ঢাকা ০৪:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ড. সায়েম আমীর ফয়সাল মুজাদ্দেদী ছাহেবের নিজ লেখনীতে

আব্দুল ওয়াহাব নাজদির অনুশাসন: ইসলামের আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যের উপর এক নির্মম আঘাত

শেখ আলহাজ্ব উদ্দিন
  • আপডেট সময় : ০২:১২:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • / ২৪১০ বার পড়া হয়েছে
Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আব্দুল ওয়াহাব নাজদি এমন এক মতবাদ বিস্তার করেছেন, যা সহিষ্ণুতা, প্রেম ও মানবতার উপর প্রতিষ্ঠিত ইসলামের চিরায়ত আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যকে ছিন্নভিন্ন করেছে। তিনি ধর্মের নামে যে কঠোর মৌলবাদ ও উগ্রবাদকে উস্কে দিয়েছেন, তা শুধু ইসলামের নরম ও পরিশীলিত শিক্ষা নয়, বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর একতা ও হৃদয়িক বন্ধনকেও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

 

যেখানে ইসলাম মানুষকে আদব, শিষ্টাচার এবং আধ্যাত্মিক শুদ্ধতার পথে আহ্বান করে— সেখানে নাজদি মতবাদ বিদ্বেষ, বর্ণবাদ, সহিংসতা ও চরমপন্থাকে উৎসাহিত করেছে। তিনি ইসলামের ঐ মহান বন্ধনকে ছিন্ন করেছেন, যেখানে ভিন্নমতকে সহ্য করা হতো এবং আউলিয়া-কামিলদের মধ্য দিয়ে মানুষের হৃদয় আলোকিত হতো।

 

এই মতবাদ আমাদের সেই ইসলাম থেকে বিচ্যুত করেছে, যার ভিত্তি ছিল আল্লাহর প্রেম, নবীজীর (সা.) প্রতি গভীর মহব্বত এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি। আব্দুল ওয়াহাব নাজদির অনুসারীরা ইসলামের আধ্যাত্মিক উপাসনা, মিলাদ, দরূদ ও অলী-আউলিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাকে “বিদআত” আখ্যা দিয়ে সেই মহান সূফি ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করেছে যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষের আত্মা জাগ্রত করেছিল।

 

আরো পড়ুন:রাসূল (সাঃ) কখন নবুয়্যত লাভ করেন?

 

তিনি ইসলামের রূহানিয়াতকে কঠোর আইনি কাঠামোর শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে এমন এক শুষ্ক ও হৃদয়হীন ধর্মীয়তা প্রতিষ্ঠা করেছেন যা মানুষকে আল্লাহর প্রেম থেকে দূরে সরিয়ে কেবল বাহ্যিক আচরণের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এর ফলে মুসলিম সমাজে বেড়ে গেছে ঘৃণা, হিংসা ও ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত।

 

আজ আমাদের কর্তব্য এই বিভ্রান্তি থেকে মানুষকে মুক্ত করা, ইসলামের আসল সৌন্দর্য— প্রেম, সহিষ্ণুতা, মানবতা ও আধ্যাত্মিক মুক্তির পথে মানুষকে আহ্বান করা।

 

আরো পড়ুন:নফস কী ও কেন? একটি বিশদ বিশ্লেষণ

 

ইসলাম কেবল একটি আইনতন্ত্র নয়, এটি এক মহান প্রেমের শিক্ষা। যারা এই প্রেমকে অস্বীকার করে, তারাই প্রকৃতপক্ষে ইসলামের রূহকে হত্যা করেছে।

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ড. সায়েম আমীর ফয়সাল মুজাদ্দেদী ছাহেবের নিজ লেখনীতে

আব্দুল ওয়াহাব নাজদির অনুশাসন: ইসলামের আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যের উপর এক নির্মম আঘাত

আপডেট সময় : ০২:১২:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

আব্দুল ওয়াহাব নাজদি এমন এক মতবাদ বিস্তার করেছেন, যা সহিষ্ণুতা, প্রেম ও মানবতার উপর প্রতিষ্ঠিত ইসলামের চিরায়ত আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যকে ছিন্নভিন্ন করেছে। তিনি ধর্মের নামে যে কঠোর মৌলবাদ ও উগ্রবাদকে উস্কে দিয়েছেন, তা শুধু ইসলামের নরম ও পরিশীলিত শিক্ষা নয়, বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর একতা ও হৃদয়িক বন্ধনকেও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

 

যেখানে ইসলাম মানুষকে আদব, শিষ্টাচার এবং আধ্যাত্মিক শুদ্ধতার পথে আহ্বান করে— সেখানে নাজদি মতবাদ বিদ্বেষ, বর্ণবাদ, সহিংসতা ও চরমপন্থাকে উৎসাহিত করেছে। তিনি ইসলামের ঐ মহান বন্ধনকে ছিন্ন করেছেন, যেখানে ভিন্নমতকে সহ্য করা হতো এবং আউলিয়া-কামিলদের মধ্য দিয়ে মানুষের হৃদয় আলোকিত হতো।

 

এই মতবাদ আমাদের সেই ইসলাম থেকে বিচ্যুত করেছে, যার ভিত্তি ছিল আল্লাহর প্রেম, নবীজীর (সা.) প্রতি গভীর মহব্বত এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি। আব্দুল ওয়াহাব নাজদির অনুসারীরা ইসলামের আধ্যাত্মিক উপাসনা, মিলাদ, দরূদ ও অলী-আউলিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাকে “বিদআত” আখ্যা দিয়ে সেই মহান সূফি ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করেছে যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষের আত্মা জাগ্রত করেছিল।

 

আরো পড়ুন:রাসূল (সাঃ) কখন নবুয়্যত লাভ করেন?

 

তিনি ইসলামের রূহানিয়াতকে কঠোর আইনি কাঠামোর শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে এমন এক শুষ্ক ও হৃদয়হীন ধর্মীয়তা প্রতিষ্ঠা করেছেন যা মানুষকে আল্লাহর প্রেম থেকে দূরে সরিয়ে কেবল বাহ্যিক আচরণের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এর ফলে মুসলিম সমাজে বেড়ে গেছে ঘৃণা, হিংসা ও ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত।

 

আজ আমাদের কর্তব্য এই বিভ্রান্তি থেকে মানুষকে মুক্ত করা, ইসলামের আসল সৌন্দর্য— প্রেম, সহিষ্ণুতা, মানবতা ও আধ্যাত্মিক মুক্তির পথে মানুষকে আহ্বান করা।

 

আরো পড়ুন:নফস কী ও কেন? একটি বিশদ বিশ্লেষণ

 

ইসলাম কেবল একটি আইনতন্ত্র নয়, এটি এক মহান প্রেমের শিক্ষা। যারা এই প্রেমকে অস্বীকার করে, তারাই প্রকৃতপক্ষে ইসলামের রূহকে হত্যা করেছে।