আয়াতে মুতাশাবিহাত ও মানসিক-ঈমানি অপরিচ্ছন্নতার ফাঁদ

- আপডেট সময় : ১০:০৫:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
- / ২৪১২ বার পড়া হয়েছে
আয়াতে মুতাশাবিহাতের পেছনে পড়ে যাওয়া একটা বড় ধরনের মানসিক অপরিচ্ছন্নতা। শুধু মানসিক অপরিচ্ছন্নতা নয়, এটা ঈমানি অপরিচ্ছন্নতাও।
আয়াতে মুতাশাবিহাত বা কুরআনের অস্পষ্ট আয়াত নিয়ে মানুষ উঠেপড়ে লাগে স্রেফ দুটা কারণে:
১. আত্মপূজা।
নিজেকে ইউনিক প্রমাণের জন্য। কুরআন সুস্পষ্ট। কুরআন সব শ্রেণীর মানুষের বুঝের উপযুক্ত। কিন্তু অস্পষ্ট আয়াতগুলো নিয়ে কিছু মানুষ বাড়াবাড়ি করে স্রেফ এজন্য যে, নিজেকে বিশেষ জ্ঞানী হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়। এটা মন ও রূহের দিক দিয়ে, আল্লাহর ইবাদাতের বদলে নিজের ইবাদাতের দিকে চলে যাওয়া।
আরো পড়ুন:নফস কী ও কেন? একটি বিশদ বিশ্লেষণ
২. দলপূজা।
কুরআন তো সিম্পল। স্পষ্ট। সহজবোধ্য। কুরআনের ৯০% কথা, দিকনির্দেশনা ও হুকুমও স্পষ্ট। কিন্তু সহজ সরল কুরআনের অনুসরণ করলে তো আর দলের তাবেদারি করা যায় না। ফেরকা, বিভ্রান্তি, ফিতনার তাবেদারি করা যায় না। বিভক্তির তাবেদারি করা যায় না। সহজে কুরআন যা বোঝা যায়, তার অনুসরণ করলে? তার উপর আমল করলে? উম্মাহর এক অংশকে কাফের মুশরেক বাতেল বলে উম্মাহর অপর অংশকে একমাত্র সহিহ মুসলিম বলা যায় না। ফলে, দলপূজার জন্যও আয়াতে মুতাশাবিহাতের পেছনে পড়া খুব জরুরি হয়ে পড়ে মানুষের কাছে।
কিন্তু মানুষ নিজের রবকে ছেড়ে নিজের পূজা বা দলের পূজায় লিপ্ত হচ্ছে। নিজের রবকে ছেড়ে কোন্ দিকে ছুটে বেড়াচ্ছে!
আয়াতে মুতাশাবিহাতের মধ্যে চিন্তকদের জন্য উপাদান আছে। কথা সত্যি। কিন্তু আয়াতে মুতাশাবিহাত নব নব যুগে নব নব রূপে প্রতিভাত হবে। এটাও শুধু চিন্তকরা বুঝতে পারবে। বিপরীতে, সাধারণ মানুষ আয়াতে মুতাশাবিহাতকে ব্যবহার করবে আত্মপ্রচার বা আত্মপক্ষ প্রচারের বিকৃতির মাধ্যম হিসেবে।
আরো পড়ুন:শয়তান কত প্রকার ও কী কী?—একটি ইসলামি বিশ্লেষণ
আমার কথাই যদি ধরি, এক সময় আয়াতে মুতাশাবিহাতের প্রতি প্রচণ্ড আকর্ষণ ছিল। যেগুলোর অর্থ সবাই বোঝে, তার বাইরের কথার প্রতি তীব্র আকর্ষণ ছিল। যত বেশি ভাবমূর্তি ভেঙে চুরমার করতে পেরেছি, তত বেশি বিমূর্ত খোদার ইবাদাতের কাছে যেতে পেরেছি। আল্লাহ তো শুধু অস্বীকারকারীদের ঘিরে রাখেননি। ঘিরে রেখেছেন সবই। ওয়াল্লাহু মুহিত।
-গোলাম দস্তগীর লিসানী