ঢাকা ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফুটন্ত গরম ডেকচিতে অঙ্গুলি ডুবিয়ে তবারকের স্বাদ পরিবর্তন

Sheikh Alhaz Uddin
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৩:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
  • / ২৪৪৬ বার পড়া হয়েছে
Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

একবার দাদা হুজুর হযরত শাহসূফী খাজা এনায়েতপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের পবিত্র ওফাত দিবস ১৮ই ফাল্গুন উপলক্ষে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পুরাতন পাকশালায়, যা তখন বাড়ীর ভেতর পীর কেবলাজানের পবিত্র হুজরা শরীফ সংলগ্ন ছিল, কর্মীরা অত্যন্ত হাউস মহব্বতের সাথে তাবারুকের গোসত রান্নায় ব্যস্ত ছিলেন। রান্না-বান্নায় সার্বিক তদারকিসহ প্রধান কর্মী ছিলেন জনাব নঈমুদ্দিন হাওলাদার। এই বিশিষ্ট খাদেম ও সম্মানিত ব্যক্তি হাওলাদার সাহেবেরই কৃতি সন্তান জনাব এ্যাডভোকেট আলহাজ্ব আদেল উদ্দিন হাওলাদার পরবর্তীকালে তৎকালীন পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ ও জাতীয় পরিষদের সম্মানিত সদস্য নির্বাচিত হন এবং হযরত পীর কেবলাজানের বড় জামাতা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। সে সময়কার অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ফরিদপুরের ইউসুফ আলী চৌধুরী ওরফে মোহন মিয়াকে পরাজিত করে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়া এ্যাডভোকেট আদেল উদ্দিন হাওলাদারের জন্য ছিল এক বিশাল ঐতিহাসিক বিজয়- যা ছিল হযরত কেবলাজান হুজুরের খাস দোয়া ও প্রত্যক্ষ কারামতেরই প্রকাশ।

 

এবার আগের প্রসঙ্গ। তাবারুকের গোসত রান্না শেষ। উনুনের প্রচন্ড উত্তাপে কর্মীরা ঘর্মক্লান্ত। এমন সময় অন্দর মহল থেকে বড়পীর আম্মাজান পাকশালার কর্মীদের জন্য কিছু টাটকা, রসালো বরই পাঠিয়ে দিলেন। তাপক্লিষ্ট কর্মীরা বরই পেয়ে মহা খুশি। তারা অত্যন্ত আগ্রহ ভরে লবণ দিয়ে বরই খাবেন এই ভেবে লবণ খুঁজতে গিয়ে দেখলেন যে, পাকশালার লবণের ভান্ডই নেই। তারা এও বুঝলেন যে, ভুলক্রমে তাবারুকের ডেকচিগুলোর কোনটিতেই লবণ দেয়া হয়নি। এদিকে গোসতের সব ডেকচি ইতোমধ্যেই উনুন থেকে নামানো হয়ে গেছে। মহা পবিত্র ১৮ই শরীফের অনুষ্ঠান। দরবারভর্তি হাজার হাজার লোক। লবণ ছাড়া তাবারুক রান্না করা হয়েছে এ কথা ভাবতেই কর্মীরা লজ্জায় ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেলেন। পুরাতন কর্মী নঈমুদ্দিন হাওলাদার সাহেব দ্বিধাদন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে সাহস করে পবিত্র হুজরা শরীফে গিয়ে পীর কেবলাজানকে “লবণ ছাড়া” তাবারুক পাকের কথা জানালেন এবং অত্যন্ত বিনয়ের সাথে করণীয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। হুজুর পাক কোনরকম নির্দেশ বা পরামর্শ না দিয়ে সোজা চলে এলেন পাকশালায়।

 

তিনি এক এক করে প্রত্যেকটি ফুটন্ত ডেকচিতে আঙ্গুল মুবারক চুবিয়ে এনে লবণ চেখে বললেন, “আপনারা কি বলছেন! তাবারুকতো ঠিকই আছে; লবণও কম হয়নি। খুবই সুস্বাদু হয়েছে।” এ ঘটনায় পাকশালার সকল কর্মী ও উপস্থিত খাদেমগণ অপার বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন। এইমাত্র নামানো টগবগে ফুটন্ত তাবারুকের ডেকচিতে আঙ্গুল মুবারক ডুবিয়ে লবণ চাখা, বিশেষ করে লবণ ছাড়া তাবারুকে লবণের স্বাদ ফিরিয়ে আনা এ যে পীর কেবলাজানের কত বড় কারামত, এ কথা উপলব্ধি করে উপস্থিত সবাই আবেগাপুত কন্ঠে করজোরে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন।

 

আরো পড়ুনঃ 

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

Discover more from Sufibad.Com - সূফীবাদ.কম

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

ফুটন্ত গরম ডেকচিতে অঙ্গুলি ডুবিয়ে তবারকের স্বাদ পরিবর্তন

আপডেট সময় : ০৯:৫৩:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

একবার দাদা হুজুর হযরত শাহসূফী খাজা এনায়েতপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের পবিত্র ওফাত দিবস ১৮ই ফাল্গুন উপলক্ষে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পুরাতন পাকশালায়, যা তখন বাড়ীর ভেতর পীর কেবলাজানের পবিত্র হুজরা শরীফ সংলগ্ন ছিল, কর্মীরা অত্যন্ত হাউস মহব্বতের সাথে তাবারুকের গোসত রান্নায় ব্যস্ত ছিলেন। রান্না-বান্নায় সার্বিক তদারকিসহ প্রধান কর্মী ছিলেন জনাব নঈমুদ্দিন হাওলাদার। এই বিশিষ্ট খাদেম ও সম্মানিত ব্যক্তি হাওলাদার সাহেবেরই কৃতি সন্তান জনাব এ্যাডভোকেট আলহাজ্ব আদেল উদ্দিন হাওলাদার পরবর্তীকালে তৎকালীন পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ ও জাতীয় পরিষদের সম্মানিত সদস্য নির্বাচিত হন এবং হযরত পীর কেবলাজানের বড় জামাতা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। সে সময়কার অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ফরিদপুরের ইউসুফ আলী চৌধুরী ওরফে মোহন মিয়াকে পরাজিত করে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হওয়া এ্যাডভোকেট আদেল উদ্দিন হাওলাদারের জন্য ছিল এক বিশাল ঐতিহাসিক বিজয়- যা ছিল হযরত কেবলাজান হুজুরের খাস দোয়া ও প্রত্যক্ষ কারামতেরই প্রকাশ।

 

এবার আগের প্রসঙ্গ। তাবারুকের গোসত রান্না শেষ। উনুনের প্রচন্ড উত্তাপে কর্মীরা ঘর্মক্লান্ত। এমন সময় অন্দর মহল থেকে বড়পীর আম্মাজান পাকশালার কর্মীদের জন্য কিছু টাটকা, রসালো বরই পাঠিয়ে দিলেন। তাপক্লিষ্ট কর্মীরা বরই পেয়ে মহা খুশি। তারা অত্যন্ত আগ্রহ ভরে লবণ দিয়ে বরই খাবেন এই ভেবে লবণ খুঁজতে গিয়ে দেখলেন যে, পাকশালার লবণের ভান্ডই নেই। তারা এও বুঝলেন যে, ভুলক্রমে তাবারুকের ডেকচিগুলোর কোনটিতেই লবণ দেয়া হয়নি। এদিকে গোসতের সব ডেকচি ইতোমধ্যেই উনুন থেকে নামানো হয়ে গেছে। মহা পবিত্র ১৮ই শরীফের অনুষ্ঠান। দরবারভর্তি হাজার হাজার লোক। লবণ ছাড়া তাবারুক রান্না করা হয়েছে এ কথা ভাবতেই কর্মীরা লজ্জায় ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেলেন। পুরাতন কর্মী নঈমুদ্দিন হাওলাদার সাহেব দ্বিধাদন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে সাহস করে পবিত্র হুজরা শরীফে গিয়ে পীর কেবলাজানকে “লবণ ছাড়া” তাবারুক পাকের কথা জানালেন এবং অত্যন্ত বিনয়ের সাথে করণীয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। হুজুর পাক কোনরকম নির্দেশ বা পরামর্শ না দিয়ে সোজা চলে এলেন পাকশালায়।

 

তিনি এক এক করে প্রত্যেকটি ফুটন্ত ডেকচিতে আঙ্গুল মুবারক চুবিয়ে এনে লবণ চেখে বললেন, “আপনারা কি বলছেন! তাবারুকতো ঠিকই আছে; লবণও কম হয়নি। খুবই সুস্বাদু হয়েছে।” এ ঘটনায় পাকশালার সকল কর্মী ও উপস্থিত খাদেমগণ অপার বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন। এইমাত্র নামানো টগবগে ফুটন্ত তাবারুকের ডেকচিতে আঙ্গুল মুবারক ডুবিয়ে লবণ চাখা, বিশেষ করে লবণ ছাড়া তাবারুকে লবণের স্বাদ ফিরিয়ে আনা এ যে পীর কেবলাজানের কত বড় কারামত, এ কথা উপলব্ধি করে উপস্থিত সবাই আবেগাপুত কন্ঠে করজোরে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন।

 

আরো পড়ুনঃ