ঢাকা ১১:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পিপাসার কত গুলো স্তর হয়?

  • আপডেট সময় : ১১:৪৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ২৪৭৭ বার পড়া হয়েছে
Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এক দিন কারাগারে ইমাম হুসাইন (আ) এর ছোট্ট মেয়ে সকিনা (আঃ) তিঁনার ভাই ইমাম জয়নুল আবেদীন (আঃ) কে প্রশ্ন করেন। আপনিতো এখন এই যুগের ইমাম আর ইমাম তো সব বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখেন। তাই আপনাকে একটা প্রশ্ন করছি, “পিপাসার কত গুলো স্তর হয়?” (পিপাসা কত ধরনের হয়)

সকিনা(আঃ)-এর এই কথা শুনে হযরত যায়নাব (আঃ) কেঁদে অস্থির হয়ে সকিনা (আঃ) কে কোলে তুলে নিলেন আর বলেন তুমি কেন এমন প্রশ্ন করছো আমার ছোট্ট আদরের ভাতিজি ? ইমাম জয়নুল আবেদিন (আঃ) নিজ ফুপিকে বলেন, সকিনা তার নিজের যুগের ইমামের কাছে প্রশ্ন করেছে। তাই তার প্রশ্নের উত্তর দেয়া আমার উপর জরুরি হয়ে পরেছে। তারপর ইমাম ছাহেব বললেন, সকিনা! পিপাসার চার(৪) স্তর হয়ে থাকে।

পিপাসার ১ম স্তর হলো মানুষ এত বেশি পিপাসায় কাতর হয় যে তার চোখে সব কিছু ধোয়াঁ ধোয়াঁ দেখতে পায় আর আকাশ ও জমিনের পার্থক্য অনুভব করতে পারে না।😭

তখন বিবি সকিনা(আঃ) বলেন, হ্যাঁ আমি ভাই কাসিম(আঃ)-কে আমার বাবার নিকট বলতে শুনেছিলাম চাচা আমি এত বেশি পিপাসায় কাতর যে আমি চোখে শুধু ধোয়াঁ ধোয়াঁ দেখতে পাচ্ছি।

ইমাম ছাহেব বললেন, পিপাসার ২য় স্তর হলো যখন মানুষের জিহবা তার মুখের তালুতে যেয়ে চিপকে থাকে।

বিবি সকিনা (আঃ)আবার বলেন, হ্যাঁ ভাই আকবার (আঃ) যখন বাবা হুসাইন (আঃ)এর মুখে নিজের জিহবা রেখে বের করে ছিলেন তখন বলেছিলেন বাবা আপনিতো আমার চাইতে অধিক তৃষ্ণার্ত আছেন।
মনে হয় তখন আব্বাহুজর পিপাসার ২য় স্তরে ছিলেন।

ইমাম ছাহেব আবার বললেন, পিপাসার ৩য় স্তর হলো যখন কোন মাছ কে পানি হতে বের করে মাটিতে রেখে দেওয়া হয়। আর মাছটি এত বেশি তৃষ্ণার্ত হয় যে, সে নিস্তেজ হয়ে পরে। শুধু একবার মুখ খোলে আর একবার মুখ বন্ধ করে।
বিবি সকিনা (আঃ) বলেন, হ্যাঁ আমার ৬ মাসের ছোট্ট ভাই কে যখন বাবা মাটিতে রেখে দিয়ে ছিলেন তখন সেও নিস্তেজ হয়ে পরে ছিল, আর একবার মুখ খুলছিলো আর একবার বন্ধ করছিলো। মনেহয় আলী আসগর(আঃ) তখন পিপাসার ৩ স্তরে ছিল।

 ইমাম ছাহেব আবার বললেন, পিপাসার ৪র্থ স্তর হলো যখন মানুষ এত বেশি তৃষ্ণার্ত হয় যে তার দেহের আদ্রতা সম্পূর্ণ রূপে নি:শেষ হয়ে যায়। আর তার দেহের মাংস তার হার(হাড্ডি) হতে আলাদা হতে শুরু করে। আর মানুষ মৃত্যু মুখে পতিত হয়।

এত টুকু শুনে বিবি সকিনা(আঃ) তার হাত ভাই এর নিকট প্রসারিত করে বলেন, ভাই! আমি মনে হয় পিপাসার শেষ হয়ে যাচ্ছি।

হায় কারবালা

 

লেখকঃ সুজন শাহজী 

আরো পড়ুনঃ

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

Discover more from Sufibad.Com - সূফীবাদ.কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

পিপাসার কত গুলো স্তর হয়?

আপডেট সময় : ১১:৪৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

এক দিন কারাগারে ইমাম হুসাইন (আ) এর ছোট্ট মেয়ে সকিনা (আঃ) তিঁনার ভাই ইমাম জয়নুল আবেদীন (আঃ) কে প্রশ্ন করেন। আপনিতো এখন এই যুগের ইমাম আর ইমাম তো সব বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখেন। তাই আপনাকে একটা প্রশ্ন করছি, “পিপাসার কত গুলো স্তর হয়?” (পিপাসা কত ধরনের হয়)

সকিনা(আঃ)-এর এই কথা শুনে হযরত যায়নাব (আঃ) কেঁদে অস্থির হয়ে সকিনা (আঃ) কে কোলে তুলে নিলেন আর বলেন তুমি কেন এমন প্রশ্ন করছো আমার ছোট্ট আদরের ভাতিজি ? ইমাম জয়নুল আবেদিন (আঃ) নিজ ফুপিকে বলেন, সকিনা তার নিজের যুগের ইমামের কাছে প্রশ্ন করেছে। তাই তার প্রশ্নের উত্তর দেয়া আমার উপর জরুরি হয়ে পরেছে। তারপর ইমাম ছাহেব বললেন, সকিনা! পিপাসার চার(৪) স্তর হয়ে থাকে।

পিপাসার ১ম স্তর হলো মানুষ এত বেশি পিপাসায় কাতর হয় যে তার চোখে সব কিছু ধোয়াঁ ধোয়াঁ দেখতে পায় আর আকাশ ও জমিনের পার্থক্য অনুভব করতে পারে না।😭

তখন বিবি সকিনা(আঃ) বলেন, হ্যাঁ আমি ভাই কাসিম(আঃ)-কে আমার বাবার নিকট বলতে শুনেছিলাম চাচা আমি এত বেশি পিপাসায় কাতর যে আমি চোখে শুধু ধোয়াঁ ধোয়াঁ দেখতে পাচ্ছি।

ইমাম ছাহেব বললেন, পিপাসার ২য় স্তর হলো যখন মানুষের জিহবা তার মুখের তালুতে যেয়ে চিপকে থাকে।

বিবি সকিনা (আঃ)আবার বলেন, হ্যাঁ ভাই আকবার (আঃ) যখন বাবা হুসাইন (আঃ)এর মুখে নিজের জিহবা রেখে বের করে ছিলেন তখন বলেছিলেন বাবা আপনিতো আমার চাইতে অধিক তৃষ্ণার্ত আছেন।
মনে হয় তখন আব্বাহুজর পিপাসার ২য় স্তরে ছিলেন।

ইমাম ছাহেব আবার বললেন, পিপাসার ৩য় স্তর হলো যখন কোন মাছ কে পানি হতে বের করে মাটিতে রেখে দেওয়া হয়। আর মাছটি এত বেশি তৃষ্ণার্ত হয় যে, সে নিস্তেজ হয়ে পরে। শুধু একবার মুখ খোলে আর একবার মুখ বন্ধ করে।
বিবি সকিনা (আঃ) বলেন, হ্যাঁ আমার ৬ মাসের ছোট্ট ভাই কে যখন বাবা মাটিতে রেখে দিয়ে ছিলেন তখন সেও নিস্তেজ হয়ে পরে ছিল, আর একবার মুখ খুলছিলো আর একবার বন্ধ করছিলো। মনেহয় আলী আসগর(আঃ) তখন পিপাসার ৩ স্তরে ছিল।

 ইমাম ছাহেব আবার বললেন, পিপাসার ৪র্থ স্তর হলো যখন মানুষ এত বেশি তৃষ্ণার্ত হয় যে তার দেহের আদ্রতা সম্পূর্ণ রূপে নি:শেষ হয়ে যায়। আর তার দেহের মাংস তার হার(হাড্ডি) হতে আলাদা হতে শুরু করে। আর মানুষ মৃত্যু মুখে পতিত হয়।

এত টুকু শুনে বিবি সকিনা(আঃ) তার হাত ভাই এর নিকট প্রসারিত করে বলেন, ভাই! আমি মনে হয় পিপাসার শেষ হয়ে যাচ্ছি।

হায় কারবালা

 

লেখকঃ সুজন শাহজী 

আরো পড়ুনঃ