ঢাকা ০৮:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম কেন?

  • আপডেট সময় : ০২:০৯:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
  • / ২৪১৫ বার পড়া হয়েছে
Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম কেন? (বছরে পাঁচ দিন রোজা হারামের কারণ)

 

ইসলাম ধর্মে রোজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। তবে ইসলামে কিছু নির্দিষ্ট দিনে রোজা রাখা হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি ঈদের দিন (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা) এবং তিনটি তাশরিকের দিন (১১, ১২, ১৩ জিলহজ) উল্লেখযোগ্য। কেন এই পাঁচ দিনে রোজা রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তা জানার জন্য কুরআন ও হাদিসের আলোকে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

আরো পড়ুন:ইতিকাফের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম হওয়ার কারণ

১. ঈদ হলো আনন্দ ও উপহার গ্রহণের দিন:
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা ইসলামি সংস্কৃতিতে উৎসব ও আনন্দের প্রতীক। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“ঈদের দিন রোজা রাখো না। কারণ এটি খাওয়া-দাওয়া ও আনন্দের দিন।” (মুসলিম, হাদিস: ১১৩৭)

এই দিনে মুসলমানদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ রয়েছে। ঈদুল ফিতরে রমজানের এক মাস রোজা রাখার পর পুরস্কারস্বরূপ খাদ্য গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর ঈদুল আজহায় কোরবানি করার মাধ্যমে খাওয়া-দাওয়া ও দান-খয়রাতের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।

২. রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছেন:
আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন,
“নবী (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।” (বুখারি, হাদিস: ১৯৯০; মুসলিম, হাদিস: ১১৩৭)

যেহেতু এটি নবীজির সুন্নাহর পরিপন্থী, তাই এ দিনে রোজা রাখা হারাম গণ্য হবে।

আরো পড়ুন:শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য

তাশরিকের দিন (১১, ১২, ১৩ জিলহজ) রোজা রাখা হারাম হওয়ার কারণ

১. এই দিনগুলো কোরবানির গোশত ভোগ ও বিতরণের দিন:
তাশরিকের দিনগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর দেওয়া নেয়ামত গ্রহণ করা এবং তা অন্যদের মধ্যে বিতরণ করা। কোরআনে এসেছে:
وَاذْكُرُوا اللَّهَ فِيۡۤ اَيَّامٍ مَّعۡدُوۡدٰتٍ
“আর নির্ধারিত দিনে আল্লাহকে স্মরণ করো।” (সুরা বাকারা: ২০৩)

এই দিনগুলোতে মুসলমানরা খাবার গ্রহণের মাধ্যমে আল্লাহর দান ভোগ করেন এবং কোরবানির গোশত গরিব-দুঃখীদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। সুতরাং, এদিন রোজা রাখা ইসলামি বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।

২. রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন:
নুবাইশা আল-হুযালী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“তাশরিকের দিনগুলো খাওয়া-দাওয়ার দিন এবং আল্লাহকে স্মরণের দিন।” (মুসলিম, হাদিস: ১১৪১)

তাশরিকের দিন আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের জন্য নির্ধারিত, তাই এ সময়ে রোজা রাখা নিষিদ্ধ।

 

আরো পড়ুন:“জাগ্রত পরাণ যার মরে না সে জন”— আধ্যাত্মিকতার চিরন্তন সত্য

 

বছরের পাঁচ দিন—দুই ঈদের দিন এবং তাশরিকের তিন দিন—রোজা রাখা হারাম। কারণ, এসব দিন আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার ও নেয়ামত ভোগ করার জন্য নির্ধারিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দিনে রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন, এবং ইসলামে যা স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তা এড়িয়ে চলাই মুসলমানদের জন্য আবশ্যক। সুতরাং, আমাদের উচিত রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ মেনে চলা এবং ইসলামের বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন এবং ইসলামের অনুসরণ করার তৌফিক দিন, আমিন।

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম কেন?

আপডেট সময় : ০২:০৯:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম কেন? (বছরে পাঁচ দিন রোজা হারামের কারণ)

 

ইসলাম ধর্মে রোজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। তবে ইসলামে কিছু নির্দিষ্ট দিনে রোজা রাখা হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি ঈদের দিন (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা) এবং তিনটি তাশরিকের দিন (১১, ১২, ১৩ জিলহজ) উল্লেখযোগ্য। কেন এই পাঁচ দিনে রোজা রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তা জানার জন্য কুরআন ও হাদিসের আলোকে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

আরো পড়ুন:ইতিকাফের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম হওয়ার কারণ

১. ঈদ হলো আনন্দ ও উপহার গ্রহণের দিন:
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা ইসলামি সংস্কৃতিতে উৎসব ও আনন্দের প্রতীক। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“ঈদের দিন রোজা রাখো না। কারণ এটি খাওয়া-দাওয়া ও আনন্দের দিন।” (মুসলিম, হাদিস: ১১৩৭)

এই দিনে মুসলমানদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ রয়েছে। ঈদুল ফিতরে রমজানের এক মাস রোজা রাখার পর পুরস্কারস্বরূপ খাদ্য গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর ঈদুল আজহায় কোরবানি করার মাধ্যমে খাওয়া-দাওয়া ও দান-খয়রাতের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।

২. রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছেন:
আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন,
“নবী (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।” (বুখারি, হাদিস: ১৯৯০; মুসলিম, হাদিস: ১১৩৭)

যেহেতু এটি নবীজির সুন্নাহর পরিপন্থী, তাই এ দিনে রোজা রাখা হারাম গণ্য হবে।

আরো পড়ুন:শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য

তাশরিকের দিন (১১, ১২, ১৩ জিলহজ) রোজা রাখা হারাম হওয়ার কারণ

১. এই দিনগুলো কোরবানির গোশত ভোগ ও বিতরণের দিন:
তাশরিকের দিনগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর দেওয়া নেয়ামত গ্রহণ করা এবং তা অন্যদের মধ্যে বিতরণ করা। কোরআনে এসেছে:
وَاذْكُرُوا اللَّهَ فِيۡۤ اَيَّامٍ مَّعۡدُوۡدٰتٍ
“আর নির্ধারিত দিনে আল্লাহকে স্মরণ করো।” (সুরা বাকারা: ২০৩)

এই দিনগুলোতে মুসলমানরা খাবার গ্রহণের মাধ্যমে আল্লাহর দান ভোগ করেন এবং কোরবানির গোশত গরিব-দুঃখীদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। সুতরাং, এদিন রোজা রাখা ইসলামি বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।

২. রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন:
নুবাইশা আল-হুযালী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“তাশরিকের দিনগুলো খাওয়া-দাওয়ার দিন এবং আল্লাহকে স্মরণের দিন।” (মুসলিম, হাদিস: ১১৪১)

তাশরিকের দিন আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের জন্য নির্ধারিত, তাই এ সময়ে রোজা রাখা নিষিদ্ধ।

 

আরো পড়ুন:“জাগ্রত পরাণ যার মরে না সে জন”— আধ্যাত্মিকতার চিরন্তন সত্য

 

বছরের পাঁচ দিন—দুই ঈদের দিন এবং তাশরিকের তিন দিন—রোজা রাখা হারাম। কারণ, এসব দিন আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার ও নেয়ামত ভোগ করার জন্য নির্ধারিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দিনে রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন, এবং ইসলামে যা স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তা এড়িয়ে চলাই মুসলমানদের জন্য আবশ্যক। সুতরাং, আমাদের উচিত রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ মেনে চলা এবং ইসলামের বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন এবং ইসলামের অনুসরণ করার তৌফিক দিন, আমিন।