জড় পদার্থের কাছে ক্ষমা চেয়ে রোগ নিরাময়
- আপডেট সময় : ১২:২৪:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪
- / ২৪৬৮ বার পড়া হয়েছে
বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে অনুষ্ঠেয় কোন এক মহা পবিত্র উরস শরীফ উপলক্ষে রংপুরের জাকেরান ও আশেকান বিভিন্ন এলাকা থেকে খেদমতের বাঁশ কেটে এনে ধরলা নদীর পাড়ে স্তুপ দিয়ে রাখেন। সেখান থেকে পরে সব এলাকার বাঁশ এক সাথে বেঁধে নদীপথে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রতি বছর মহা পবিত্র উরস শরীফ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই বাঁশ সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। দূর-দূরান্তের বিভিন্ন গ্রাম ও দুর্গম এলাকা থেকে বাঁছাই করা সেরা সেরা বাঁশ কেটে সেগুলো মাথায় করে, কাঁধে নিয়ে টেনে হিঁচড়ে নানা পথে বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে আনতে গিয়ে সংশিষ্ট এলাকার জাকেরানরা যে অবর্ণণীয় পরিশ্রম ও দুঃখ-কষ্ট বরণ করেন; যে ভক্তি মহব্বত ও জিকিরের জজবা নিয়ে অশ্রুভারাক্রান্ত হৃদয়ে বাঁশের কাফেলাকে বিদায় সম্বর্ধনা জানান তা স্বচক্ষে না দেখলে শুধু কল্পনা দিয়ে অনুভব করা সম্ভব নয়। সেবারও একইভাবে মহা ধুমধামের সাথে বাঁশ সংগ্রহ শেষে কাফেলা বিদায়ের আয়োজন চলছে। এমনি এক পর্যায়ে স্থানীয় একজন গাড়ীয়াল (গরুর গাড়ীর চালক) সেই ধরলা নদীর পাড়ে সংগৃহীত বাঁশের স্তুপ থেকে একটি বাঁশ কাউকে না বলে নিয়ে যায় হালের জোয়াল বানাবার জন্য। কিন্তু বাঁশ নিয়ে যাওয়ার পরপরই সেই লোকটির (গাড়ীয়ালের) প্রচন্ড পেটের ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। এমন ভয়াবহ পেটের ব্যাথা সে আর কোনদিন ভোগ করেনি। উপায়ান্তর না দেখে তিনি বাঁশের খেদমতে নিয়োজিত জাকেরদের কাছে প্রকৃত ঘটনা খুলে বলেন এবং অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চান। বিশিষ্ট প্রবীণ জাকেরানরা তাকে আটরশির দরবার শরীফে গিয়ে হযরত শাহসূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের কাছে গিয়ে ক্ষমা ভিক্ষা চাওয়ার পরামর্শ দেন। পেটের ব্যথায় একবারে শয্যাশায়ী গাড়ীয়াল তখন একজন লোক পাঠিয়ে তার মাধ্যমে হুজুর কেবলাজানের কাছে নালিশ করে ক্ষমা ভিক্ষা চাইলেন। হযরত কেবলাজান হুজুর তাকে এক আশ্চর্য নির্দেশ দিয়ে রংপুরে ধরলা নদীর পাড়ে গিয়ে সেই বাঁশের কাছে নালিশ করতে বললেন। তদানুযায়ী সেই ব্যক্তি রংপুর ফিরে গিয়ে হুজুর পাকের নির্দেশ জানালে অসুস্থ গাড়ীয়াল বাঁশের কাছেই নালিশ পেশ করলেন এবং আশ্চর্য মহামন্ত্রের যাদুকরী স্পর্শের মতো সাথে সাথেই সুস্থ্য হয়ে গেলেন।
হযরত শাহসূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের এ অভূতপূর্ব কারামত দেখে কুড়িগ্রাম অঞ্চলের অগণিত মানুষ আটরশির বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে গিয়ে কেবলাজান হুজুরের কাছে তরিকা নেন। এরপর থেকেই কুড়িগ্রামে জাকেরের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। এদিকে সুস্থ্য হয়ে উঠা সেই গাড়ীয়াল ভাইও তরিকা নিয়ে হুজুর পাকের মহব্বতে খেদমতের আঞ্জাম দিতে শুরু করেন এবং এখনও পর্যন্ত সুস্থ্য শরীরে খেদমত করে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় মনে পড়ে হযরত কেবলাজান হুজুর খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের সেই মহামূল্যবান অমিয়বাণী, “বাবা, গাছপালাও ওলী আল্লাহগণের কথা শোনে।”