ঢাকা ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের নামাজ ৩য় পর্ব

নামাজী খারাপ কাজ করতে পারে না

Sheikh Alhaz Uddin
  • আপডেট সময় : ০৫:১৫:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪
  • / ২৪৪০ বার পড়া হয়েছে
Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নামাজ সম্পর্কিত আয়াত মোতাবেক নামাজী খারাপ কাজ করতে পারবে না। নামাজী খারাপ কাজ করে, তা হলে পবিত্র কুরআন কেন বলছে- নামাজ মানুষকে খারাপ ও অশ্লিল কাজ থেকে বিরত রাখে। আয়াতে ক্বোরাআনীতে সন্দেহের অবকাশ নেই। তাহলে নামাজে ফিরাবে না কেন?

নামাজী নামাজে আল্লাহর দর্শন লাভ করবে। যদি সে দর্শন না হয়, তা হলে হাদীস কেন বলেছে- ‘নামাজে আল্লাহর দিদার নসিব হবে? এক শ্রেণীর নামাজীকে তার ‘নামাজ’ খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখার বাস্তবতা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি, কেননা ওনারা যেন নামাজের বাহ্যিক রূপায়নে সার্বক্ষণিক শ্রম, তাকিদ ও প্রশিক্ষণে রত। যেমন: অজু, গোসল, সূরা-ক্বেরাত, নামাজের আরকান-আহকাম, তারতীব ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত। সবই বাহ্যিক রূপায়ন, ভিতরের খবর আদৌ নেই। বস্তুত বাহ্যিক রূপায়নের বিশুদ্ধতা কঠিন। সম্পূর্ণ সঠিক কোনদিনই হবে না। কিছুই না কিছু ত্রুটি থাকতেই পারে।

দ্বিতীয় শ্রেণী নামাজের সকল বাহ্যিক রূপয়নের সাথে সাথে ভিতরের দিকে শোণ দৃষ্টি দিয়ে কবুলিয়াতের স্তরে পৌঁছে দিয়েছে। যার ফলে ঐ নামাজী ইচ্ছা করেও খারাপ কাজ করতে পারেনা। যেহেতু নামাজ হল পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ। পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণের ভুল-ত্রুটি মার্জনীয়। বাহ্যিক রূপায়ন যেমন জরূরী তদরূপ একাগ্রচিত্ততাও নামাজের অন্যতম বিষয়।

অনুরূপ রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নত পালনে কতিপয় আলেম ওলামা তথা এক শ্রেণীর তথাকথিত পীর সাহেবগণ বাহ্যিক সুন্নতের জন্যে ঢাকঢোল পিটাতে থাকে। কিন্তু আসল ভিতরের সুন্নতের খবর নেই। ফলে নামাজের বাহ্যিকতা ও বাইরের সুন্নত পালনের মধ্যে অহংকার এসে সব আসল নষ্ট করে দেয়। ফলাফল শূণ্য।

 

বাইরের সুন্নত যেমন: জামা, টুপি, পাগড়ী, দাড়ী ইত্যাদি। এ সকল সুন্নত সম্পূর্ণ সঠিক। কিন্তু রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে না খেয়ে সঙ্গী, সাথী ও প্রতিবেশীদের খাওয়াতেন, কারো কাছে হাত বাড়াতেন না, অপরের হক নষ্ট করতেন না। কেউ ক্ষতি করলে উপকার করে তার প্রতিদান দিতেন। কাউকে ঘৃণা করতেন না। কারো শেকায়েত করতে না। নিজেকে অন্যের চেয়ে বড় মনে করতেন না। মীরাচ নষ্ট করতেন না। মাপে কম দিতেন না। অপরকে গোচরে-অগোচরে ঠকাতেন না। কোন অবস্থায় মিথ্যা সাক্ষী দিতেন না। মিথ্যার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের চিন্তাও করতেন না। নিজে যা করতেন না অন্যকে তার উপদেশ দিতেন না। ধনী-গরীব শিক্ষিত-মূর্খ এমনকি বিধর্মী কাউকে ঘৃণা করতেন না। এ সবগুলো ভিতরের সুন্নত এবং এ সুন্নত পালন করা খুব কঠিন ব্যাপার। এ সম্পর্কে হাদীসে কঠিনভাবে নির্দেশ এসেছে।

অনরূপ নামাজের বাহ্যিক রূপায়ন সহজ। কিন্তু নামাজের মধ্যে অন্য কোন চিন্তা যে, প্রকারান্তরে শিরিক ও মুনাফেকী সে খবর নেই। আমার এই নামাজ হয়তো জীবনের শেষ নামাজ। এই নামাজে আল্লাহর দিদার হতে দুনিয়াকে ভুলতে হবে, সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করতে হবে আল্লাহর কুদরতী কদমে। তবেই আমার নামাজ কায়েম হবে। নামাজ কায়েম হলে নামাজের নূর আমার মধ্যে আধ্যাত্মিক কল্পনা শক্তির উদ্রেক করবে। তখনই নামাজ আমাকে খারাপ কাজে বাঁধা প্রদান করবে। নিজ নামাজ কর্তৃক বাঁধাগ্রস্থ হলে তখন পাপের পথে অগ্রসর হওয়া যাবে না।

বস্তুত আল্লাহর দিদারের এই নামাজের প্রশিক্ষণ এবং বাস্তবসম্মত বাহ্যিক ও ভিতরগত ফরজ, ওয়াজেব, সুন্নত, নফল, মোস্তাহাব, যাতাৎ, ফেত্রা, দান- ছদকা, কোরবানী, ত্যাগ ইত্যাদি শিক্ষা দিয়েছেন এ দেশে একমাত্র পীর বিশ্ব ওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী কেবলাজান হুজুর ছাহেব। যার সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নের আলোচনায় আসবে।

আরো পড়ুনঃ 

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

Discover more from Sufibad.Com - সূফীবাদ.কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের নামাজ ৩য় পর্ব

নামাজী খারাপ কাজ করতে পারে না

আপডেট সময় : ০৫:১৫:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪

নামাজ সম্পর্কিত আয়াত মোতাবেক নামাজী খারাপ কাজ করতে পারবে না। নামাজী খারাপ কাজ করে, তা হলে পবিত্র কুরআন কেন বলছে- নামাজ মানুষকে খারাপ ও অশ্লিল কাজ থেকে বিরত রাখে। আয়াতে ক্বোরাআনীতে সন্দেহের অবকাশ নেই। তাহলে নামাজে ফিরাবে না কেন?

নামাজী নামাজে আল্লাহর দর্শন লাভ করবে। যদি সে দর্শন না হয়, তা হলে হাদীস কেন বলেছে- ‘নামাজে আল্লাহর দিদার নসিব হবে? এক শ্রেণীর নামাজীকে তার ‘নামাজ’ খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখার বাস্তবতা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি, কেননা ওনারা যেন নামাজের বাহ্যিক রূপায়নে সার্বক্ষণিক শ্রম, তাকিদ ও প্রশিক্ষণে রত। যেমন: অজু, গোসল, সূরা-ক্বেরাত, নামাজের আরকান-আহকাম, তারতীব ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত। সবই বাহ্যিক রূপায়ন, ভিতরের খবর আদৌ নেই। বস্তুত বাহ্যিক রূপায়নের বিশুদ্ধতা কঠিন। সম্পূর্ণ সঠিক কোনদিনই হবে না। কিছুই না কিছু ত্রুটি থাকতেই পারে।

দ্বিতীয় শ্রেণী নামাজের সকল বাহ্যিক রূপয়নের সাথে সাথে ভিতরের দিকে শোণ দৃষ্টি দিয়ে কবুলিয়াতের স্তরে পৌঁছে দিয়েছে। যার ফলে ঐ নামাজী ইচ্ছা করেও খারাপ কাজ করতে পারেনা। যেহেতু নামাজ হল পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ। পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণের ভুল-ত্রুটি মার্জনীয়। বাহ্যিক রূপায়ন যেমন জরূরী তদরূপ একাগ্রচিত্ততাও নামাজের অন্যতম বিষয়।

অনুরূপ রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নত পালনে কতিপয় আলেম ওলামা তথা এক শ্রেণীর তথাকথিত পীর সাহেবগণ বাহ্যিক সুন্নতের জন্যে ঢাকঢোল পিটাতে থাকে। কিন্তু আসল ভিতরের সুন্নতের খবর নেই। ফলে নামাজের বাহ্যিকতা ও বাইরের সুন্নত পালনের মধ্যে অহংকার এসে সব আসল নষ্ট করে দেয়। ফলাফল শূণ্য।

 

বাইরের সুন্নত যেমন: জামা, টুপি, পাগড়ী, দাড়ী ইত্যাদি। এ সকল সুন্নত সম্পূর্ণ সঠিক। কিন্তু রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে না খেয়ে সঙ্গী, সাথী ও প্রতিবেশীদের খাওয়াতেন, কারো কাছে হাত বাড়াতেন না, অপরের হক নষ্ট করতেন না। কেউ ক্ষতি করলে উপকার করে তার প্রতিদান দিতেন। কাউকে ঘৃণা করতেন না। কারো শেকায়েত করতে না। নিজেকে অন্যের চেয়ে বড় মনে করতেন না। মীরাচ নষ্ট করতেন না। মাপে কম দিতেন না। অপরকে গোচরে-অগোচরে ঠকাতেন না। কোন অবস্থায় মিথ্যা সাক্ষী দিতেন না। মিথ্যার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের চিন্তাও করতেন না। নিজে যা করতেন না অন্যকে তার উপদেশ দিতেন না। ধনী-গরীব শিক্ষিত-মূর্খ এমনকি বিধর্মী কাউকে ঘৃণা করতেন না। এ সবগুলো ভিতরের সুন্নত এবং এ সুন্নত পালন করা খুব কঠিন ব্যাপার। এ সম্পর্কে হাদীসে কঠিনভাবে নির্দেশ এসেছে।

অনরূপ নামাজের বাহ্যিক রূপায়ন সহজ। কিন্তু নামাজের মধ্যে অন্য কোন চিন্তা যে, প্রকারান্তরে শিরিক ও মুনাফেকী সে খবর নেই। আমার এই নামাজ হয়তো জীবনের শেষ নামাজ। এই নামাজে আল্লাহর দিদার হতে দুনিয়াকে ভুলতে হবে, সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করতে হবে আল্লাহর কুদরতী কদমে। তবেই আমার নামাজ কায়েম হবে। নামাজ কায়েম হলে নামাজের নূর আমার মধ্যে আধ্যাত্মিক কল্পনা শক্তির উদ্রেক করবে। তখনই নামাজ আমাকে খারাপ কাজে বাঁধা প্রদান করবে। নিজ নামাজ কর্তৃক বাঁধাগ্রস্থ হলে তখন পাপের পথে অগ্রসর হওয়া যাবে না।

বস্তুত আল্লাহর দিদারের এই নামাজের প্রশিক্ষণ এবং বাস্তবসম্মত বাহ্যিক ও ভিতরগত ফরজ, ওয়াজেব, সুন্নত, নফল, মোস্তাহাব, যাতাৎ, ফেত্রা, দান- ছদকা, কোরবানী, ত্যাগ ইত্যাদি শিক্ষা দিয়েছেন এ দেশে একমাত্র পীর বিশ্ব ওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী কেবলাজান হুজুর ছাহেব। যার সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নের আলোচনায় আসবে।

আরো পড়ুনঃ