ঢাকা ০৪:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোঃ আলী হোসেনের পিতার তরিকা নেয়ার ঘটনা

Sheikh Alhaz Uddin
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৬:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪
  • / ২৩৯৪ বার পড়া হয়েছে
Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আলী হোসেনের পিতা দেনছে আলী হাওলাদার ছিলেন অন্য একজন পীরের মুরীদ। তার ছিল প্রাণঘাতী ভয়ানক পেটের ব্যাথা। কিন্তু পীরের কাছে অনেকবার নালিশ করেও তার নিদারুণ পেটের যন্ত্রণা লাঘব হলোনা। ইতোমধ্যেই আলী হোসেন তার পিতার নিকট বিশ্বওলী হযরত শাহসুফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের উচ্চ মর্ত্যবা, কামালিয়াত এবং আধ্যাত্মিক শক্তি সম্পর্কে অনেক কথা বলেছেন। তিনি তার পিতাকে আটরশি গিয়ে হুজুর পাকের কাছে তরিকা নিতে এবং পেটের ব্যাথা সম্পর্কে নালিশ জানানোর পরামর্শ দিলেন। আলী হোসেন এক পর্যায়ে অত্যন্ত জবার হালে তার পিতাকে বললেন যে, তিনি যদি আটরশির হুজুরের কাছে তরিকা নেয়ার নিয়্যত করেন তাহলেই তিনি সুস্থ্য হয়ে যাবেন।

ছেলের পীড়াপীড়ি ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর তার অসুস্থ পিতা দেনছে আলী হাওলাদার বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে অনুষ্ঠেয় মহা পবিত্র উরস শরীফে যাওয়ার নিয়‍্যত করলেন এবং এ ব্যাপারে ছেলের কাছে ওয়াদাও করলেন। এদিকে আলী হোসেন মসজিদে গিয়ে দু’রাকাত নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করে বললেন, “হে খোদা, তুমি আমার পীরের ওসিলায় আব্বাকে সুস্থ্য করে দাও”। একদিকে পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে আলী হোসেনের আবেদনময় প্রার্থণা, অন্যদিকে তার পিতা আটরশির হুজুরের কাছে তরিকা নেয়ার নিয়্যত করা মাত্রই তিনি সুস্থ্য হয়ে গেলেন। দুর্দমনীয় পেটের ব্যাথা সহসাই ঠান্ডা হয়ে গেল।

 

কিন্তু সুস্থ্য হওয়ার পর দেছে আলী হাওলাদার তার ওয়াদা ভঙ্গ করে পরবর্তী মহা পবিত্র উরস শরীফে গেলেননা, সেই আগের পীরের খেদমতেই রয়ে গেলেন। আলী হোসেন পুরো ওরস শরীফে পিতার অপেক্ষায় থেকে অবশেষে দেশের বাড়ী ফিরে গেলেন এবং মাঝপথেই পিতার দেখা পেয়ে তিনি কোথায় যাচ্ছেন জানতে চাইলেন। আলী হোসেনের পিতার সাথে তখন আরও লোকজন ছিল। আপন পুত্রের প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, তিনি তার পীরের বাড়ীতে যাচ্ছেন সঙ্গী- সাথীদের নিয়ে। এতে করে আলী হোসেন অত্যন্ত মনক্ষুন্ন হয়ে পিতাকে বললেন, “আব্বা, আপনি যখন আমাকে দেয়া ওয়াদা ভঙ্গ করলেন, আমিও আমার দেয়া শপথ উইথড্র (প্রত্যাহার) করে নিলাম। কাজেই আপনি আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবেন, অর্থাৎ ওয়াদা বরখেলাপের কারণে আবার আপনার আগের রোগ (পেটে ব্যাথা) দেখা দিবে”।

 

সত্যি সত্যি হলোও তাই। দেছে আলী হাওলাদার পেটের ব্যাথায় আবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেন। অগত্যা বাধ্য হয়ে ওয়াদা ভঙ্গের কারণে লজ্জিত এবং অনুতপ্ত হয়ে তিনি তওবা করলেন এবং খাজাবাবা ফরিদপুরীর (কুঃছেঃআঃ) কাছে যাওয়ার জন্য পুনরায় নিয়্যত করলেন। আবার তার পেটের ব্যাথা ভাল হয়ে গেল। পীর কেবলাজানের নির্দেশে একটি ভিটামিন সিরাপ খেয়ে তিনি বাকী জীবন সুস্থ্য ছিলেন।

 

প্রসঙ্গতঃ আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। আলী হোসেন তার পিতাকে একথাও বলেছিলেন যে, বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের মুরীদ হলে দয়াল নবী রাসুল পাক (সাঃ) এর দীদার লাভ হবে। অতঃপর দেছে আলী হাওলাদার আটরশি গিয়ে কেবলাজান হুজুরকে দেখেই মুগ্ধ হয়ে যান। তিনি কিতাব ও বই পুস্তকে রাসুলে পাক (সাঃ) সম্পর্কে যে রকম জেনেছেন, হযরত কেবলাজান হুজুর খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবকে সেই রকমই মনে হলো তার কছে। তিনি সাথে সাথেই ভক্তি সহকারে বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের নিকট মুরীদ হন এবং দয়াল নবী রাসুলে পাক (সাঃ) এর দীদারের আকাংখা পেশ করেন। পীর কেবলাজান হুজুর তাকে কয়েক শত মর্ত্যবা দরুদ শরীফ পড়ার নির্দেশ দিলেন। জনাব দেছে আলী হাওলাদার দরবারের মসজিদে গিয়ে বেড়া বা দেয়ালে হেলান দিয়ে তস্স্নিহ হাতে দরুদ শরীফ পড়তে শুরু করলেন। তস্স্নিহর মাত্র কয়েকটি দানা টানতেই সুস্পষ্ট দেখতে পান হযরত শাহসুফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব তাকে হাত ধরে মদীনায় রওজা শরীফে নিয়ে গিয়ে দয়াল নবী রাসুলে পাক (সাঃ) এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। স্বয়ং রাসুল পাক (সাঃ) এ সময় হযরত শাহসুফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) কেবলাজান হুজুরের প্রতি ইশারা করে বললেন, “ইনিই হচ্ছেন যামানার শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দেদ”।

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

Discover more from Sufibad.Com - সূফীবাদ.কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

মোঃ আলী হোসেনের পিতার তরিকা নেয়ার ঘটনা

আপডেট সময় : ০৯:৪৬:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪

আলী হোসেনের পিতা দেনছে আলী হাওলাদার ছিলেন অন্য একজন পীরের মুরীদ। তার ছিল প্রাণঘাতী ভয়ানক পেটের ব্যাথা। কিন্তু পীরের কাছে অনেকবার নালিশ করেও তার নিদারুণ পেটের যন্ত্রণা লাঘব হলোনা। ইতোমধ্যেই আলী হোসেন তার পিতার নিকট বিশ্বওলী হযরত শাহসুফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের উচ্চ মর্ত্যবা, কামালিয়াত এবং আধ্যাত্মিক শক্তি সম্পর্কে অনেক কথা বলেছেন। তিনি তার পিতাকে আটরশি গিয়ে হুজুর পাকের কাছে তরিকা নিতে এবং পেটের ব্যাথা সম্পর্কে নালিশ জানানোর পরামর্শ দিলেন। আলী হোসেন এক পর্যায়ে অত্যন্ত জবার হালে তার পিতাকে বললেন যে, তিনি যদি আটরশির হুজুরের কাছে তরিকা নেয়ার নিয়্যত করেন তাহলেই তিনি সুস্থ্য হয়ে যাবেন।

ছেলের পীড়াপীড়ি ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর তার অসুস্থ পিতা দেনছে আলী হাওলাদার বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে অনুষ্ঠেয় মহা পবিত্র উরস শরীফে যাওয়ার নিয়‍্যত করলেন এবং এ ব্যাপারে ছেলের কাছে ওয়াদাও করলেন। এদিকে আলী হোসেন মসজিদে গিয়ে দু’রাকাত নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করে বললেন, “হে খোদা, তুমি আমার পীরের ওসিলায় আব্বাকে সুস্থ্য করে দাও”। একদিকে পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে আলী হোসেনের আবেদনময় প্রার্থণা, অন্যদিকে তার পিতা আটরশির হুজুরের কাছে তরিকা নেয়ার নিয়্যত করা মাত্রই তিনি সুস্থ্য হয়ে গেলেন। দুর্দমনীয় পেটের ব্যাথা সহসাই ঠান্ডা হয়ে গেল।

 

কিন্তু সুস্থ্য হওয়ার পর দেছে আলী হাওলাদার তার ওয়াদা ভঙ্গ করে পরবর্তী মহা পবিত্র উরস শরীফে গেলেননা, সেই আগের পীরের খেদমতেই রয়ে গেলেন। আলী হোসেন পুরো ওরস শরীফে পিতার অপেক্ষায় থেকে অবশেষে দেশের বাড়ী ফিরে গেলেন এবং মাঝপথেই পিতার দেখা পেয়ে তিনি কোথায় যাচ্ছেন জানতে চাইলেন। আলী হোসেনের পিতার সাথে তখন আরও লোকজন ছিল। আপন পুত্রের প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, তিনি তার পীরের বাড়ীতে যাচ্ছেন সঙ্গী- সাথীদের নিয়ে। এতে করে আলী হোসেন অত্যন্ত মনক্ষুন্ন হয়ে পিতাকে বললেন, “আব্বা, আপনি যখন আমাকে দেয়া ওয়াদা ভঙ্গ করলেন, আমিও আমার দেয়া শপথ উইথড্র (প্রত্যাহার) করে নিলাম। কাজেই আপনি আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবেন, অর্থাৎ ওয়াদা বরখেলাপের কারণে আবার আপনার আগের রোগ (পেটে ব্যাথা) দেখা দিবে”।

 

সত্যি সত্যি হলোও তাই। দেছে আলী হাওলাদার পেটের ব্যাথায় আবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেন। অগত্যা বাধ্য হয়ে ওয়াদা ভঙ্গের কারণে লজ্জিত এবং অনুতপ্ত হয়ে তিনি তওবা করলেন এবং খাজাবাবা ফরিদপুরীর (কুঃছেঃআঃ) কাছে যাওয়ার জন্য পুনরায় নিয়্যত করলেন। আবার তার পেটের ব্যাথা ভাল হয়ে গেল। পীর কেবলাজানের নির্দেশে একটি ভিটামিন সিরাপ খেয়ে তিনি বাকী জীবন সুস্থ্য ছিলেন।

 

প্রসঙ্গতঃ আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। আলী হোসেন তার পিতাকে একথাও বলেছিলেন যে, বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের মুরীদ হলে দয়াল নবী রাসুল পাক (সাঃ) এর দীদার লাভ হবে। অতঃপর দেছে আলী হাওলাদার আটরশি গিয়ে কেবলাজান হুজুরকে দেখেই মুগ্ধ হয়ে যান। তিনি কিতাব ও বই পুস্তকে রাসুলে পাক (সাঃ) সম্পর্কে যে রকম জেনেছেন, হযরত কেবলাজান হুজুর খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবকে সেই রকমই মনে হলো তার কছে। তিনি সাথে সাথেই ভক্তি সহকারে বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের নিকট মুরীদ হন এবং দয়াল নবী রাসুলে পাক (সাঃ) এর দীদারের আকাংখা পেশ করেন। পীর কেবলাজান হুজুর তাকে কয়েক শত মর্ত্যবা দরুদ শরীফ পড়ার নির্দেশ দিলেন। জনাব দেছে আলী হাওলাদার দরবারের মসজিদে গিয়ে বেড়া বা দেয়ালে হেলান দিয়ে তস্স্নিহ হাতে দরুদ শরীফ পড়তে শুরু করলেন। তস্স্নিহর মাত্র কয়েকটি দানা টানতেই সুস্পষ্ট দেখতে পান হযরত শাহসুফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব তাকে হাত ধরে মদীনায় রওজা শরীফে নিয়ে গিয়ে দয়াল নবী রাসুলে পাক (সাঃ) এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। স্বয়ং রাসুল পাক (সাঃ) এ সময় হযরত শাহসুফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) কেবলাজান হুজুরের প্রতি ইশারা করে বললেন, “ইনিই হচ্ছেন যামানার শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দেদ”।