আয়াতুল কুরসীর ফযীলত বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ সহ | Ayatul Kursi Bangla
- আপডেট সময় : ০৮:৫৯:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ২৪০৪ বার পড়া হয়েছে
আয়াতুল কুরসি
اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمُ لَّهُ مَا فِي السَّمَوتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَنْ ذَالَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَوتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
উচ্চারণ: আল্লাহু লা-ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম, লা তা’খুযুহু ছিনাতুও ওয়ালা নাওম। লাহু মা ফিস সামাওয়াতি ওয়া মা ফিল আরদি, মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ ইন্দাহু ইল্লা বিইযনিহী; ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম ওয়ালা ইউহীতুনা বিশাইয়িম মিন ইলমিহী ইল্লা বিমা শা-আ; ওয়াসিআ কুরসিয়্যুহুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা, ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফযুহুমা ওয়াহুয়াল আলিয়্যুল আজীম।
আয়াতুল কুরসির বাংলা অর্থ
আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও জমিনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পেছনে যা কিছু রয়েছে, সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর কুরসি (সিংহাসন) সমস্ত আসমান ও জমিনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।
আয়াতুল কুরসীর ফযীলত
(১) দিবা রাত্রে যে কোন সময়ে একা পথ চলবার সময় পাঠ করতে থাকলে জ্বিন-পরী, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব প্রভৃতি কখনও নিকটে আসবে না বা কোন প্রকার ক্ষতি করতে পারবে না।
(২) এটি রীতি মত পাঠ করলে ফকীর ধনবান হয় এবং এমন স্থান হতে জীবিকা এসে থাকে, যা কখনও আশা করা হয়নি।
(৩) একাগ্র মনে ২০১ বার পাঠে যে কোন উদ্দেশ্য লাভের জন্য মুনাজাত করবে আল্লাহর রহমতে তা লাভ হবে।
(৪) প্রত্যেক ফরয নামায বাদ পাঠ করলে বেহেশেত দান করবেন।
(৫) এটি সকাল সন্ধ্যায় পাঠ করলে বিতাড়িত শয়তান মরদূদের যাবতীয় ওয়াছওয়াছা হতে হেফাজতে থাকবে।
(৬) এটি যে কোন রোগের জন্য পড়ে ফুঁক দিলে আল্লাহর রহমতে সহসাই আরোগ্য লাভ করবে।
আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমালে আল্লাহ একজন পাহারাদার নিযুক্ত করবেন
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) একদিন দেখতে পেলেন, এক ব্যক্তি সদকার মাল চুরি করছে। তখন তিনি তার হাত ধরে বললেন, ‘আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সা.)–এর কাছে নিয়ে যাব।’ তখন আগন্তুক বলে যে সে খুব অভাবী।
আবু হুরায়রা (রা.) তাকে ছেড়ে দিলেন। পরদিন সকালে রাসুল (সা.)–এর কাছে আসার পর তিনি আবু হুরায়রা (রা.)–কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘গতকাল তোমার অপরাধীকে কী করেছ?’ আবু হুরায়রা তখন তাকে ক্ষমা করার কথা বললেন।
রাসুল (সা.) বললেন, ‘সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে, সে আবার আসবে।’ পরদিন আবু হুরায়রা চোরকে পাকড়াও করলেন আর বললেন, ‘এবার অবশ্যই আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সা.)–এর কাছে নিয়ে যাব।’
এবারও সেই চোর বলে যে সে খুব অভাবী আর তার অনেক প্রয়োজন আর শপথ করে যে আর আসবে না। পরদিন আবারও রাসুল (সা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি একই জবাব দেন আর তখন তিনি বলেন, ‘আসলেই সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে আর সে আবারও আসবে।’ পরদিন আবারও আবু হুরায়রা (রা.) চোরের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন আর যখন সে আবারও চুরি করতে এল, তখন তিনি তাকে পাকড়াও করলেন আর বললেন, ‘এবার অবশ্যই আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সা.)–এর কাছে নিয়ে যাব।’
চোর যখন দেখল এবার তাকে সত্যিই রাসুল (সা.)–এর কাছে নিয়ে যাওয়া হবে, তখন অবস্থা বেগতিক দেখে সে বলে, ‘আমাকে মাফ করো। আমি তোমাকে এমন কিছু বলে দেব, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাকে কল্যাণ দান করবেন।’ আবু হুরায়রা (রা.) সেটা জানতে চাইলে চোর বলে, ‘যখন ঘুমাতে যাবে, তখন আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবে, তাহলে আল্লাহ তোমার জন্য একজন পাহারাদার নিযুক্ত করবেন, যে তোমার সঙ্গে থাকবে আর কোনো শয়তান সকাল পর্যন্ত তোমার কাছে আসতে পারবে না।’ এটা শুনে আবু হুরায়রা (রা.) তাকে ছেড়ে দিলেন।
পরদিন রাসুল (সা.) আবার অপরাধীর কথা জানতে চাইলে তিনি আগের রাতের কথা বললেন। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘যদিও সে চরম মিথ্যাবাদী কিন্তু সে সত্য বলেছে।’ রাসুল (সা.) আবু হুরায়রা (রা.)–কে বললেন, ‘তুমি কি জানো সে কে?’ আবু হুরায়রা (রা.) বললেন, ‘না’। রাসুল (সা.) আবু হুরায়রা (রা.)–কে বললেন, ‘সে হচ্ছে শয়তান।’ [সহিহ বুখারি নম্বর ২৩১১]