ঢাকা ১১:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শরিয়তে কবর যিয়ারতের হুকুম । ইহা কী জায়েজ ?

  • আপডেট সময় : ০৬:০৪:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ২৪০১ বার পড়া হয়েছে
Sufibad.com - সূফিবাদ.কম অনলাইনের সর্বশেষ লেখা পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কবর যিয়ারত সম্পর্কে দুটি কথা

মুসলীম জীবনে কবর যিয়ারত একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় আমল। প্রিয় নবীজি রাসূলে পাক (৫) বহুবার জান্নাতুল বাকী সহ বিভিন্ন কবর যিয়ারত করেছেন এবং উম্মতকে কবর যিয়ারত করার অনুমতি দিয়েছেন। রাসূলে পাক () এর কোন আমলকে তিরস্কার করার কোন রাস্তা নেই এবং এরূপ করলে প্রকাশ্য কুফুরী হবে। যিয়ারত কালে কোন শরিয়াত বিরুধী কাজ করলে বিধিসম্মত ভাবে ইহাকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা করতে হবে, কিন্তু মূল জায়েয কাজকে ছেড়ে দেওয়া যাবেনা। যেমন- কোন কোন মসজিদে মুর্তি বা ছবি থাকলে যেমন মসজিদে যাওয়া বন্ধ করা যাবে না তেমনি কোন কোন মাজারে শরিয়াত বিরুধী কর্মকাণ্ড হলেও মাজার যিয়ারত বন্ধ করা যাবে না। উল্লেখ্য, নবী-রাসূল, ওলী-আল্লাহ বা বুযুর্গানের মাজার যিয়ারতের

উদ্দেশ্য হল ফায়েজ-বরকত হাছিল করা এবং তাঁদের উছিলা নিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া প্রার্থনা করা। আর নিজ আত্মীয় বা অন্যান্য ‘মু’মিনগণের কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য হল তাদেরকে স্মরণ করা ও তাদের জন্য দোয়া করা। আরো অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নিজের মৃত্যুকে স্মরণ করা, কিন্তু কোন অবস্থাতেই কবর পূজার উদ্দেশ্যে নয়। নিচে কবর যিয়ারত করার যাবতীয় দালায়েল উল্লেখ করা হল:-

শরিয়তে কবর যিয়ারতের হুকুম

কবর যিয়ারত করা মুসলমানের জন্য মুস্তাহাব-সুন্নাত, আর এ বিষয়ে উম্মতে মুহাম্মদীর ইজমা বা ঐক্যমত হয়ে গেছে। জেনে রাখা প্রয়োজন যে, ইজমা শরিয়তের অকাট্য দলিল। যার উপর বহাল থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক, এবং এর বিপরীত করা চরমপথভ্রষ্টতা, গোমরাহী অথবা কুফুরী। এ সম্পর্কে নিচের দলিল গুলো লক্ষ্য করুন:

‎‫قَالَ النَّوَوِيُّ: وَأَجْمَعُوا عَلَى أَنَّ زِيَارَتَهَا سُنَّةً لَهُمْ‬‎

-“ইমাম নববী (স) বলেছেন: উম্মতের ইজমা হয়েছে যে, কবর যিয়ারত করা সুন্নাত।” (ইমাম ছিয়তী: শরহে সুনানে ইবনে মাজাহ, ১ম খণ্ড, ১১৩ পৃঃ; জখিরাতুল উকাবী, ২০তম খন্ড, ২৫ পৃঃ; ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৪র্থ খণ্ড, ১২৫৫ পৃঃ)।

এ সম্পর্কে শারিহে বুখারী ইমাম শিহাবুদ্দিন কাস্তাল্লানী (র) উল্লেখ করেন,

‎‫وقد أجمع المسلمون على استحباب زيارة القبور، كما حكاه النووى‬‎

-“অবশ্যই উম্মতের ইজমা বা ঐক্যমত হয়েছে যে, কবর যিয়ারত করা অতীব উত্তম কাজ, যেমনটি ইমাম নববী (র) বর্ণনা করেছেন।” (ইমাম কাস্তালানী: মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া, ৪/২১৫ পৃঃ)।

সুতরাং উম্মতের ইজমা বা ঐক্যমতে মুসলমানের কবর যিয়ারত করা জায়েয’ত বটেই বরং মোস্তাহাব পর্যায়ের সুন্নাত। যেহেতু এ বিষয়ে উম্মতের ইজমা সংগঠিত হয়েছে। সেহেতু এর বিরুধীতা করা কুষ্ণী, কারণ ‘ইজমায়ে উম্মত’ দলিলে ক্বাতয়ী বা অকাট্য দলিলের অন্তর্ভুক্ত।

 

আরো পড়ুনঃ 

Sufibad 24

ব্লগটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শরিয়তে কবর যিয়ারতের হুকুম । ইহা কী জায়েজ ?

আপডেট সময় : ০৬:০৪:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

কবর যিয়ারত সম্পর্কে দুটি কথা

মুসলীম জীবনে কবর যিয়ারত একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় আমল। প্রিয় নবীজি রাসূলে পাক (৫) বহুবার জান্নাতুল বাকী সহ বিভিন্ন কবর যিয়ারত করেছেন এবং উম্মতকে কবর যিয়ারত করার অনুমতি দিয়েছেন। রাসূলে পাক () এর কোন আমলকে তিরস্কার করার কোন রাস্তা নেই এবং এরূপ করলে প্রকাশ্য কুফুরী হবে। যিয়ারত কালে কোন শরিয়াত বিরুধী কাজ করলে বিধিসম্মত ভাবে ইহাকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা করতে হবে, কিন্তু মূল জায়েয কাজকে ছেড়ে দেওয়া যাবেনা। যেমন- কোন কোন মসজিদে মুর্তি বা ছবি থাকলে যেমন মসজিদে যাওয়া বন্ধ করা যাবে না তেমনি কোন কোন মাজারে শরিয়াত বিরুধী কর্মকাণ্ড হলেও মাজার যিয়ারত বন্ধ করা যাবে না। উল্লেখ্য, নবী-রাসূল, ওলী-আল্লাহ বা বুযুর্গানের মাজার যিয়ারতের

উদ্দেশ্য হল ফায়েজ-বরকত হাছিল করা এবং তাঁদের উছিলা নিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া প্রার্থনা করা। আর নিজ আত্মীয় বা অন্যান্য ‘মু’মিনগণের কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য হল তাদেরকে স্মরণ করা ও তাদের জন্য দোয়া করা। আরো অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নিজের মৃত্যুকে স্মরণ করা, কিন্তু কোন অবস্থাতেই কবর পূজার উদ্দেশ্যে নয়। নিচে কবর যিয়ারত করার যাবতীয় দালায়েল উল্লেখ করা হল:-

শরিয়তে কবর যিয়ারতের হুকুম

কবর যিয়ারত করা মুসলমানের জন্য মুস্তাহাব-সুন্নাত, আর এ বিষয়ে উম্মতে মুহাম্মদীর ইজমা বা ঐক্যমত হয়ে গেছে। জেনে রাখা প্রয়োজন যে, ইজমা শরিয়তের অকাট্য দলিল। যার উপর বহাল থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক, এবং এর বিপরীত করা চরমপথভ্রষ্টতা, গোমরাহী অথবা কুফুরী। এ সম্পর্কে নিচের দলিল গুলো লক্ষ্য করুন:

‎‫قَالَ النَّوَوِيُّ: وَأَجْمَعُوا عَلَى أَنَّ زِيَارَتَهَا سُنَّةً لَهُمْ‬‎

-“ইমাম নববী (স) বলেছেন: উম্মতের ইজমা হয়েছে যে, কবর যিয়ারত করা সুন্নাত।” (ইমাম ছিয়তী: শরহে সুনানে ইবনে মাজাহ, ১ম খণ্ড, ১১৩ পৃঃ; জখিরাতুল উকাবী, ২০তম খন্ড, ২৫ পৃঃ; ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৪র্থ খণ্ড, ১২৫৫ পৃঃ)।

এ সম্পর্কে শারিহে বুখারী ইমাম শিহাবুদ্দিন কাস্তাল্লানী (র) উল্লেখ করেন,

‎‫وقد أجمع المسلمون على استحباب زيارة القبور، كما حكاه النووى‬‎

-“অবশ্যই উম্মতের ইজমা বা ঐক্যমত হয়েছে যে, কবর যিয়ারত করা অতীব উত্তম কাজ, যেমনটি ইমাম নববী (র) বর্ণনা করেছেন।” (ইমাম কাস্তালানী: মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া, ৪/২১৫ পৃঃ)।

সুতরাং উম্মতের ইজমা বা ঐক্যমতে মুসলমানের কবর যিয়ারত করা জায়েয’ত বটেই বরং মোস্তাহাব পর্যায়ের সুন্নাত। যেহেতু এ বিষয়ে উম্মতের ইজমা সংগঠিত হয়েছে। সেহেতু এর বিরুধীতা করা কুষ্ণী, কারণ ‘ইজমায়ে উম্মত’ দলিলে ক্বাতয়ী বা অকাট্য দলিলের অন্তর্ভুক্ত।

 

আরো পড়ুনঃ