মানত ভঙ্গ করার পরিণতি
- আপডেট সময় : ১০:০০:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪
- / ২৪৩৯ বার পড়া হয়েছে
একই জেলার আরেকজন কৃষক, যিনি বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরীর (কুঃছেঃআঃ) একজন মুরীদ, দরবার শরীফে গিয়ে হযরত কেবলাজান হুজুরের কাছে অতি উদ্বেগের সাথে নালিশ জানালেন যে, তিনি তার জমিতে বেগুনের চাষ করেন। কিন্তু ঝাঁকে ঝাঁকে বুলবুলি পাখি এসে সব বেগুন খেয়ে ফেলে, নষ্ট করে ফেলে। লোকটির নালিশ শুনে পীর কেবলাজান খুব অবাক হয়ে মধুর কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন বাবা? বুলবুলি পাখি আপনার বেগুন ক্ষেত নষ্ট করে ফেলে কেন?”।
আগত জাকের ভাই এবার বিস্তারিত সব ঘটনা খুলে বললেন, “হুজুর, আমি জমিতে বেগুনের চাষ করে নিয়্যত করেছিলাম যে, প্রথম ফলনের সব বেগুন হুজুর পাকের দরবারে নজরানা হিসেবে দিয়ে দেব। কিন্তু প্রথম ফলন খুব ভাল হওয়াতে এবং বেগুনের দামও হঠাৎ খুব বেড়ে যাওয়াতে নিয়্যত পাল্টে ফেলে মনে মনে ঠিক করলাম যে, এবার না হয় দরবার শরীফে বেগুন নাই বা দিলাম। ভালো মূল্যে এবারের বেগুনগুলো বিক্রি করে পুঁজি বাড়িয়ে পরবর্তী ফলনের বেগুন দরবার শরীফে দিয়ে দেব”। এ পর্যন্ত বলে চাষী একটু ঢোক গিললেন। পরের কথাগুলো বলার আগে হুজুর পাকই জিজ্ঞাসা করলেন, “তারপর কি হলো বলেন”। বেগুন চাষী জাকের ভাই জানালেন যে, দ্বিতীয় দফায় বেগুন গাছে ফুল ধরতে শুরু করলো, তখন কোথা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বুলবুলি পাখি এসে তার ক্ষেতের বেগুন খেয়ে ফেলল। তাই সেবারও নিয়্যত পাল্টে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, এত কম ফলনের বেগুন দরবারে না দিয়ে পরবর্তী ফলনে (তৃতীয় দফায়) যে বেগুন হবে সেগুলো হুজুর পাকের দরবারে নজরানা হিসেবে দিয়ে দেবেন, আর এতে কোন অন্যথা করবেননা। কিন্তু পরবর্তী দফায় হতভাগ্য বেগুন চাষীর কপালের দূর্ভোগ আরো বেড়ে গেল। এবার আগের চেয়েও অনেক বেশী সংখ্যক বুলবুলি পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে এসে বেগুনের শুধু ফুলই নয়, ফুল শুদ্ধ গাছের ডগা পর্যন্ত খেয়ে ফেলল। ঠোকর দিয়ে সব গাছ একেবারে ছিন্নভিন্ন করে ফেলল। ফলে বেগুন চাষী এখন সর্বস্বান্ত হবার পথে। তাই তিনি বাধ্য হয়ে খাজাবাবা ফরিদপুরীর (কুঃছেঃআঃ) স্মরণাপন্ন হয়েছেন। উদ্দেশ্য, খাজাবাবা যেন দয়া করে এ মহা মুসিবত থেকে তাকে উদ্ধার করে দেন।
সব শুনে হযরত কেবলাজান হুজুর আপন স্বভাবজাত মধুর সুরে বিস্ময়ের কন্ঠে বললেন, “বাবা, বুলবুলি পাখি যে আপনাকে শুদ্ধ খেয়ে ফেলেনি, এটাই আপনার পরম সৌভাগ্য। ওলী আল্লাহদের সাথে মুনাফেকী করা ঠিক নয়”।