন আরশের ছায়া দান করবেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলো মসজিদের সঙ্গে মনোযোগী ব্যক্তি।

 

ইতিকাফ পালনের নিয়ম

ইতিকাফকারীকে মসজিদে অবস্থান করতে হবে এবং দুনিয়াবি কথা ও কাজ এড়িয়ে চলতে হবে।

 

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করা এবং কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার ও দোয়ার মাধ্যমে সময় কাটানো উচিত।

 

ইতিকাফ ভঙ্গ হয় এমন কাজ, যেমন স্ত্রী সহবাস বা মসজিদ থেকে অনাবশ্যক বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

 

 

আরো পড়ুন:“জাগ্রত পরাণ যার মরে না সে জন”— আধ্যাত্মিকতার চিরন্তন সত্য

 

ইতিকাফ আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের অন্যতম সেরা মাধ্যম। এটি মানুষকে দুনিয়ার ব্যস্ততা থেকে সরিয়ে এনে আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত ইতিকাফ পালনের গুরুত্ব অনুধাবন করা এবং সুযোগ পেলেই এই বরকতময় ইবাদত পালন করা।