ঢাকা ১০:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৃষ্টির সেবায় স্রষ্টার সন্ধান

  • আপডেট সময় : ১২:৩২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ২৪০৮ বার পড়া হয়েছে
Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইসলামে মানবসেবা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যা স্বয়ং রাসূলে আকরাম (সা.) করেছেন। যে কাজে আল্লাহর সন্তোষ ও জান্নাত লাভের ওসিলা হতে পারে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে সব জাগতিক প্রয়োজনে সাহায্য করা, অসুস্থকে দেখতে যাওয়া, সেবা করা, বিপদগ্রস্তকে উদ্ধার করা, মাজলুম হলে সাহায্য করা, মৃত্যুবরণ করলে দাফন-কাফনে শরিক হওয়া ইত্যাদি সব ধরনের মানব সেবামূলক কাজের জন্য অকল্পনীয় সাওয়াব ও মর্যাদার কথা অগণিত হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।

মহান আল্লাহ সূরা আল ইমরানের ১১০ নং আয়াতে বলেন, তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি যাদের মানবজাতির কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় আমরা কেবল মানব কল্যাণে নিয়োজিত থাকলেই শ্রেষ্ঠ নতুবা নয়। অন্য আয়াতে এসেছে, তোমরা নেক কাজে একে অপরকে সহযোগিতা করো তবে সাবধান সীমালঙ্ঘনের কাজে সহযোগিতা করিও না। (সূরা মায়েদার ০২)। এ আয়াত থেকেও বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে যে, আমরা সব ধরনের নেক কাজে একে অপরের সহযোগী হব বা পাশে দাঁড়াব।

রাসূলে আকরাম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যতক্ষণ একজন মানুষ অন্য কোনো মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে ততক্ষণ আল্লাহ তার (মানব সেবাকারীর) কল্যাণে রত থাকবেন।’-মুসলিম, আস সহিহ ৪/২০৭৪।

হজরত আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসূলে আকরাম (সা.) বলেছেন, ‘সমস্ত মাখলুখ আল্লাহতায়ালার পরিবার। সুতরাং মাখলুকের মধ্যে আল্লাহতায়ালার কাছে সর্বাধিক প্রিয় ওই ব্যক্তি, যে আল্লাহর পরিবারের প্রতি এহসান বা দয়া করে।’ (বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়) (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান)। হজরত আনাস (রা) বলেন, রাসূলে আকরাম (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার উম্মতের কারও অভাব পূরণ করবে, এতে তার উদ্দেশ্য হলো ওই ব্যক্তিকে সন্তুষ্ট করবে, প্রকৃতপক্ষে সে আমাকেই সন্তুষ্ট করল। আর যে আমাকে সন্তুষ্ট করল, সে মূলত আল্লাহকেই সন্তুষ্ট করল। আর আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান)।

রাসূলে আকরাম (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘যারা দয়ালু আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করেন। সুতরাং তোমরা পৃথিবীবাসীর প্রতি দয়া করো। আসমানবাসী (অর্থাৎ আল্লাহ) তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।’ হজরত আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো বস্ত্রহীন মুসলমানকে কাপড় পরিধান করাবে আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতের সবুজ কাপড় পরিধান করাবেন। যে কোনো ক্ষুধার্ত মুসলমানকে আহার করাবে আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতের ফল আহার করাবেন। যে কোনো পিপাসার্ত মুসলমানকে পানি পান করাবে আল্লাহতায়ালা তাকে ‘রহিকে মাখতুম’ থেকে পানি পান করাবেন। (রহিকে মাখতুম হলো মেশক আম্বর দ্বারা মোহরকৃত বিশুদ্ধ পানি, যা জান্নাতিদের পান করতে দেওয়া হবে)।’ (আবু দাউদ)। রাসূলে আকরাম (সা.) আরও বলেন, ‘যে এতিম-অনাথের লালন-পালন করে সে আমার সঙ্গে পাশাপাশি জান্নাতে থাকবে, একথা বলে তিনি মধ্যমা ও তর্জনীকে পাশাপাশি রেখে দেখান।’-বুখারি, আস সহিহ ৫/২০৩২,২২৩৭।

আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন!!!

আরো পড়ুনঃ 

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সৃষ্টির সেবায় স্রষ্টার সন্ধান

আপডেট সময় : ১২:৩২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ইসলামে মানবসেবা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যা স্বয়ং রাসূলে আকরাম (সা.) করেছেন। যে কাজে আল্লাহর সন্তোষ ও জান্নাত লাভের ওসিলা হতে পারে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে সব জাগতিক প্রয়োজনে সাহায্য করা, অসুস্থকে দেখতে যাওয়া, সেবা করা, বিপদগ্রস্তকে উদ্ধার করা, মাজলুম হলে সাহায্য করা, মৃত্যুবরণ করলে দাফন-কাফনে শরিক হওয়া ইত্যাদি সব ধরনের মানব সেবামূলক কাজের জন্য অকল্পনীয় সাওয়াব ও মর্যাদার কথা অগণিত হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।

মহান আল্লাহ সূরা আল ইমরানের ১১০ নং আয়াতে বলেন, তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি যাদের মানবজাতির কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় আমরা কেবল মানব কল্যাণে নিয়োজিত থাকলেই শ্রেষ্ঠ নতুবা নয়। অন্য আয়াতে এসেছে, তোমরা নেক কাজে একে অপরকে সহযোগিতা করো তবে সাবধান সীমালঙ্ঘনের কাজে সহযোগিতা করিও না। (সূরা মায়েদার ০২)। এ আয়াত থেকেও বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে যে, আমরা সব ধরনের নেক কাজে একে অপরের সহযোগী হব বা পাশে দাঁড়াব।

রাসূলে আকরাম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যতক্ষণ একজন মানুষ অন্য কোনো মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে ততক্ষণ আল্লাহ তার (মানব সেবাকারীর) কল্যাণে রত থাকবেন।’-মুসলিম, আস সহিহ ৪/২০৭৪।

হজরত আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসূলে আকরাম (সা.) বলেছেন, ‘সমস্ত মাখলুখ আল্লাহতায়ালার পরিবার। সুতরাং মাখলুকের মধ্যে আল্লাহতায়ালার কাছে সর্বাধিক প্রিয় ওই ব্যক্তি, যে আল্লাহর পরিবারের প্রতি এহসান বা দয়া করে।’ (বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়) (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান)। হজরত আনাস (রা) বলেন, রাসূলে আকরাম (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার উম্মতের কারও অভাব পূরণ করবে, এতে তার উদ্দেশ্য হলো ওই ব্যক্তিকে সন্তুষ্ট করবে, প্রকৃতপক্ষে সে আমাকেই সন্তুষ্ট করল। আর যে আমাকে সন্তুষ্ট করল, সে মূলত আল্লাহকেই সন্তুষ্ট করল। আর আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান)।

রাসূলে আকরাম (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘যারা দয়ালু আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করেন। সুতরাং তোমরা পৃথিবীবাসীর প্রতি দয়া করো। আসমানবাসী (অর্থাৎ আল্লাহ) তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।’ হজরত আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো বস্ত্রহীন মুসলমানকে কাপড় পরিধান করাবে আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতের সবুজ কাপড় পরিধান করাবেন। যে কোনো ক্ষুধার্ত মুসলমানকে আহার করাবে আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতের ফল আহার করাবেন। যে কোনো পিপাসার্ত মুসলমানকে পানি পান করাবে আল্লাহতায়ালা তাকে ‘রহিকে মাখতুম’ থেকে পানি পান করাবেন। (রহিকে মাখতুম হলো মেশক আম্বর দ্বারা মোহরকৃত বিশুদ্ধ পানি, যা জান্নাতিদের পান করতে দেওয়া হবে)।’ (আবু দাউদ)। রাসূলে আকরাম (সা.) আরও বলেন, ‘যে এতিম-অনাথের লালন-পালন করে সে আমার সঙ্গে পাশাপাশি জান্নাতে থাকবে, একথা বলে তিনি মধ্যমা ও তর্জনীকে পাশাপাশি রেখে দেখান।’-বুখারি, আস সহিহ ৫/২০৩২,২২৩৭।

আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন!!!

আরো পড়ুনঃ