সূফিবাদ, রাজনীতি ও জাকের পার্টি: বাংলাদেশে এক বিশেষ ধারার রাজনীতি

- আপডেট সময় : ০৩:১১:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
- / ২৩৯৯ বার পড়া হয়েছে
সূফিবাদ ও রাজনীতি: ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত
বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলায় অবস্থিত বিশ্ব জাকের মঞ্জিল আটরশি দরবার শরীফ সূফি সংস্কৃতির অন্যতম কেন্দ্র। এটি শাহসূফি খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃ) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত, যিনি ১৯৪৫ সালে আটরশিতে আসেন এবং আধ্যাত্মিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। তার উত্তরসূরিরা তার দেখানো পথে চলতে থাকেন এবং দরবারকে একটি বৃহৎ সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
১৯৮৯ সালে জাকের পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়, যা মূলত আটরশি দরবার শরীফের আধ্যাত্মিক ভাবধারার অনুসারীদের দ্বারা গঠিত। এটি অন্যান্য প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোর তুলনায় আলাদা, কারণ এটি ধর্মীয় দর্শনকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে একীভূত করার চেষ্টা করে।
আরো পড়ুন:ইমাম মেহদী (আ.) এর আবির্ভাব ও জাকের পার্টির গুরুত্ব
জাকের পার্টির রাজনৈতিক আদর্শ ও কর্মকাণ্ড
জাকের পার্টি ইসলামের সূফি আদর্শকে ভিত্তি করে রাজনীতিতে ন্যায়, মানবতা ও নৈতিকতাকে প্রাধান্য দিতে চায়। দলটি ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের ওপর জোর দেয় এবং জাতীয় রাজনীতিতে ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করে। তাদের মূলনীতি হলো—
১. ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে সমাজ গঠন
২. শান্তি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠা
৩. দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও সুশাসন
৪. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উন্নয়ন
জাকের পার্টি বিভিন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং তাদের অনুসারীদের মধ্যে দলীয় কর্মকাণ্ড চালিয়ে থাকে। যদিও মূলধারার বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মতো তাদের সাংগঠনিক বিস্তৃতি কম, তবে তারা ধর্মপ্রাণ জনগণের মধ্যে একটি স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি করেছে।
সূফিবাদী রাজনীতির ভবিষ্যৎ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে সূফিবাদী চিন্তাধারার দলগুলোর ভূমিকা তুলনামূলকভাবে সীমিত হলেও, এসব দলের সামাজিক প্রভাব যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের মতো আধ্যাত্মিক কেন্দ্রগুলোর কারণে এ ধরনের দলগুলোর প্রতি জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা রয়েছে।
তবে আধুনিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ধর্মীয় দলগুলোর চ্যালেঞ্জও কম নয়। সাধারণ রাজনৈতিক দলগুলোর মতো জনগণের প্রত্যাশা পূরণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক দক্ষতা দেখানো তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরো পড়ুন:বিশ্ব জাকের মঞ্জিল: ইসলামী সাধনা ও ভক্তির কেন্দ্র
সূফিবাদ ও রাজনীতি একত্রে মিশে গেলে একটি নৈতিক ও মানবিক রাজনৈতিক আদর্শ গড়ে উঠতে পারে, যা জাকের পার্টির মতো দলগুলোতে পরিলক্ষিত হয়। যদিও তাদের প্রভাব সীমিত, তবুও আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের কারণে তাদের অনুসারীদের মধ্যে গভীর আনুগত্য বিদ্যমান। আগামী দিনে এ ধরনের রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে এবং তারা কতটা সফল হতে পারে, তা সময়ই বলে দেবে।