বনের পশুও কামেল পীরের কথা শুনে
- আপডেট সময় : ০৯:৫৭:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪
- / ২৪৩৩ বার পড়া হয়েছে
ফরিদপুর জেলার বাহাদুরপুর এলাকার একজন চাষী তার দুই বিঘা জমিতে আখের চাষ করে সন্তান-সন্ততি ও পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু এক পর্যায়ে তার আখ ক্ষেতে ভীষণ শিয়ালের উপদ্রব শুরু হলো। প্রতিরাতে দলবদ্ধভাবে শিয়াল ক্ষেতের আখ খেয়ে ফেলে। নানা কৌশল অবলম্বন করেও শিয়ালের আক্রমন থেকে ক্ষেতের আখ রক্ষা করা যাচ্ছেনা দেখে খুব শক্ত করে ক্ষেতের চারিদিকে বেড়া দিলেন।
কিন্তু এতে ফল হলো উল্টো। শিয়ালের আক্রমন আরো বেড়ে গেল। এখন দলে দলে অনেক শিয়াল একত্রে এসে ক্ষেতের বেড়া ভেঙ্গে আগের চেয়েও বেশী আখ নষ্ট করে ফেলতে লাগলো। বেচারা গরীব চাষী একেবারে নিঃস্ব হওয়ার পথে। শেষ পর্যন্ত কোন উপায় না দেখে একজনের পরামর্শে আটরশির বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে গিয়ে যামানার মহা ইমাম, মহা মুজাদ্দেদ, বিশ্বওলী হযরত শাহসুফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) কেবলাজান হুজুরের কাছে তার দুরাবস্থার কথা জানালেন এবং শিয়ালের উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য হুজুর কেবলাজানের দয়া ভিক্ষা চাইলেন। লোকটির অসহায় অবস্থার কথা শুনে মানব দরদী, কামেল মোকাম্মেল ওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব অত্যন্ত মধুর কন্ঠে আগত চাষীকে এক অভিনব এবং আশ্চর্য উপদেশ দিয়ে বললেন, “বাবা, আপনি গিয়ে আখ ক্ষেতের বেড়া খুলে দিবেন। তারপর আবার যখন শিয়াল আসবে তখন আপনি শিয়ালদের দলপতিকে উদ্দেশ্য করে খুব বিনয়ের সাথে বলবেন, দেখেন আমি খুব গরীব মানুষ। এই আখ ক্ষেতের আখ বিক্রি করেই আমার স্ত্রী-পুত্র- পরিজন নিয়ে কোনমতে বেঁচে আছি। আপনারা আমার আখ ক্ষেতের আখ খেয়ে ফেললে আমি ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাঁচবো কি করে? তাই আমার অনুরোধ, আপনারা এসে দু’চারটা আখ খেয়ে চলে যাবেন”। এ পর্যন্ত বলেই কেবলাজান হুজুর তাকে নির্দেশ দিলেন, “যান বাবা, যেভাবে বললাম সেভাবে কাজ করেন গিয়ে”।
অতঃপর বাহাদুরপুরের সেই আখচাষী বাড়ীতে গিয়ে ক্ষেতের বেড়া খুলে দিলেন এবং রাতের বেলায় শিয়ালের আগমনের প্রতীক্ষায় থাকলেন। এক সময় দলপতির নেতৃত্বে একদল শিয়াল আখ ক্ষেতে এসে ঢুকে পড়বে, ঠিক সেই সময় উক্ত চাষী হযরত কেবলাজান হুজুরের শেখানো কথাগুলোই দলপতিকে উদ্দেশ্য করে বললেন। এতে আশ্চর্য কাজ হলো, শিয়ালগুলো আখ ক্ষেত ছেড়ে চলে গেল। আর কখনো দু’চারটা আখ খেতেও আসেনি।
বিশ্বওলী, মহাওলী, শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মহা কামেল হযরত শাহসুফী ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব এভাবে বনের পশুকেও বশীভূত করার বিস্ময়কর কৌশল অতি সাধারণ মানুষকেও শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। একমাত্র বিশ্বাসী আশেক হৃদয় ছাড়া মাশুকের প্রেমের খেলা বুঝতে পারেনা।