অজু করার নিয়ম ও দোয়া
- আপডেট সময় : ০১:০৩:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ২৪০৭ বার পড়া হয়েছে
অজুর দোয়া
অজু ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। অজু পবিত্রতার মাধ্যম। নামাজ ও কোরআন পড়ার আগে অজু করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মুসলমানদের মধ্যে শারীরিক পবিত্রতা লাভের জন্য গোসলের পর অজুর স্থান। ‘অজু’ আরবি শব্দ। এর অর্থ পরিচ্ছন্ন, সুন্দর ও স্বচ্ছ। পারিভাষিক অর্থে বিশেষ নিয়মে বিভিন্ন অঙ্গ ধোয়াকে অজু বলা হয়। অজু নামাজের অপরিহার্য শর্ত।
নামাজ ছাড়াও অনেক ইবাদতের জন্য অজু করতে হয়। অজুর বিধান সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘হে মুমিনরা, যখন তোমরা নামাজের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমাদের মুখ ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে এবং মাথা মাসেহ করবে আর পা টাখনু (গ্রন্থি) পর্যন্ত ধৌত করবে। (সুরা: মায়েদা ৬)
অজুর মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করা যায়। আল্লাহ তাআলার আনুগত্যের নিয়তে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ পরিচ্ছন্নতা আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা বানিয়ে দেয়।
মানুষকে আদেশ করা হয়েছে যে নিজের আত্মার অলসতা, নিস্তেজতা ও অপরিচ্ছন্নতাকে অজুর মাধ্যমে দূর কর, যেন আল্লাহ তাআলার সামনে দাঁড়ানোর যোগ্যতা তৈরি হয়। কেননা, তিনি সদা জাগ্রত ও সতর্ক। পবিত্র কোরআনে এসেছে, আল্লাহকে অলসতা ও নিদ্রা আচ্ছাদন করতে পারে না। (সুরা: বাকারা ২৫৫)
অজুর সুন্নতি পদ্ধতি
অজুর শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা- بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْم উচ্চারণ: ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’। অর্থ: পরম করুণাময় ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। অজু করার সময় এ দোয়াটি পড়তে থাকা- اَللَّخُمَّ اغْفِرْلِىْ ذَنْبِى وَ وَسِّعْلِىْ فِىْ دَارِىْ وَبَارِكْ لِىْ فِىْ رِزْقِىْ উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি, ওয়া ওয়াসসিলি ফি দারি, ওয়া বারিক লি ফি রিযক্বি। (নাসাঈ) অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমার গোনাহ মাফ করে দাও। আমার জন্য আমার বাসস্থান প্রশস্ত করে দাও। এবং আমার রিযিক্বে বরকত দিয়ে দাও।’
অজুর শেষে কালেমার সাক্ষ্য দেয়া। أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ উচ্চারণ: ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।’ অর্থ: ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই। তিনি একক, তার কোনো শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার বান্দা ও রসুল।’ (মুসলিম, মিশকাত)
হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রা. আনহু বর্ণনা করেন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে কালেমায়ে শাহাদাত পড়বে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে; ওই ব্যক্তি যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে প্রবেশ করবে। (মুসলিম, মিশকাত)
অজু শেষে এ দোয়াটি পড়া- اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنْ التَّوَّابِينَ ، وَاجْعَلْنِي مِنْ الْمُتَطَهِّرِينَ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মাঝআলনি মিনাত তাউয়্যাবিনা ওয়াঝআলনি মিনাল মুতাত্বাহ্হিরিন।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের মধ্যে শামিল করে নিন।’ (তিরমিজি, মিশকাত)
অজুর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উল্লিখিত দোয়াগুলো অনেক ফজিলত পূর্ণ, যা অজুকারীকে পবিত্র ও নেককার বান্দায় পরিণত করে দেয়। যার জন্য জান্নাতের সব দরজা উন্মুক্ত থাকে। সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, একান্ত মনোযোগের সঙ্গে সুন্নাতের অনুসরণে সব সময় অজু অবস্থায় থাকা। অজুর ফজিলত লাভে যথাযথভাবে অজু করা। হাদিসে ঘোষিত অজুর ফজিলত ও উপকারিতাগুলো অর্জন করা।